Advertisement
E-Paper

বেকায়দায় পড়ে সিধু ‘শহিদ’ হতেও রাজি

নিজের ফেলা গুগলিতেই ফেঁসে গিয়েছেন নবজোত সিংহ সিধু! এ বার তাই বিজেপি নেতাদের বিঁধে পঞ্জাবের জন্য ‘শহিদ’ হওয়ার তাস খেললেন। যাতে আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবালের আরও কাছে আসা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪১
সাংবাদিক বৈঠকে। ছবি: পিটিআই

সাংবাদিক বৈঠকে। ছবি: পিটিআই

নিজের ফেলা গুগলিতেই ফেঁসে গিয়েছেন নবজোত সিংহ সিধু! এ বার তাই বিজেপি নেতাদের বিঁধে পঞ্জাবের জন্য ‘শহিদ’ হওয়ার তাস খেললেন। যাতে আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবালের আরও কাছে আসা যায়।

আপের ভরসাতেই গত সপ্তাহে রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সিধু। এক সপ্তাহ নীরব থাকার পর তিনি আজ প্রকাশ্যে এসে বললেন, কেন তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু তাল ঠুকে বলতে পারলেন না, তাঁর পরের গন্তব্য আপ। এবং পঞ্জাবের ভোটে তিনিই সে দলের মুখ হতে চলেছেন। কারণ, আপের গঠনতন্ত্র বলছে, এক পরিবারে দু’জন ভোটে লড়তে পারবেন না। ফলে সিধু ও তাঁর স্ত্রী দু’জনেই যে আপের পথে পা বাড়াচ্ছিলেন, তাতে প্রথম বাধা। আরও বড় ধাক্কা, সিধুর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা থাকায় কেজরীবাল এখনও পঞ্জাবের ভোটে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে ইতস্তত করছেন।

কেজরীবালের আস্থা অর্জনে তাই সিধু আজ আরও আক্রমণাত্মক হলেন বিজেপির প্রতি। মনে করালেন, এক সময় অটলবিহারী বাজপেয়ী তাঁকে অমৃতসর থেকে ভোটে লড়তে বলেছিলেন। অনেক কঠিন পরিস্থিতিতেও চার বার তাঁর জন্য ভোটে জিতেছে বিজেপি। তবু গত লোকসভা ভোটে তাঁকে পঞ্জাব ছেড়ে দিল্লি বা হরিয়ানা থেকে লড়তে বলা হয়। তিনি ভোটে লড়েননি, তবু পঞ্জাব ছাড়েননি। এক সময় তাঁর রাজনৈতিক ‘গুরু’ ছিলেন অরুণ জেটলি। তাঁকে বিঁধে সিধু বলেন, ‘‘অমৃতসর আসনটি (জেটলির জন্য) ছেড়ে দিলেও মোদী হাওয়ার মধ্যেও তাঁকে ডুবতে হয়েছে।’’

রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়া নিয়ে সিধুর বক্তব্য, ‘‘আমাকে রাজ্যসভার আসন দিয়ে বলা হয়েছিল পঞ্জাব থেকে দূরে থাকতে হবে। পাখিও দিনের শেষে নিজের বাসায় ফিরে আসে। কোনও দল, কোনও স্বার্থ পঞ্জাবের থেকে বড় হতে পারে না।’’ সিধু কার্যত বোঝাতে চেয়েছেন, পঞ্জাবের সেরা মুখ তিনিই। এবং বিজেপি সেই কাজটি তাঁকে করতে দেয়নি বলেই তিনি আজ বিজেপির থেকে দূরে সরে এসেছেন।

কেজরীবালের ইস্তফার দিনে তাঁর ‘সাহসিকতা’র জন্য ‘স্যালুট’ জানিয়েছিলেন কেজরীবাল। আজও সিধুর সাংবাদিক বৈঠকের পর তিনি টুইট করেছেন, ‘‘সিধু পঞ্জাবের মাদক সমস্যা নিয়ে বলতে চাওয়ায় বিজেপি বাধা দিয়েছিল। বিজেপি কাকে আড়াল করছে? এটা মারাত্মক।’’ কিন্তু ওই পর্যন্তই! এক সপ্তাহ পরেও সিধু যেমন আপে যাওয়া নিয়ে মৌন, তেমনই নীরব কেজরীবালও। গত সপ্তাহে সিধুর পদত্যাগের পরই তাঁর বিজেপি-বিধায়ক স্ত্রী নবজোত কৌর বলেছেন, আপে গিয়ে সেবা করা ছাড়া সিধুর আর কোনও উপায় নেই। রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ মানেই তিনি বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছেন। ফলে বিজেপিতে আর ফিরে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।

ফলে বিজেপি নেতৃত্ব এখন মজা দেখছেন। শেষমেশ সিধুর আম-ছালা দুই-ই যায় কি না, সেটাই দেখতে চান তাঁরা। দলের এক নেতার বিশ্লেষণ, সিধু ও তাঁর স্ত্রী দু’জনের আপ থেকে ভোটে লড়ার প্রশ্ন নেই। সিধুকে যদি শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী না করে নিছক তারকা প্রচারক হিসেবে ব্যবহার করে আপ, তা হলে এত ঢাকঢোল পিটিয়ে পদত্যাগেরই বা কী প্রয়োজন ছিল? সাংসদ থেকে বিধায়ক হওয়ার জন্য নিশ্চয়ই তিনি বিজেপি ছাড়েননি! আর রাজ্যসভার টিকিট দেওয়ার সময়ই যদি তাঁকে বলা হয়ে থাকে, পঞ্জাবে না যেতে, তা হলে তিনি সেই পদ নিয়ে দু’মাস থেকে গেলেন কেন?

বিজেপি সূত্রের মতে, সিধু আসলে দেখছিলেন, নরেন্দ্র মোদী এ বারে তাঁকে মন্ত্রী করেন কি না। শরিক দল অকালির আপত্তি থাকায় ভোটের মুখে সে পথে হাঁটেননি প্রধানমন্ত্রী। এ দিকে সিধুর মতো পার্ট-টাইম রাজনীতিককে কেজরীবাল মানিয়ে নিতে পারেন কি না, সেটাও দেখার। আপ মুখ্যমন্ত্রীর পদে মুখ না করলে সংসদে ফেরার জন্য সিধুকে এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হবে। সিধুকে স্বাগত জানাতে তৈরি, জানিয়েই রেখেছেন কংগ্রেসের ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy