তাঁকে তিনটি সশস্ত্র বাহিনীরই শীর্ষ পদে বসানো উচিত বলে যে মন্তব্য করেছিলেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত, তাতে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দেশে ফিরেই মোদী বিষয়টি নিয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই বিষয়ে আর কোনও কথা বলতে বারণ করেছেন তাঁকে। সেনাপ্রধান বলেছিলেন, ‘‘যুদ্ধটা স্থলেই হয়। বায়ু এবং নৌ-সেনা সেনাকে সহায়তা করে। সেই কারণেই তিনটি বাহিনীর শীর্ষ পদে থাকা উচিত সেনাপ্রধানের।’’ সেনাপ্রধানের এ হেন মন্তব্যে তুলকালাম শুরু হয়ে গিয়েছে সাউথ ব্লকে।
গোলমালটা চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। চরমে উঠেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমলাতন্ত্রের বিরোধ। ডোকলামের ঘটনার পরে সেনাবাহিনী তাদের কর্তৃত্ব এবং নিয়ন্ত্রণ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতে চাইছে। প্রস্তাব এসেছে অবিলম্বে সরকার ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ পদটি তৈরি করুক। ওই পদে আসীন ব্যক্তি তিনটি বাহিনীরই শীর্ষে থাকবেন। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের আবহ। চিন-পাকিস্তানকে রুখতে এখনই সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ সমন্বয় বাড়াতে এটা করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গিয়েছে, নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীরা এই পদ তৈরি করতে রাজি নন।
নেহরুর সময় থেকে সেনাবাহিনীকে সবসময়ই রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেনাপ্রধানেরা থাকতেন না। এখনও থাকেন না। পাকিস্তানের মতো সেনাবাহিনীর গুরুত্ব যাতে না বাড়ে সে জন্যই এই পদক্ষেপ করেছিলেন নেহরু। কিন্তু কার্গিল যুদ্ধের পরে কিছু বিষয়ে সেনাবাহিনীর চাপ আরও বাড়ে। চাপ সামলাতে তৈরি হয় সুব্রহ্ম্যণম কমিটি। তাদের সুপারিশ ছিল ‘চিফ অব ডিফেন্স’ পদটি তৈরি করা হোক। পরবর্তী কালে নরেশচন্দ্র কমিটিও একই সুপারিশ করে। সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধানের মধ্যে যিনি প্রবীণ, তিনিই ‘চিফ অব ডিফেন্স’ হবেন বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিকল্প প্রস্তাব হিসেবে বলা হয়, তিন প্রধান ছাড়াও এক জন চতুর্থ ব্যক্তিকে ওই পদে বসানো হোক। কিন্তু মোদী সরকার মনে করছে এতে আরও জটিলতা বাড়বে।
সম্প্রতি অরুণ জেটলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী থাকাকালীন প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় সরঞ্জাম ও অস্ত্র নিজেরাই টেন্ডার করে কিনতে চেয়েছিল সেনা। অরুণ জেটলি তখন নমুনা হিসেবে একটি প্রকল্পে দেড়শো-দু’শো কোটি টাকা খরচ করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন বাহিনীকে। কিন্তু তিন মাসেও তা খরচ করতে পারেনি তারা। তখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, এই ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়া যাবে না। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হাতেই থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy