Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অশান্তি বাড়াবে পাকিস্তান, আশঙ্কায় মোদী সরকার

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, ৭৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চলতি বছরে ৭৮০ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। যার জেরে ১২ জন স্থানীয় বাসিন্দা-সহ মোট ৩৩ জন নিহত হয়েছেন।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪২
Share: Save:

পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া ‘শান্তি প্রস্তাব’ দেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই হামলা চালিয়েছে পাক সেনা। জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখায় ওই হামলায় নিহত হয়েছেন এক মেজর-সহ চার সেনা। পুঞ্চেও নিয়ন্ত্রণরেখার ও পার থেকে ফের গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

২০১৭ সালের ঘটনা খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় সরকার জানাচ্ছে, সাম্প্রতিক অতীতে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সর্বাধিক সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করা হয়েছে এই বছরটিতেই। পাকিস্তানের আইনসভা সেনেটে বাজওয়া তাঁর বক্তৃতায় শান্তির কথা বললেও তাকে আদৌ গুরুত্ব দেয়নি বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কূটনীতিকেরা এটাও মনে করছেন, পাকিস্তান এবং ভারতের বর্তমান সরকারের আমলে এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বিন্দুমাত্র অগ্রগতিরও কোনও সম্ভাবনা আর নেই। আগামী বছর পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। তার পরের বছর ভারতে। বিশেষজ্ঞদের মতামত, বরং আগামী বছর ভারত-পাক সম্পর্কে তিক্ততা আরও বাড়বে বই কমবে না। বছর শেষের এই সময়টিতে সীমান্তে সেনাকে চূড়ান্ত সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। আশঙ্কা রয়েছে আরও হামলার।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, ৭৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চলতি বছরে ৭৮০ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। যার জেরে ১২ জন স্থানীয় বাসিন্দা-সহ মোট ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি গত তিন বছরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালে ১৫৩ বার, ২০১৫ সালে ১৫২ বার এবং ২০১৬ সালে ২২৮ বার সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গ করেছে পাক বাহিনী। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, ইসলামাবাদ যে শান্তি বজায় রাখতে চায় না তা স্পষ্ট। গত মাসেই ভারতের মিলিটারি জেনারেল (অপারেশনস) এ কে ভট্ট পাক মেজর জেনারেল শাহির শামশাদ মির্জাকে জানিয়েছিলেন যে, রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদর দফতর এবং নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন পাক সেনার মধ্যে সংযোগের অভাব রয়েছে।

বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র আরও এক ধাপ এগিয়ে বলছে, সংযোগের অভাব নয়, আসলে এটাই পাক সেনার চিরকালীন ছক। তারা রাওয়ালপিন্ডিতে বসে বিশ্বকে বার্তা দেওয়ার জন্য মাঝে মধ্যে শান্তির কথা বলে ঠিকই। কিন্তু নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি শুধু নয়, জঙ্গি অনুপ্রবেশেরও সুযোগ করে দেয়।

গতকালের হামলার ফলে দেশে পাক-বিরোধী মনোভাব আরও তীব্র হবে বলে মনে করছে সরকার। ছেলের মৃত্যুর জন্য পাকিস্তানকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নিহত জওয়ান পারগত সিংহের বাবা রত্তন সিংহ। সংসদের চলতি অধিবেশনে যে সরকারকে এই ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হবে তা আজই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি শুধু এই ঘটনাটিকে নিয়েই আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে সমালোচনা করেছেন নরেন্দ্র মোদীর পাক-নীতির। তাঁর কথায়, ‘‘মোদীর ৫৬ ইঞ্চি ছাতি এখন আর দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচনের সময়ে তিনি বড় বড় কথা বলেছিলেন। পাক সন্ত্রাসবাদ দমন করার প্রশ্নে হুঙ্কার দিয়েছিলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, পাক আক্রমণের ঘটনা বেড়েই চলেছে।’’ বিনা আমন্ত্রণে পাকিস্তানে চলে যাওয়া, নিজের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে আমন্ত্রণ করার মতো বিষয়গুলিকে কূটনৈতিক মুর্খামি হিসেবেই আজ তুলে ধরেছে কংগ্রেস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE