সনিয়া গাঁধী আগেই বলেছিলেন, দ্রুত সভাপতি হবেন রাহুল গাঁধী। আজ সেই প্রশ্নটিই সরাসরি করা হলো রাহুলকে, সভাপতি কবে হবেন? একগাল হেসে রাহুল জবাব দিলেন, ‘‘হবো, হবো... ধন্যবাদ।’’
দলের নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, গুজরাত নির্বাচনের আগেই নভেম্বরে সভাপতি পদে বসবেন রাহুল। কেউ বলছেন, গুজরাত ভোটের পরে। সেই ধোঁয়াশার মধ্যেই আজ অভিষেকের আগে প্রথম বার দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন রাহুল গাঁধী। মনমোহন সিংহ, চিদম্বরমদের পাশাপাশি দলের সব সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে আলোচনা করলেন নোট বাতিল আর জিএসটি নিয়ে। রাহুলের নেতৃত্বে এই প্রথম নরেন্দ্র মোদীকে টক্কর দেওয়ার কৌশল রচনা হলো। সনিয়া গাঁধীর অনুপস্থিতিতে এই শীর্ষ বৈঠকের মাধ্যমে কার্যত ‘সভাপতি’র কাজটিই শুরু করে দিলেন রাহুল।
ঠিক হয়েছে, ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের বর্ষপূর্তিতে ‘কালো দিবস’ পালন করবে কংগ্রেস। রাত আটটায় হবে মোমবাতির মিছিল। নোট-বাতিলে মৃতের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে নিয়ে। কারণ, এক বছর আগে রাত আটটাতেই নোট বাতিল ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রাহুল নিজেও সামিল হবেন কোনও রাজ্যে। আর এই সূত্র ধরে মোদীকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিঁধতে একটি স্লোগানও তৈরি করলেন। সব বিরোধী দলই যাতে এই স্লোগানে একসূত্রে মোদী-বিরোধিতায় নামতে পারে, তার ভিতটিও গড়লেন। যে একজোট বিরোধী দলের নেতৃত্ব এতদিন দিতেন সনিয়া গাঁধীই।
জিএসটি আর নোট বাতিল নিয়ে মোদীকে আক্রমণের আশু লক্ষ্য অবশ্য গুজরাত। গতবার গুজরাতে শহরের থেকে গ্রামের ভোট বেশি পেয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু এখন শহরেও ‘বিজেপি-পন্থী’ ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ জিএসটি নিয়ে। তাই রাহুল পরশু ফের গুজরাত যাওয়ার আগে এই ইস্যুতে লাগাতার আঘাত হানতে চাইছেন। আজ বৈঠকের পরে রাহুল বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী দেশের অর্থনীতিতে দু’টি টর্পেডো দেগেছেন। নোট বাতিল আর ভুল পদ্ধতিতে চালু জিএসটি। প্রথমটিতে অর্থনীতি বেঁচে গেলেও দ্বিতীয়টিতে ডুবে গিয়েছে। জিএসটির মতো ভাল ভাবনাকে ভুল ভাবে রূপায়ণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের দুঃখ বোঝেন না। তাই না বুঝেই ৮ নভেম্বর উৎসব পালন করছেন। তাতে আমাদেরই ফায়দা, প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’’
বিরোধীরা আগেই ৮ নভেম্বর বিক্ষোভে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মোকাবিলায় মোদী সরকার ‘কালো টাকা বিরোধী দিবস’ পালন করার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু গুজরাত ভোটের দিকে তাকিয়ে রাহুল লাগাতার নোট বাতিল আর জিএসটি নিয়ে প্রচার চালাতে চাইছেন মোদীর গড়ে সিঁধ কাটতে। এ কাজে মনমোহন সিংহ, চিদম্বরমের মতো নেতাকেও কাজে লাগাতে চাইছেন। মনমোহনও আজ বৈঠকে বলেন, জিএসটি ত্রুটিপূর্ণ। এর রূপায়ণ রোজগার আর ব্যবসায় বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy