Advertisement
০৬ মে ২০২৪
সামিল রাজ্যও

পাম্পে কার্ডে লেনদেনে ফি বসছে না ১৩ই পর্যন্ত

পেট্রোল পাম্পে তেলের দাম আজ থেকেই আর ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে মেটানো যাবে না— এই আশঙ্কা নিয়ে শুরু হয়েছিল রবিবারের দুপুর।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৬
Share: Save:

পেট্রোল পাম্পে তেলের দাম আজ থেকেই আর ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে মেটানো যাবে না— এই আশঙ্কা নিয়ে শুরু হয়েছিল রবিবারের দুপুর। ‌পাম্প ডিলারদের অভিযোগ ছিল, সোমবার থেকেই কার্ডে দাম নেওয়ার সময়ে প্রতিটি লেনদেনে ১% পর্যন্ত চার্জ (মার্চেন্ট ডিসকাউন্ট রেট বা এমডিআর) দিতে হবে বলে জানিয়েছে কিছু বেসরকারি ব্যাঙ্ক। বলেছে, ক্রেতাদের নয়, ওই টাকা বার করতে হবে ডিলারদের পকেট থেকেই। আর এর প্রতিবাদ জানাতেই অবিলম্বে কার্ডে দাম নেওয়া বন্ধের এই সিদ্ধান্ত। যার মধ্যে সামিল পশ্চিমবঙ্গও। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খানিকটা বদলায় উদ্বেগের সেই ছবি। পাম্প মালিকদের তরফে জানানো হয়, আজ নয়, কার্ডে তেলের দাম নেওয়া হবে না আগামী ১৩ জানুয়ারির পর থেকে। ফলে গাড়িতে জ্বালানি ভরতে তখন দাম চোকাতে হবে নগদে। কারণ, জ্বালানি বিক্রিতে লেনদেন ফি বসানোর দিনও ওই ১৩ তারিখ পর্যন্তই পিছিয়েছে ব্যাঙ্কগুলি।

পেট্রোল পাম্পে গাড়ির তেল ভরতে গিয়ে কার্ডে দাম মেটাতে না পারলে, নগদের টানাটানিতে নাস্তানাবুদ আমজনতার হয়রানি যে বাড়বে সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। তবে সংশ্লিষ্ট মহল বলছে আজ থেকেই তা চালু হলে, দুর্ভোগের আর অন্ত থাকত না। সিদ্ধান্ত পিছনোয় হাতে ক’দিন অন্তত সময় মিলল। তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর নগদহীন অর্থনীতি তৈরির স্বপ্নের পথে ফি বসানোর বিষয়টি বড়সড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, এই আশঙ্কাই চাপ তৈরি করছে ব্যাঙ্কগুলির উপর। তাই আপাতত প্রস্তাব কিছু দিন স্থগিত রাখতে হয়তো খানিকটা বাধ্যই হল তারা।

ব্যাঙ্কগুলির ফি বসানো নিয়ে রবিবার বৈঠকে বসে পাম্প মালিকদের সর্বভারতীয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (এআইপিডিএ)। পশ্চিমবঙ্গে পাম্পগুলির সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তুষার সেন বলেন, ‘‘কার্ডে দাম চোকানো বন্ধ করা নিয়ে এআইপিডিএ যে সিদ্ধান্ত নেবে, এ রাজ্যের পাম্পগুলি সেটাই মেনে চলবে।’’

বস্তুত, কেন্দ্র নোট বাতিলের পরে দেশ জুড়ে নগদের টানাটানি চরমে উঠেছে। তাই জনতার সমস্যা কমাতে শুরু থেকেই নগদহীন লেনদেনে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। তাই জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রেও কার্ডে লেনদেনের ওই ফি মকুব করে তারা। কিন্তু নোট নাকচের পরে ৫০ দিন পেরোনোয় ফের তা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাঙ্ক। আর পেট্রোল পাম্প মালিকদের উপর তা বসানোর জেরেই বেঁধেছে গণ্ডগোল।

এআইপিডিএ রবিবার বিকেলে দাবি করে, সোমবার থেকেই ক্রেডিট কার্ড মারফত সব লেনদেনে ১% ও ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে ০.২৫% থেকে ১% চার্জ বইতে হবে পাম্পগুলিকে। এর প্রতিবাদে এ দিন থেকেই কার্ডে তেলের দাম দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয় তারা। কিন্তু রাতের দিকে সংগঠনের তরফে প্রেসিডেন্ট অজয় বনসল বলেন, ‘‘তেল সংস্থাগুলি জানিয়েছে, কার্ডে লেনদেনে চার্জ বসানো ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছনো হয়েছে। তাই আমরাও বিক্ষোভ কর্মসূচি পিছিয়েছি ওই দিন পর্যন্ত।’’

তুষারবাবুর অভিযোগ, সাধারণ মানুষকে উৎসাহ জোগাতে কেন্দ্র কার্ডে লেনদেনে যে ০.৭৫% নগদ ফেরানোর প্রকল্প এনেছে, তাতে এমনিতেই বিড়ম্বনা বেড়েছে। কারণ, ওই টাকা প্রথমে পাম্প মালিকদেরই পকেট থেকে যাচ্ছে। পরে তা তেল সংস্থাগুলির মেটানোর কথা থাকলেও, বহু ক্ষেত্রেই বকেয়া রয়ে যাচ্ছে। এর উপর কার্ডে লেনদেনে চার্জ বসানোর মানে পাম্পের উপর আর্থিক চাপ আরও বেড়ে যাওয়া।

তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সরকার দেশপ্রেম দেখাতে বলছে। অথচ আমাদের আয় কমছে। এর সুরাহা কী?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Petrol Pump Debit Card Transaction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE