Advertisement
E-Paper

স্কুলে ফিরতেই ভয় পাচ্ছে প্রদ্যুম্নের বন্ধুরা

সেই ঘটনার পরে দশ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু স্কুলে ফিরতেই ভয় পাচ্ছে ওই খুদে। ‘‘সে দিন আমার জন্মদিন ছিল। প্রদ্যুম্ন আমাকে বলেছিল, ওর জন্য বেশি করে চকলেট রাখতে। তা-ই রেখেছিলাম। কিন্তু ওকে আর চকলেটগুলো দেওয়া হলো না!’’

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৩৭
প্রদ্যুম্ন ঠাকুর।

প্রদ্যুম্ন ঠাকুর।

নিজের জন্মদিনটা কি আর কখনও স্বাভাবিক ভাবে পালন করতে পারবে বছর সাতেকের খুদেটা! ওই দিনটাতেই যে খুন হয়েছিল তার প্রিয় বন্ধু, গুরুগ্রামের রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র প্রদ্যুম্ন ঠাকুর।

সেই ঘটনার পরে দশ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু স্কুলে ফিরতেই ভয় পাচ্ছে ওই খুদে। ‘‘সে দিন আমার জন্মদিন ছিল। প্রদ্যুম্ন আমাকে বলেছিল, ওর জন্য বেশি করে চকলেট রাখতে। তা-ই রেখেছিলাম। কিন্তু ওকে আর চকলেটগুলো দেওয়া হলো না!’’— বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে ওঠে একরত্তি ছেলেটা। তার বাবা জানালেন, রক্তের মধ্যে প্রদ্যুম্নের গলা কাটা দেহ পড়ে থাকতে দেখেছিল ছেলেটি। সেই ভয়াবহ দৃশ্য তার মনে গেঁথে গিয়েছে।

স্কুলে তারা সব সময় একসঙ্গেই থাকত। একই বেঞ্চে তার পাশে বসতো প্রদ্যুম্ন। তার সহপাঠীর প্রশ্ন, ‘‘কী করে আমি আবার ওই বেঞ্চটাতে বসবো?’’ খাওয়ার জল আনতে বা বাথরুম গেলে তারা সব সময়ে একসঙ্গে যেত। কিন্তু সেই বাথরুমেই তো...! স্কুলের এই জায়গাগুলো তাড়া করে বেড়াচ্ছে খুদে মনটাকে। তার বাবা জানালেন, প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুর পর থেকে একটা রাতও ঘুমোতে পারেনি বাচ্চাটি। খালি বলছে, ‘‘আমার মনে হচ্ছে, প্রদ্যুম্ন আমার পাশেপাশেই ঘুরছে। আমার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটছে।’’

একই আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে স্কুলের অন্য খুদেদের। গত কালই খুলেছে রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রদ্যুম্নর ৩৪ জন সহপাঠীর মধ্যে স্কুলে এসেছিল মাত্র ৫ জন। প্রদ্যুম্নকে যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেখানটা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। পড়ুয়াদের সে দিকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তবু আতঙ্ক কাটছে কই!

আদিত্যরাজ সিংহ চৌহান নামে প্রদ্যুম্নর এক আর এক সহপাঠী তো বলেই দিল, ‘‘আমি আর ওই স্কুলে যাব না। বাথরুমে গেলেই মনে হবে, প্রদ্যুম্ন আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে।’’ আদিত্যর বাবার কথায়, ‘‘ঘটনার পর থেকে আমার ছেলে ঘুমোতে পারেনি। বাড়িতেও একা বাথরুমে যেতে ভয় পাচ্ছে।’’ প্রদ্যুম্নের আর এক সহপাঠিনীর মা বললেন, ‘‘এই ঘটনা প্রতিটি শিশুমনকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আমার মেয়ে শুধু বলছে, ‘মা, তুমিও আমার সঙ্গে স্কুলে চলো।’ অভিভাবক হিসেবে আমাদের খুবই অসহায় লাগছে।’’

ঘটনার দশ দিন পরেই স্কুল খোলা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রদ্যুম্নর বাবা বরুণ ঠাকুর। তাঁর আশঙ্কা, সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই স্কুল খুলে যাওয়ায় প্রমাণ নষ্ট হতে পারে। এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে গত কালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতরে চিঠি লিখেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বরুণের আবেদন, সিবিআই যত দিন না তদন্ত শুরু করছে, তত দিন স্কুল বন্ধ রাখা হোক। একটি সূত্রের খবর, গুরুগ্রাম পুলিশের ডেপুটি কমিশনার আজ বিকেলে জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুলটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ দিকে, প্রদ্যুম্ন-খুনের কথা স্বীকার করেছিল যে অশোক কুমার, সে কাল নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছে। স্কুলবাসের এই খালাসিকে শুনানির জন্য সোমবার কোর্টে পেশ করা হলে সে দাবি করে, পুলিশি হেফাজতে তার উপর অত্যাচার চালিয়ে ওই খুনের কথা কবুল করতে বাধ্য করা হয়েছে।

Pradyuman Thakur Pradyuman Thakur murder case প্রদ্যুম্ন ঠাকুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy