Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National News

শশিকলার সঙ্গে শতাধিক বিধায়ক, তবু আস্থাভোটের পথেই হাঁটছেন পনীর

প্রতিবাদের রাস্তাতেই হাঁটতে চাইছেন তামিলনাড়ুর বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভম। মুখ্যমন্ত্রিত্ব বজায় রাখতে আপাতত আস্থাভোটেই যেতে চাইছেন তিনি

বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি শশিকলা।

বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি শশিকলা।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৪:৪৮
Share: Save:

প্রতিবাদের রাস্তাতেই হাঁটতে চাইছেন তামিলনাড়ুর বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভম। মুখ্যমন্ত্রিত্ব বজায় রাখতে আপাতত আস্থাভোটেই যেতে চাইছেন তিনি।

গত রবিবার রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাওয়ের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন। মঙ্গলবার জয়ললিতার সমাধিস্থল থেকে বেরিয়ে জানিয়েছিলেন, দলের কর্মীরা সঙ্গে থাকলে সেই পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন। বুধবার আরও এক ধাপ এগিয়ে জানালেন, আস্থাভোটের মাধ্যমেই তিনি নিজেকে রাজ্যের প্রকৃত প্রধান হিসেবে প্রমাণ করবেন। পাশাপাশি, এ দিন তিনি জয়ললিতার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

অন্য দিকে, এ দিন সকালে পোয়েস গার্ডেনে দলীয় বিধায়কদের ডেকে পাঠান শশিকলা। দলের ১৩৪ জন বিধায়কদের মধ্যে পনীরসেলভম-সহ তিন জন বাদে ১৩১ জনই সেখানে হাজির ছিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা তাঁদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলে সূত্রের খবর। সেখানে শশী জানান, ‘আম্মা’ জয়ললিতার পথেই তিনি কাজ করতে চান। পাশাপাশি, বিদ্রোহীদের যে দলে সহ্য করা হবে না তাও জানিয়ে দেন তিনি। পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি দাবি করেন, দলীয় স্তরে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। দল চাইছে এই সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দল ভাঙতে এটা ডিএমকে-র একটা নির্লজ্জ্ চেষ্টা।আমি এটা হতে দেব না। আশা করি, যাঁরা আম্মাকে ভালবাসতেন তাঁরা সকলেই আমার সঙ্গে থাকবেন।’’

বুধবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি পনীরসেলভম।

এই মুহূর্তে পনীর রাজ্যের অন্তর্বর্তীকালীন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন। গত রবিবার দলীয় বৈঠকে এআইএডিএমকে-এর পরিষদীয় নেতা নির্বাচিত হন ভি কে শশিকলা। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিজের পদত্যাগপত্র রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। রাজ্যপাল তা গ্রহণ করে তাঁকে নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ না নেওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। ঠিক ছিল, দু’এক দিনের মধ্যেই নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন শশিকলা। কিন্তু, শেষমেশ তা আর হয়ে ওঠেনি। রাজ্যপাল চেন্নাই ছেড়ে দিল্লি চলে যান। পরে সেখান থেকে মুম্বই। তামিলনাড়ুর পাশাপাশি তিনি মহারাষ্ট্রের দায়িত্বেও রয়েছেন। কাজেই বিদ্যাসাগর রাও না ফেরা পর্যন্ত শশিকলার শপথ নেওয়া কার্যত অসম্ভব। সূত্রের খবর এ দিনও তাঁর চেন্নাই ফেরার কোনও সম্ভাবনা নেই।

আরও পড়ুন
‘আম্মার আত্মার’ নির্দেশ, তাই ধ্যান সেরে শশির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ পনীরের!

এর মধ্যেই শশিকলা বিরোধীরা রাজ্যে সরব হয়ে ওঠে। পিএইচ পান্ডিয়ানের মতো বর্ষীয়ান বিধায়কের পাশাপাশি জয়ললিতার ভাইঝি দীপা জয়কুমারও সেই তালিকায় ছিলেন। এর পরেই মঙ্গলবার রাতে মেরিনা বিচে জয়ললিতার সমাধিস্থলে পৌঁছন পনীর। লেখানে প্রায় ৪০ মিনিট তিনি ধ্যানমগ্ন ছিলেন। তার পরেই জানিয়ে দেন, জোর করে তাঁকে সরানো হয়েছে। এমনকী, রবিবারের ওই দলীয় বৈঠকের কথাও তাঁকে অনেক পরে জানানো হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে তিনি নিজের সপক্ষে অনেক কথা বলার পরেও বিধায়কদের একাংশের চাপে পদত্যাগপত্র দিতে বাধ্য হন।

পনীরের বিদ্রোহী মনোভাব প্রকাশ্যে আসতেই গভীর রাতে তাঁকে দলের কোষাধ্যক্ষের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, তাতেও থামানো যায়নি পনীরকে। এ দিন তিনি দল ভাঙার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি এ দিন জয়ার ভাইঝি দীপাকেও তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে গোটাটাই নির্ভর করছে রাজ্যপালের উপর। তিনি পনীরসেলভমকে আস্থাভোটের সুযোগ দেবেন, নাকি শশিকলাকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন?

আপাতত দোলাচলে তামিলনাড়ুর ভবিষ্যত্।

ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panneerselvam Sasikala Confidence Motion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE