Advertisement
E-Paper

ঠাঁই হবে না জঙ্গিদের, আশ্বাস মোদীকে

ভারতে চোরাচালান, নাশকতা করো এবং টিকিট কাটো দুবাইয়ের! দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকা এই চিত্রনাট্যে এ বার তালাচাবি পড়তে চলেছে বলেই দাবি বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের। ৭ লোককল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে একান্ত বৈঠকে আবু ধাবির যুবরাজ শেখ মহম্মদ বিন জাভেদ আলি নহিয়ান নরেন্দ্র মোদীকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে দাবি সাউথ ব্লকের কর্তাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৪

ভারতে চোরাচালান, নাশকতা করো এবং টিকিট কাটো দুবাইয়ের!

দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকা এই চিত্রনাট্যে এ বার তালাচাবি পড়তে চলেছে বলেই দাবি বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের। ৭ লোককল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে একান্ত বৈঠকে আবু ধাবির যুবরাজ শেখ মহম্মদ বিন জাভেদ আলি নহিয়ান নরেন্দ্র মোদীকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে দাবি সাউথ ব্লকের কর্তাদের। দাউদ ইব্রাহিমের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি তাঁর দুবাই সংযোগ সংক্রান্ত যাবতীয় গোয়েন্দা তথ্য নয়াদিল্লির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার ব্যাপারেও কথা দিয়েছেন নহিয়ান।

ইসলামাবাদের একদা পরম মিত্র স‌ংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে এ ভাবে পাশে পাওয়াতে উল্লসিত সাউথ ব্লক। আজ দু’দেশের শীর্ষ স্তরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, অর্থনীতি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১৪টি চুক্তি সই হয়েছে। পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিতে আবু ধাবির যুবরাজকে পাশে বসিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তান-সহ আমাদের অঞ্চলের নিরাপত্তা, সুস্থিতি এবং শান্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে এই যোগাযোগ গোটা অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে।’’

এই ছবির পাশাপাশি ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকের কিছু চিত্র মনে করিয়ে দিচ্ছেন সাউথ ব্লকের কর্তারা। তখন দুবাইয়ে বসেই মুম্বই বিস্ফোরণের ছক কষেছিল দাউদ ও অন্য জঙ্গিরা। আমিরশাহির মাটিতেই ফয়সালা হতো মুম্বই অপরাধ জগতের নানা সমস্যার। ভারতে গোলমালে পড়লেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে আমিরশাহি উড়ে যেত মাফিয়া ডন ও জঙ্গিরা। বস্তুত দুবাইয়ের বাণিজ্যনগরী গড়ে ওঠার পিছনে নানা দেশ থেকে আসা কালো টাকার অন্যতম ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন গোয়েন্দারা।

কিন্তু হঠাৎ মত বদলাল কেন আমিরশাহির মতো দেশ?

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, ২০০১ সালের জঙ্গি হানার পর থেকেই লুকিয়ে থাকা জঙ্গি ও তাদের আর্থিক যোগাযোগের খোঁজে আরব দেশগুলিকে চাপ দিতে শুরু করে আমেরিকা। প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর থেকেই আমেরিকা ও আরব দুনিয়ায় তাদের অন্যতম সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্কে নয়া উষ্ণতা আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদীও। ভারত এবং আরব দেশগুলিকে কাছাকাছি আনতে ক্রমাগত দৌত্য করে গিয়েছে ওয়াশিংটন। ৩৪ বছর পর প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদী গিয়েছেন আমিরশাহিতে। তাঁর আমিরশাহি সফরের সময়েই সে দেশে বিনিয়োগ ও রফতানি বাড়ানো, আরব দেশ থেকে বিনিয়োগ টানা, শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো এবং সন্ত্রাস মোকাবিলা নিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছিল দু’দেশ। ফলে ক্রমশ বদলেছে ভারত-আরব সম্পর্ক।

অপরিশোধিত তেলের আমদানির প্রশ্নেও আজ একটি মূল্যবান সমঝোতাপত্র সই হয়েছে। আবু ধাবি জাতীয় তেল সংস্থার উদ্বৃত্ত অপরিশোধিত তেল মজুত করার অধিকার পাওয়ার প্রশ্নে ২০১৪ সাল থেকে তৎপর ছিল মোদী সরকার। আজ সেই দাবি মেনে নিয়েছে আবু ধাবি। এর ফলে আবু ধাবি জাতীয় তেল সংস্থা তথা আডনক এ দেশের ভাণ্ডার ব্যবহারের বিনিময়ে দুই-তৃতীয়াংশ তেল নিখরচায় দেবে। প্রয়োজনের ৭৯ শতাংশ তেল আমদানি করতে হয় ভারতকে। এই ব্যবস্থা চালু হলে দিন দশেক চলার মতো তেল দেশেই মজুত থাকবে। অন্ধ্রের বিশাখাপত্তনম এবং কর্নাটকের ম্যাঙ্গালোরে প্রায় ৫৩.৩ লক্ষ টন তেল রাখার ভাণ্ডার গড়া হয়েছে ভূগর্ভে। এগুলিতেই প্রচুর পরিমাণ তেল মজুত রাখতে আগ্রহী আডনক। এই চুক্তির ফলে যুদ্ধ বা বিপর্যয়ের সময়ে বা তেল আমদানিতে টান পড়লে ভারত সেই ভাঁড়ারের তেলের একটি বড় অংশ নিজে ব্যবহার করতে পারবে।

এক সময়ের ইসলামাবাদের পরম মিত্র আবু ধাবির সঙ্গে এই পর্যায়ের ঘনিষ্ঠতা তৈরি করা মোদীর বিদেশনীতির অন্যতম বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা।

Sheikh Mohamed bin Zayed Al Nahyan Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy