সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে সন্ত্রাসবাদী এবং তাদের ‘প্রভুরা’ আরও শক্তিশালী হবে। অমৃতসরে আয়োজিত ‘হার্ট অব এশিয়া’ সম্মেলনে মন্তব্য করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৪টি দেশের অংশগ্রহণে অমৃতসরে শুরু হয়েছে এ বারের হার্ট অব এশিয়া সম্মেলন। পাকিস্তান এ বারের এই সম্মেলনে অংশ নেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশনীতি সংক্রান্ত উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ শনিবার রাতেই অমৃতসর পৌঁছে যান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শনিবারই তিনি দেখা করেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে এবং সেখানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরানোর লক্ষ্যে ২০১১ সালে হার্ট অব এশিয়া-ইস্তানবুল প্রসেস-এর জন্ম। সেই থেকে প্রতি বছরই বিভিন্ন সদস্য দেশে হার্ট অব এশিয়া সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে। ভারতে এই প্রথম বার। আফগানিস্তান এই সংগঠনের স্থায়ী প্রধান। যেহেতু সম্মেলন এ বার ভারতে, সেহেতু ভারতের বিদেশমন্ত্রী এ বারের সম্মেলনে সহকারী প্রধান। বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ অসুস্থ থাকায় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ভারতের তরফে কো-চেয়ার হিসেবে পৌরোহিত্য করছেন। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক সঙ্গে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। তবে তার আগে মোদী এবং ঘনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ভারত-আফগান বাণিজ্য বৃদ্ধি, সে দেশে ভারতীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ভারত সেখানে যে পুনর্গঠনের কাজ চালাচ্ছে, তার আরও প্রসার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ভারত-আফগান সহযোগিতা আরও বৃদ্ধির বিষয়ে দু’দেশ সহমত হয়েছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর।
সম্মেলনে নিজের ভাষণে নরেন্দ্র মোদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে যৌথ ভাবে অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিতেই হবে, কারণ সন্ত্রাস রক্তপাত ঘটায় এবং ভীতি ছড়ায়। আফগানিস্তানে এবং গোটা অঞ্চলে সন্ত্রাসের নেটওয়ার্ক প্রসঙ্গে যদি আমরা নীরব এবং নিষ্ক্রিয় থাকি, তা হলে সন্ত্রাসবাদীরা, তাদের প্রভুরা এবং তাদের অর্থের জোগানদাতারা আরও শক্তিশালী হবে।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভাষণে সন্ত্রাস প্রসঙ্গে পাকিস্তানের নাম উচ্চারণ করেননি। কিন্তু আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি সরাসরি পাকিস্তানকেই এ দিন নিশানা করেছেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন কূটনীতি ভেঙে ট্রাম্পের ফোন তাইওয়ানে, তীব্র ক্ষোভ বেজিঙের
সন্ত্রাস নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আলাদা করেও আলোচনা হয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশনীতি সংক্রান্ত উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ শনিবার রাতেই ভারতে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে নৈশভোজের ফাঁকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের কথা হয়েছে। আজিজ এবং অন্য কয়েকটি দেশের বিদেশ মন্ত্রীরা এক সঙ্গে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর মোদীর সঙ্গেও দেখা করেন। সেখানেও মোদী সন্ত্রাস রোখার বার্তাই দিয়েছেন।