Advertisement
E-Paper

‘মন কি বাত’ জুড়ে গুজরাত

সোমবার থেকে গুজরাতে একটানা প্রচার শুরু করবেন মোদী। তার আগের দিন, রবিবার নিজের মাসিক রেডিও বার্তায় ঘুরেফিরে গুজরাতের প্রসঙ্গ টানলেন মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৭

দলের পাশাপাশি গুজরাত ভোট নিয়ে নিজেও যে বেশ উদ্বেগে, মাসিক রেডিও-বার্তায় তা কার্যত বুঝিয়েই দিলেন নরেন্দ্র মোদী। সোমবার থেকে রাজ্য জুড়ে প্রচার-অভিযান শুরুর ঠিক আগের দিন ‘মন কি বাত’-এ বারেবারে গুজরাতেরই মন ছোঁয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার থেকে গুজরাতে একটানা প্রচার শুরু করবেন মোদী। তার আগের দিন, রবিবার নিজের মাসিক রেডিও বার্তায় ঘুরেফিরে গুজরাতের প্রসঙ্গ টানলেন মোদী।

কী বললেন তিনি? বিক্ষুব্ধ পাতিদারদের মন জিততে সর্দার পটেলের আসন্ন জন্মদিবস পালনের কথা বললেন। দলিতদের খুশি করতে সংবিধান দিবসে অম্বেডকরের গুণগান গাইলেন। ফসলের দাম নিয়ে ক্ষুব্ধ কৃষকদের জীবনে ভোলবদলের স্বপ্ন দেখালেন। জাতীয়তাবাদের ধুয়ো তুলে ২৬/১১-র বর্ষপূর্তিতে কড়া হাতে সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রয়োজনীয়তার কথা বললেন। স্যালুট জানালেন শহিদ সেনা জওয়ানদের। গুজরাতের মন জিততে বাদ দিলেন না প্রায় কিছুই। রাহুল গাঁধী গুজরাত ঘুরে পাতিদারদের সমস্যা, দলিতদের উপর অত্যাচার, কৃষকদের জন্য ফসলের ন্যায্য দামের দাবিতে মোদী তথা বিজেপিকে লাগাতার নিশানা করেছেন। আজ ঠিক সেই জায়গাগুলিতেই মলম লাগানোর চেষ্টা করলেন মোদী।

সঙ্গে আরও কিছু। নিজের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে একদিকে যেমন হজরত মহম্মদের জন্মদিন ‘ইদ-এ-মিলান-উন-নবি’র আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তেমনই ‘গুজরাতি অস্মিতা’য় সুড়সুড়ি দিয়ে গুজরাতের তরুণ প্রতিবন্ধী সাঁতাড়ু জিগর ঠক্করকে কুর্নিশ করে জানিয়েছেন, প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়দের গাঁধীনগরেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

এই ককটেল নিয়েই আজ নতুন অবতারে গুজরাতে ‘চায়ে পে চর্চা’ চালু করেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী বুঝিয়ে দিয়েছেন, যুবকদের কর্মসংস্থান, কৃষকদের সুরাহার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় মেরুকরণের পথে হেঁটেই তাঁরা ভোটে যাবেন। গুজরাতে মোদীর লাগাতার প্রচার শুরুর আগে রূপাণীর নতুন স্লোগান, ‘অযোধ্যায় রাম, যুবদের কাম (কাজ) এবং ফসলের উচিৎ দাম’।

রাজ্যের ১৮২টি বিধানসভার কেন্দ্রের ৫০,১২৮টি পোলিং বুথের সামনে এলইডি স্ক্রিন, লাউডস্পিকার লাগিয়ে ‘মন কি বাত, চায় কে সাথ’-এর আসর বসিয়েছিল বিজেপি। ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে মণিশঙ্কর আইয়ারের চা-ওয়ালা খোঁচা পরেই দেশের নানা প্রান্তে ‘চায়ে পে চর্চা’ শুরু করেছিল বিজেপি। তার ফলও মিলেছিল। এ বারও যুব কংগ্রেসের পত্রিকায় মোদীকে চা-ওয়ালা কটাক্ষের পরে আস্তিন থেকে পুরনো তাস বের করেছে দল।

রাজ্যের এক এক জায়গায় এক এক জন কেন্দ্রীয় বা রাজ্যের মন্ত্রী বা বিজেপি নেতাকে পাঠিয়েছিলেন মোদী। তাঁরা জনতার সঙ্গে বসে মোদীর কথা শুনেছেন। অমিত শাহ ছিলেন অমদাবাদের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা দরিয়াপুরে। সেখানে অবশ্য একটি কথাও বলেননি। কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বসে লাউডস্পিকারে মোদীর কথা শুনেছেন। সর্বত্র কাগজের কাপে চা বিলি হয়েছে। তাতে মোদীর ছবি। সঙ্গে বার্তা, ‘এক কাপ চা, একটি ভোট বিজেপিকে’।

কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, এ তো ‘ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট’! এতে সারবস্তু কী? রাহুল গাঁধীর অভিযোগের জবাব কোথায়? কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘ইন্দিরা গাঁধীও মন কি বাত-এ বিশ্বাস করতেন। তিনি কিন্তু মানুষের মনের কথাই শুনতেন। নিজের কথা শোনাতেন না।’’

রেডিও-বার্তায় মোদীর অনুরোধ, নয়া বছর শুরুর আগে শুধু ইতিবাচক কথাই মনে রাখতে হবে। দেশে ইতিবাচক আবহ গড়তে তাঁর অনুরোধ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘হ্যাশট্যাগ পজিটিভ ইন্ডিয়া’ বার্তা ছড়ান। কিন্তু সত্যিই কি আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন মোদী? সন্ধ্যায় বিজ্ঞান ভবনে সংবিধান দিবসে মোদীর একটি মন্তব্য অনেকেরই কানে বেজেছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি থাকি বা না থাকি, এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে চাই, যাতে মানুষ স্বাবলম্বী, স্বাভিমানী বোধ করেন।’’

প্রশ্ন উঠেছে, এটাই কি ‘আসল’ মন কি বাত!

Mann ki baat Narendra Modi Gujarat Assembly Election 2017
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy