ছবি: সংগৃহীত।
গুজরাতে নরেন্দ্র মোদীর প্রথম সভা দিল্লি়তে বসে দেখেছিলেন রাহুল গাঁধী। রাতে টুইট করেন, ‘সাহেবের এত ভয়-ভয় মুখ কেন? কপালে ভাঁজ, মাথায় ঘাম!’
গুজরাত ভোটের মধ্যেই ‘সাহেব’ আজ সকালে দিল্লিতে এলেন এক সংবাদমাধ্যমের আয়োজিত মঞ্চে। গত সাড়ে তিন বছরের মতো আজও কোনও প্রশ্ন নিলেন না। কিন্তু তাঁর দু’টি বাক্যে আলোড়ন পড়ল রাজধানীতে। জিএসটি, নোটবন্দি প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদী বললেন, যে ঝুঁকি তিনি নিয়েছেন, তার জন্য যে কোনও রাজনৈতিক খেসারত দিতে প্রস্তুত। আর সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বললেন, তারা এত নেতিবাচক কেন?
যা শুনে রাজধানীর অলিন্দে প্রশ্ন, তা হলে কি চাপে রয়েছেন মোদী?
গুজরাতে ইতিমধ্যেই দু’দফায় আটটি সভা করেছেন। আরও আটটি সভা করতে ফের যাচ্ছেন ৩ ও ৪ ডিসেম্বর। সভা আরও বাড়ানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। কিন্তু প্রথম দু’দফার প্রচারের রিপোর্ট চিন্তায় ফেলেছে বিজেপি-কে। কারণ, প্রথম দিকে লোক জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। পরে লোক জোগাড় করলেও আগের মতো স্বতঃস্ফূর্ততা উধাও। ভোটের ‘চেনা’ হাওয়াটাই এখনও তুলতে পারেননি মোদী। অথচ তিনিই তো বিজেপির সেরা তাস।
আরও পড়ুন: আমি শিবভক্ত, ধর্ম-বিতর্কে জবাব রাহুলের
গুজরাতে বিজেপি জিতবে না, এমন কথা দলের কোনও নেতাই বলছেন না। কিন্তু গত বারের আসন ধরে রাখাই এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব সমীক্ষাই বলছে, রাহুলের সক্রিয়তা আর হার্দিক-জিগ্নেশ-অল্পেশের জোটের জেরে লড়াই জমে গিয়েছে। ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই বিজেপির সঙ্গে ব্যবধান কমছে বিরোধীদের। জাতপাতের অঙ্ক সাজিয়ে রাহুল জিএসটি, নোটবন্দি থেকে গুজরাতের উন্নয়নের হিসেব চাইছেন রোজ। সে সব প্রশ্ন এড়িয়ে ভোটের মোড় ঘোরানোই মোদীর সামনে এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
এমনই এক সময়ে আজ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামকে উদ্ধৃত করে মোদী বলেন, ‘‘মিডিয়া কেন এত নেগেটিভ? আমি বলছি না। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিই বলেছিলেন, ভারতে আমরা আমাদের ক্ষমতা আর সাফল্যের বিষয়ে এত বিব্রত কেন?’’ লোকসভা ভোটের আগে মোদী এমন একটা হাওয়া তৈরি করেছিলেন, যেন তিনি এলেই জাদুদণ্ডে বদলে যাবে ভারত। আর আজ নোটবন্দি, জিএসটি-র পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে মোদীই বলছেন, ‘‘কোনও জাদুতে দেশ বদল হবে না। তাই বলে ঝুঁকি নেওয়া হবে না, তা তো হয় না। সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক খেসারত দিতে আমি প্রস্তুত।’’
কংগ্রেস বলছে, জাতপাত থেকে ‘নরম হিন্দুত্ব’— মোদীর সব অস্ত্রই কেড়ে নিয়েছেন রাহুল। আর উন্নয়ন নিয়ে মোদীর তো বলার কিছুই নেই। হিন্দুত্ব করতে গিয়েও থমকাচ্ছেন, কারণ তিন তালাকের ইস্যু তুলে মুসলিম ভোটও কিছুটা পেতে চাইছেন। পটেল ভোট রাখতে মাঝপথে কোনও পটেলকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণার কথাও ভাবছেন। নিজের গড়েই হিমশিম খাচ্ছেন মোদী। তাই প্রতি পদে ফুটে বেরোচ্ছে হতাশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy