Advertisement
E-Paper

চাপের মুখে কর-বৈঠকে বসছেন মোদী

প্রধানমন্ত্রীর দফতর, অর্থ মন্ত্রক বিবৃতি জারি করে, টুইট করে প্রচার করছে, কালো টাকার বিরুদ্ধে আয়কর দফতর কী কী করছে। আর প্রশাসনের তোড়জোড়ের মধ্যেই জেটলি, অমিত শাহ মন্ত্রীদের বোঝাচ্ছেন, কী ভাবে নোট বাতিলের পক্ষে প্রচারে যেতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫৮
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রীর দফতরে আজ সকাল থেকেই হইচই। অর্থ মন্ত্রকে হিসেব চাওয়া হচ্ছে, কালো টাকার বিরুদ্ধে আয়কর দফতর কোথায়, কতখানি এগিয়েছে, তার খতিয়ান তৈরি করতে হবে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সাতসকালেই নোট বাতিলের পক্ষে সওয়াল করছেন। সাংবাদিক বৈঠক করে নোট বাতিলের সুফল বুঝিয়েছেন অর্থ বিষয়ক সচিব সুভাষ চন্দ্র গর্গ। প্রধানমন্ত্রীর দফতর, অর্থ মন্ত্রক বিবৃতি জারি করে, টুইট করে প্রচার করছে, কালো টাকার বিরুদ্ধে আয়কর দফতর কী কী করছে। আর প্রশাসনের তোড়জোড়ের মধ্যেই জেটলি, অমিত শাহ মন্ত্রীদের বোঝাচ্ছেন, কী ভাবে নোট বাতিলের পক্ষে প্রচারে যেতে হবে।

কেন এত হট্টগোল? কারণ, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ২৪৪ পৃষ্ঠার বার্ষিক রিপোর্টে কোণঠাসা মোদী সরকার। নোট বাতিল করে আদৌ কোনও লাভ হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ওই রিপোর্ট। যাতে বলা হয়েছে, ১৫.৪৪ লক্ষ কোটি টাকার বাতিল নোটের মধ্যে মাত্র ১৬ হাজার কোটি টাকা ফেরেনি। অর্থাৎ কালো টাকা, সাদা টাকা সবই জমা পড়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: চাপ বাড়লেও বহাল অরুণ

কালো টাকার বিরুদ্ধে নতুন রণকৌশল ঠিক করতে শুক্রবারই আয়কর ও পরোক্ষ কর দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন নরেন্দ্র মোদী। দু’দিন ধরে ‘রাজস্ব জ্ঞান সঙ্গম’ নামের ওই সম্মেলন চলবে। আয়কর কর্তাদের যুক্তি, নোট বাতিলের পরে পাওয়া তথ্য থেকেই তাদের অভিযান জোরদার হয়েছে। ১০ লক্ষ মানুষ এখন সন্দেহের তালিকায়। তারা প্রায় ২.৮৯ লক্ষ কোটি টাকা জমা করেছেন। ১৮ লক্ষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক টাকা জমা চিহ্নিত করে ১৩ লক্ষ নোটিস পাঠানো হয়েছে। প্রায় ১৪ হাজার বেনামি সম্পত্তি চিহ্নিত হয়েছে, যেগুলির একেকটির মূল্য ১ কোটি টাকার বেশি। অথচ তাদের মালিকরা আয়কর রিটার্ন ফাইল করেনি। সূত্রের খবর, আমজনতাকে হেনস্থা না করে কালো টাকার বিরুদ্ধে অভিযানে কী ভাবে এগনো যায়, তা নিয়েই মোদী কর কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

আগামিকালই নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব নেবেন রাজীব কুমার। তার আগে আজ নোট বাতিলের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে কালো টাকা, সাদা টাকার সঙ্গে নতুন শব্দবন্ধ তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। এ হল, ধূসর টাকা। রাজীবের যুক্তি, ‘‘এই প্রথম অর্থনীতিতে আরও স্বচ্ছতা এল। কালো টাকা ধূসর হল।’’

কেন্দ্রের আশা ছিল, ৩ থেকে ৪ লক্ষ কোটি টাকার বাতিল নোট আর জমা পড়বে না। কালো টাকার মালিকরা তা জমা করার সাহস করবেন না। বাস্তবে দেখা গিয়েছে, ১৬ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েনি। এ-ও যে কর ফাঁকির অর্থ, তা দাবি করতে পারছে না অর্থ মন্ত্রক। অর্থ বিষয়ক সচিবের যুক্তি, নেপাল, ভুটানে কয়েক হাজার কোটি টাকার বাতিল নোট রয়েছে। তা এখনও ফেরেনি। বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার তল্লাশিতে আটক, আদালতে জরিমানা বাবদ জমা হওয়া অর্থের মধ্যেও বাতিল নোট রয়েছে। জেলা সমবায় ব্যাঙ্কগুলির কাছেও বাতিল নোট জমা পড়েছিল। এর পরিমাণ হাজার কোটির কম বলেই গর্গের যুক্তি। এর বাইরেও বহু মানুষ, অনাবাসীরা নোট জমা দিতে পারেননি। কর অফিসাররা মনে করছেন, প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আলমারি কিংবা ঘরের কোণে এখনও কিছু বাতিল নোট রয়েছে। সেই অঙ্কও নেহাত কম না। অবশ্য গর্গের যুক্তি, ‘‘এই সব মিলিয়েও ১৬ হাজার কোটি টাকা হবে না।’’ আর জেটলি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘টাকা জমা পড়েছে মানেই কালো টাকা সাদা হয়েছে তা নয়। কেউ এ কথাও বলছে না, সব কালো টাকা শেষ। বাস্তব হল, কে কত টাকা জমা দিয়েছেন, তা এখন চিহ্নিত।’’

Narendra Modi Arun jaitley Demonitisation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy