Advertisement
E-Paper

সন্ত্রাস নিয়ে মোদীকে জবাব পাকিস্তানের

পর পর দু’দিন আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানকে তুলোধোনা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রত্যাশিত ভাবেই আজ জবাব দিয়েছে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে আজ ফের কাশ্মীরে সিআরপিএফের শিবিরে হানা দিয়েছে জঙ্গিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৯

পর পর দু’দিন আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানকে তুলোধোনা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রত্যাশিত ভাবেই আজ জবাব দিয়েছে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে আজ ফের কাশ্মীরে সিআরপিএফের শিবিরে হানা দিয়েছে জঙ্গিরা।

জি-২০ ও আসিয়ানের মঞ্চে সন্ত্রাসের এজেন্টদের ছড়িয়ে দেওয়ার পিছনে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকাও পাকিস্তানকে জানিয়ে দেয়, বেছে বেছে কিছু জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে হবে না। প্রতিবেশী দেশে হামলা চালাচ্ছে এমন যে সব গোষ্ঠী পাকিস্তানে আশ্রয় নিচ্ছে তাদের সকলের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করতে হবে।

কূটনীতিকদের মতে, এর ফলে যথেষ্টই চাপে পড়েছে ইসলামাবাদ। আজ পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া জানান, পাকিস্তানে নাশকতার পিছনে ভারতের মদত থাকার অনেক প্রমাণ ইসলামাবাদের হাতে রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার আসন্ন অধিবেশনে বিষয়টি তোলা হবে। তবে বালুচিস্তানে ‘ধৃত’ ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্মী কুলভূষণ যাদবের বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগ নিয়ে তারা সরব হবে কি না তা স্পষ্ট করেনি পাকিস্তান।

চুপ করে বসে নেই ভারতও। মোদীর কথার সুর টেনে বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, রাষ্ট্রের এক্তিয়ার বহির্ভূত শক্তি (নন স্টেট অ্যাক্টর) অন্য দেশে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে কোনও দেশ দায় এড়াতে পারে না। কোনও দেশ থেকে জঙ্গি কার্যকলাপ হলে সব সময়েই সে দেশের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের যোগাযোগ থাকে। তাই ভারত সন্ত্রাসকে রাষ্ট্রীয় মদত দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছে। লস্কর, জইশের মতো সংগঠনকে রাষ্ট্রের এক্তিয়ার বহির্ভূত শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে বরাবরই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ। ‘ভাল জঙ্গি, খারাপ জঙ্গি’ বলেও কিছু হয় না বলে মন্তব্য করেছেন জয়শঙ্কর।

সব মিলিয়ে নভেম্বরে সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের আগে ভারত-পাক বাগ্‌যুদ্ধ থামার কোনও সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন না কূটনীতিকরা। এই পরিস্থিতিতে আবার কাশ্মীরে সাম্প্রতিক অশান্তিতে পাক মদত নিয়ে ভারতের অভিযোগকে কার্যত মান্যতা দিয়েছেন হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। এ দিন দুপুরে শ্রীনগরে নিজের বাড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন গিলানি। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দেয় সরকার। তার পরে এক বিবৃতিতে গিলানি দাবি করেন, কাশ্মীরের আন্দোলনকে বানচাল করতে কয়েক জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে খুন করার ছক কষছে সরকার। তাঁদের মধ্যে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী এমনকী সাংবাদিকরাও রয়েছেন। কাশ্মীরি সমাজের সর্বস্তর থেকে প্রতিবাদ হওয়ায় ভয় পেয়ে গিয়েছে দিল্লি। এই আন্দোলনকে সমর্থন করার জন্য পাকিস্তান, চিন, সৌদি আরব ও ইরানকে ধন্যবাদ জানান গিলানি।

কাশ্মীরে‌ রাজনৈতিক সমাধান যে দূর অস্ত্‌ তা কার্যত গত কালই মেনে নিয়েছিল কেন্দ্র। আজ ভূস্বর্গে আরও চার ব্যাটেলিয়ন সেনা পাঠানোর কথা ঘোষণা করে তারা সেই ধারণাতেই সিলমোহর লাগিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দিল্লির রক্তচাপ বাড়িয়ে এ দিনই রাতে দক্ষিণ কাশ্মীরে তাহাব এলাকার সিআরপিএফ শিবিরে হামলা চালিয়েছে জনা পাঁচেক জঙ্গি। কিছু ক্ষণ গুলি বিনিময়ের পরে কাছের একটি স্কুলে আশ্রয় নেয় জঙ্গিরা। তল্লাশি শুরু করেছে বাহিনী।

সরকারি সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, সেনাবাহিনী জঙ্গি দমনের কাজই করবে। উপত্যকায় অশান্তির সুযোগে আরও বেশি জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটানোর চেষ্টা করছে পাকিস্তান। সিআরপিএফের শিবিরে নয়া হামলাই তার প্রমাণ। সে জন্যই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। অশান্তির কারণে কিছু দিন জঙ্গি-বিরোধী অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছিল। ফলে জঙ্গিরা গতিবিধি বাড়িয়েছে। সে জন্যই ফের অভিযান চালানোর প্রয়োজন।

তবে এই তত্ত্ব মানতে রাজি নন অনেকেই। তাঁরা জানাচ্ছেন, কাশ্মীরে অশান্তি এখনও থামেনি। শ্রীনগর, অনন্তনাগ, কুলগাম, শোপিয়ান, পাম্পোর, ত্রাল, বারামুলার মতো এলাকায় নতুন করে কার্ফু জারি করা হয়েছে। আরও সেনা পাঠিয়ে সরকারের কর্তৃত্ব ফের দৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে সরকার।

Kashmir Narendra Modi Pakistan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy