Advertisement
E-Paper

চব্বিশেই সরপঞ্চ এমবিবিএসের এই ছাত্রী!

মাত্র ২৪ বছর বয়সে রাজস্থানের ভরতপুরের জেলার মেবাটে সরপঞ্চ হয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন শাহনাজ খান। আট বছর আগে তাঁর রাজ্যেই জয়পুরের সোডা গ্রামে সরপঞ্চ হয়েছিলেন এমবিএ ছবি রাজাবত। তবে ছবির চেয়েও কম বয়সে সরপঞ্চ হলেন শাহনাজ।

অন্বেষা দত্ত

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৭
শাহনাজ খান

শাহনাজ খান

এমবিবিএস হতে বাকি এক বছর। তার আগে, মাত্র ২৪ বছর বয়সে রাজস্থানের ভরতপুরের জেলার মেবাটে সরপঞ্চ হয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন শাহনাজ খান। আট বছর আগে তাঁর রাজ্যেই জয়পুরের সোডা গ্রামে সরপঞ্চ হয়েছিলেন এমবিএ ছবি রাজাবত। তবে ছবির চেয়েও কম বয়সে সরপঞ্চ হলেন শাহনাজ।

গত ১৯ মার্চ সরপঞ্চ হিসেবে শপথ নিয়েছেন শাহনাজ। ফোনে তাঁর গলায় একরাশ উৎসাহ, ‘‘দারুণ লাগছে! তরুণদের কথা বলতে চাই, মেয়েদের শিক্ষার কথা বলতে চাই। প্রশাসনেও সকলে নতুন মুখ চাইছিল।’’ অন্য মুখের খোঁজ পড়েছিল, কারণ, ৫০ বছরেরও বেশি সময় সরপঞ্চ থাকার পর শাহনাজের ঠাকুরদার বিরুদ্ধে শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল শংসাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বাতিল হয়ে যায় গত অক্টোবরের সরপঞ্চ নির্বাচন।

শাহনাজের বাবা জলিস খানও গ্রামের কর্তাব্যক্তি। মা জাহিদা কংগ্রেস বিধায়ক। তাহলে তো সেই উত্তরাধিকারের রাজনীতি? শাহনাজের জবাব, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে নাগরিকদের পছন্দমতো নেতা নির্বাচনের অধিকার রয়েছে। তাঁরা সেই অধিকারই প্রয়োগ করেছেন। আর আমার পরিবার চার প্রজন্ম ধরে গ্রামের সেবা করছে। ভাল কাজ হয়েছে বলেই নিশ্চয় মানুষ আমাদের বেছে নিয়েছেন।’’

রাজস্থানের প্রত্যন্ত গ্রামে যেখানে বাবা-মায়েরা মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে চান না, দ্রুত বিয়ে দিয়ে ‘দায়’ ঝেড়ে ফেলতে চান, মেয়েদের অধিকারের কথা কী ভাবে বোঝাবেন শাহনাজ? তরুণী বলেন, ‘‘নিশ্চয় পারব। আমার পরিবারও রক্ষণশীল ছিল। পরে তারা পণপ্রথা ত্যাগ করেছে। আমার মা টুয়েলভ পর্যন্ত পড়ার পর বিয়ে হয়ে এই পরিবারে আসেন। তাঁর আইন পড়া তো আটকায়নি। তা হলে অন্যরা পারবেন না কেন? গ্রামের অনেক জায়গায় স্কুল নেই। তাঁদের সেই সুযোগ দিতে চাই। যাঁরা তার পরেও মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে চাইবেন না, তাঁদের বলব, আমাকে দেখুন, মেয়েদের এখন থেমে থাকার সময় নয়।’’ কন্যাভ্রূণ হত্যা তো বড় সমস্যা তাঁর রাজ্যে। ঝাঁঝিয়ে উঠে শাহনাজের উত্তর, ‘‘আমাদের গ্রামে মেয়ে জন্মালে বলে, ‘খুশি’ এসেছে। ‘বেটি পড়াও’-এর কথা এখানে অনেক দিন আগে থেকেই বলা হচ্ছে!’’

আরও পড়ুন: চন্দার পাশেই দাঁড়াল ব্যাঙ্ক

ডাক্তার-সরপঞ্চ ভবিষ্যতে কোন ভূমিকায় নিজেকে দেখতে চান? ‘‘পাঁচ-ছ’বছর পরে মায়ের মতো বিধায়ক হতে চাই। প্রয়োজনে ডাক্তারিও করব। মেবাটে সব চেয়ে বড় সমস্যা শৌচালয়। পরিস্রুত পানীয় জল নেই। যক্ষ্মা এখানে ভয়াবহ। ডাক্তার বলেই এগুলো মাথায় রেখে রোগমুক্ত গ্রাম তৈরি করব। এখন গুরুগ্রাম থেকে ইন্টার্নশিপ করছি, যাতে দরকার পড়লেই গ্রামে চলে আসি।’’

ছবি রাজাবতের কথা শুনেছেন? শাহনাজ বলেন, ‘‘সরপঞ্চ হওয়ার পরে জানলাম ওঁর নাম। আমি ওঁর চেয়েও কম বয়সে জিতেছি। আমার জন্য প্রার্থনা করবেন!’’ নবীন সরপঞ্চের কথা শুনে খুশি ছবিও। বললেন, ‘‘শিক্ষিত, অল্পবয়সি মেয়েরা গ্রামের উন্নয়নে এগিয়ে আসছেন দেখে ভাল লাগছে। দুর্নীতি ঠেকাতে ওঁরা সক্রিয় হবেন নিশ্চয়। তবে পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব এখনও এত বেশি, যে একা মহিলার কাজ করতে অসুবিধে হয়। যত বেশি মহিলা আসবেন, তত মঙ্গল।’’

Shahnaaz Khan Sarpanch Student MBBS শাহনাজ খান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy