উমেশ বাবোলে। ছবি: সংগৃহীত।
শনিবারই বাড়ি ফিরেছিলেন তনুজা। রাতে তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু রবিবার ভোরের আলো ফুটতেই উমেশের সঙ্গে তাঁর তুমুল বচসা শুরু হয়। উত্তরোত্তর বাড়ছিল বিতণ্ডা। আচমকা সাড়ে ছ’টা নাগাদ সব ঠান্ডা হয়ে যায়। কারণ দন্ত চিকিৎসক উমেশ বাবোলে তত ক্ষণে চিরঘুমে পাঠিয়ে দিয়েছেন স্ত্রীকে।
সাত বছরের দাম্পত্য। ছেলের বয়স চার। বাবা-মায়ের মধ্যে যখন তুমুল বচসা চলছে, চার বছরের শিশু তখন পাশের ঘরে অঘোর ঘুমে। সে ঘুম ভাঙার আগেই মা তনুজা একের পর এক ছুরিকাঘাতে লুটিয়ে পড়লেন, চিরঘুমে চলে গেলেন।
উমেশ বসে পড়েছিলেন তনুজার নিথর দেহের পাশে। রক্তে তখন ভাসছে ঘরের মেঝে। টানা তিন ঘণ্টা সে ভাবেই নাকি কাটান মুম্বইয়ের এই দন্ত চিকিৎসক। তার পর শিবাজি পার্ক থানায় ফোন করে খবর দেন, তিনি নিজের স্ত্রীকে খুন করেছেন।
বছর আটত্রিশের দন্ত চিকিৎসক উমেশ বাবোলের ক্লিনিকটি মুম্বইয়ের যোগেশ্বরী এলাকায়। আর স্ত্রী তনুজাকে নিয়ে তিনি থাকতেন মাতুঙ্গা এলাকার কোহিনুর টাওয়ারে। সংসার অবশ্য নামেই। পুলিশ জানতে পেরেছে, উমেশ-তনুজার মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। সেই কারণে তনুজা (৩৬) ইদানীং বাবা-মায়ের কাছে থাকছিলেন। শনিবার রাতে উমেশের কাছে ফিরেছিলেন তিনি।
উমেশ বাবোলে নিজেই পুলিশকে জানিয়েছেন, রবিবার সকাল থেকে তুমুল বচসা শুরু হয়েছিল তাঁদের মধ্যে। রাগের মাথায় তিনি ছুরি বার করেন এবং তনুজাকে আঘাত করতে শুরু করেন। কোহিনুর টাওয়ারের অন্য বাসিন্দাদের বয়ানের সঙ্গে কিন্তু তা মিলছে না। উমেশ-তনুজার মধ্যে মাঝেমধ্যেই যে বাদানুবাদ হত, তা তাঁরা স্বীকার করেছেন। কিন্তু রবিবার সকালে দু’জনের মধ্যে কোনও বচসার আওয়াজ তাঁদের কারও কানে পৌঁছয়নি। শুধু তাই নয়, বাবা-মায়ের মধ্যে তীব্র বচসা সত্ত্বেও পাশের ঘরে শুয়ে থাকা ছেলের ঘুম ভাঙেনি। রবিবার সকালে আদৌ কি উমেশ-তনুজার মধ্যে কোনও বচসা হয়েছিল তা হলে? ধন্দে রয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: বোরখায় ঢাকা মহিলা চিকিৎসকের খোঁজ
রবিবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ পুলিশকে উমেশ খবর দেন, স্ত্রীকে খুন করেছেন তিনি। কিন্তু সকাল সাড়ে ছ’টায় ঘটনাটি ঘটানোর তিন ঘণ্টা পর কেন তিনি পুলিশকে খবর দিলেন, কেনই বা তিন ঘণ্টা রক্তাক্ত দেহের পাশে বসে রইলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। তনুজার মৃত্যু নিশ্চিত করতেই কি দেরি করে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন উমেশ? তা হলে কি রাগের মাথায় বা বচসার জেরে খুন নয়, ছক কষেই সব ঘটানো হয়েছে? সব প্রশ্নেরই উত্তর খুজছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, আট মাস আগে তনুজা উমেশের বিরুদ্ধে থানায় নির্য়াতনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই মামলার বিচার চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy