Advertisement
E-Paper

দুই সীমান্তে নয়, একসঙ্গে আড়াই ‘সীমান্তে’ লড়তে প্রস্তুত ভারত: সেনাপ্রধান

সীমান্তে পরিস্থিতি খুব অপ্রীতিকর হলে চিন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতকে যে একসঙ্গে লড়তে হতে পারে, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই সে বিষয়ে একমত। বিশেষজ্ঞ মহল এই ধরনের যুদ্ধকে ‘টু ফ্রন্ট ওয়ার’ নামেই ডাকে। অর্থাৎ একটি শক্তিকে একই সঙ্গে দু’টি শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হয়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ১৮:৩৬
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

দেশের সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। ভারতীয় সেনা একাই ‘আড়াই জন’ প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত— মন্তব্য জেনারেল রাওয়াতের। একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বৃহস্পতিবার সেনাপ্রধান এ কথা বলেছেন। চিন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যদি একসঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়, তা হলে ভারতীয় বাহিনী প্রস্তুত তো? এমন প্রশ্ন দীর্ঘ দিন ধরেই উঠছিল। দেশের সেনাপ্রধান এই প্রথম তা নিয়ে মুখ খুললেন। ইঙ্গিত দিলেন, শুধু চিন এবং পাকিস্তান নয়, দেশের ভিতরে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলির বিরুদ্ধেও একই সঙ্গে লড়তে প্রস্তুত সেনা।

সীমান্তে পরিস্থিতি খুব অপ্রীতিকর হলে চিন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতকে যে একসঙ্গে লড়তে হতে পারে, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই সে বিষয়ে একমত। বিশেষজ্ঞ মহল এই ধরনের যুদ্ধকে ‘টু ফ্রন্ট ওয়ার’ নামেই ডাকে। অর্থাৎ একটি শক্তিকে একই সঙ্গে দু’টি শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হয়। এই টু ফ্রন্ট ওয়ার-এর জন্য ভারত কতটা প্রস্তুত— গত কয়েক বছর ধরেই জোর চর্চা চলছে তা নিয়ে। জেনারেল বিপিন রাওয়াত বৃহস্পতিবার সে প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘ভারতীয় সেনা টু অ্যান্ড আ হাফ ফ্রন্ট ওয়ার-এর জন্য প্রস্তুত।’’ সেনাপ্রধানের স্পষ্ট ইঙ্গিত, চিন এবং পাকিস্তান সীমান্তে একসঙ্গে লড়ার পাশাপাশি দেশের মধ্যে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলির মোকাবিলা করতেও ভারতীয় সেনা প্রস্তুত।

ভারতের সব সীমান্তকেই ভারতীয় বাহিনী সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম, একাধিক প্রতিপক্ষ হাত মেলালেও ভারত মোকাবিলায় প্রস্তুত। সেনাপ্রধান এই বার্তাই দিয়েছেন। —ফাইল চিত্র।

কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির বাড়বাড়ন্ত, পাকিস্তানের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রায় রোজ গোলা-গুলি বিনিময়, চিনের সঙ্গে তিক্ততা ক্রমশ বাড়তে থাকা— এমন এক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারতীয় সেনাপ্রধানের এই মন্তব্যকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে লড়তে হলে যে এলাকা কৌশলগত ভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেই পার্বত্য যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য বিশেষ বাহিনী তৈরির প্রক্রিয়া যে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে, সেনাপ্রধান সে কথাও জানিয়েছেন। ১৭ স্ট্রাইক কোর নামের ওই বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বাহিনীর জন্য নিয়োগ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জেনারেল রাওয়াত এ দিন জানান। তবে নিয়োগ, বিশেষ প্রশিক্ষণ, প্রতিকূল পরিবেশ এবং দুর্গম ভূপ্রকৃতিতে লড়ার অভ্যাস তৈরি করা এবং সব শেষে পার্বত্য অঞ্চলে সেই বাহিনীকে মোতায়েন করা— এর জন্য সব মিলিয়ে বছর তিনেক সময় লাগার কথা বলে সেনাপ্রধান জানিয়েছেন। সে কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: মায়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে রাজনাথের বৈঠক আইজলে

ভারত একসঙ্গে একাধিক ফ্রন্টে লড়তে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করলেও, জেনারেল রাওয়াত তাঁর সাক্ষাৎকারে কিন্তু যুদ্ধের বিরুদ্ধেই বার্তা দিয়েছেন। ভারত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ঠিকই, কিন্তু যুদ্ধ এড়ানোর জন্যও অনেক রকম কৌশল রয়েছে— মন্তব্য সেনাপ্রধানের। কয়েক দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘গত ৪০ বছরে ভারত-চিন সীমান্তে একটাও গুলি চলেনি।’’ সেনাপ্রধান এ দিন সেই মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেছেন। সীমান্তে উত্তেজনা থাকলেও যুদ্ধ যে এড়িয়ে যাওয়া যায়, জেনারেল রাওয়াত সে কথাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। তবে যুদ্ধ এড়ানোর কৌশল যে অনেক সময় কাজ করে না এবং সে রকম পরিস্থিতির মোকাবিলায় যে ভারত প্রস্তুত, সেনাপ্রধানের নানা মন্তব্যে এ দিন সে বার্তা ছিল স্পষ্ট। জেনারেল রাওয়াতের বার্তা, বাধ্য না হলে ভারত যুদ্ধে জড়াবে না। কিন্তু প্রয়োজনে চিন-পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তেও ভারতীয় সেনা তৈরি।

Indian Army India-Pakistan India-China Two-Front War Two-And-A-Half-Front War General Bipin Rawat জেনারেল বিপিন রাওয়াত পাকিস্তান ভারত পাকিস্তান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy