Advertisement
E-Paper

রাজ্যসভায় পেশ হল না তালাক বিল

লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিল পাশ করিয়েছিল সরকার। বিলটি স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হোক— বিরোধীদের এই দাবি মানেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৮

বাজেট অধিবেশন পর্যন্ত ঝুলে রইল তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিলের ভাগ্য।

লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিল পাশ করিয়েছিল সরকার। বিলটি স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হোক— বিরোধীদের এই দাবি মানেনি। কিন্তু রাজ্যসভায় তারা সংখ্যালঘু। তাই সরকারের কৌশল ছিল, বিলটি যেনতেনপ্রকারে পেশ করে ভোটাভুটিতে যাওয়া। যাতে এই প্রচার করা যায় যে, বিরোধীরা তিন তালাক প্রথা বজায় রাখার পক্ষে।

এই অবস্থায় বিরোধীদের পাল্টা কৌশল ছিল, বিলটি পেশই করতে না দেওয়া। রাজ্যসভায় প্রথম দফার যুদ্ধে বিরোধীদেরই জয় হল। গত দু’দিন ধরে চেষ্টা করেও তুমুল হইহট্টগোলের জেরে বিল পেশ করতে পারল না সরকার। এ দিন প্রশ্নোত্তর পর্ব মিটতেই রাজ্যসভা মুলতুবি করে দিতে হয়। আজই মেয়াদ ফুরলো সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের। এ বার বাজেট অধিবেশনের অপেক্ষা।

আরও পড়ুন: থানার সামনে গলায় গুলি করে আত্মঘাতী কনস্টেবল

আজ রাজ্যসভার চেয়ারম্যান সব দলের নেতাদের ডেকে মিটমাটের সূত্র বার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিলটি রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবিতে অনড় ছিলেন বিরোধীরা। সরকার প্রস্তাব দেয়, আগে বিল নিয়ে আলোচনা হোক। তার পরে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবে ভোটাভুটি হোক। বিরোধীরা দাবি তোলে, কংগ্রেস ও তৃণমূল সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর যে প্রস্তাব এনেছে, আগে তাতেই ভোট হবে।

সরকারের পক্ষে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে তেলুগু দেশম, এডিএমকে, বিজেডির মতো দলগুলিও বেঁকে বসায়। তবু এ দিন আয়োজনে ত্রুটি করেনি তারা। যদি বিল পেশ করা যায় সেই আশায় সব সাংসদকে হাজির থাকার হুইপ দিয়েছিল। পাল্টা আয়োজনে একই হুইপ জারি করেছিল কংগ্রেসও।

প্রশ্ন হল, এ বার কী হবে?

তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দিয়ে, তিন বছরের কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করতে অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স জারি করা যায় কি না, সেই চিন্তা রয়েছে সরকারের অন্দরে। এই মতের সমর্থকেরা চান ছ’মাস পরে অধ্যাদেশের মেয়াদ ফুরোলে সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকে জিএসটি চালুর মতো একটা ইভেন্টের চেহারা দিয়ে তিন তালাক বিল পাশ করাতে।

কিন্তু শাসক দলের আর একটি পক্ষের মতে, বিল পাশ করার থেকে কংগ্রেসের দিকে আঙুল তোলাটা রাজনৈতিক দিক থেকে বেশি লাভজনক। ঠিক এই কারণেই বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে রাজি হয়নি সরকার। সে ক্ষেত্রে বিজেপি রাজনীতি করার সুযোগ পেত না। সেই পথে হেঁটে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমার আজ বলেছেন, ‘‘মুসলিম বোনেদের কথা ভাবছেন না রাহুল গাঁধী ও কংগ্রেস। শাহ বানোর মতো এ বারও তাঁরা অন্যায় করছেন।’’ আজ রাহুল পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, তিন তালাক বিল নিয়ে সরকার এত তৎপর, তা হলে লোকপাল বিল নিয়ে সেই তৎপরতা নেই কেন? চার বছর আগে, ইউপিএ সরকার লোকপাল বিল পাশ করিয়েছিল। তার পর মোদী জমানায় লোকপাল গঠন হল না কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল।

তা বলে অধ্যাদেশ হবে না, এটাও এখনই স্পষ্ট করে বলছে না মোদী সরকার। অনন্ত কুমারের দাবি, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট ছ’মাসের মধ্যে আইন তৈরি করতে বলেছে। আমরা সেই রায়ের প্রতি দায়বদ্ধ।’’ আইনজীবীরা অবশ্য বলছেন, ছ’মাসের মধ্যে আইন তৈরির নির্দেশ বেঞ্চের সংখ্যালঘু মত। সেটা আদালতের রায় নয়।

ঘটনাচক্রে আজই ঘোষণা হয়েছে, এ মাসের ২৯ তারিখ থেকে বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। পরের অধিবেশনের দিন ঘোষণার পর অধ্যাদেশ জারি করার প্রথা নেই। শীত অধিবেশনে সরকারের মূল লক্ষ্যই ছিল তিন তালাক ও ওবিসি কমিশন বিল পাশ করা। দু’টিতেই তারা ব্যর্থ।

Triple Talaq Winter Session parliament
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy