Advertisement
E-Paper

রাজনকে সরান, মোদীকে চিঠি স্বামীর

অরুণ জেটলির পরামর্শ উপেক্ষা করেই ফের বিস্ফোরক হলেন বিজেপির নতুন সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজনের অপসারণ দাবি করলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০৩:০১

অরুণ জেটলির পরামর্শ উপেক্ষা করেই ফের বিস্ফোরক হলেন বিজেপির নতুন সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজনের অপসারণ দাবি করলেন। স্বামীর যুক্তি, মানসিক ভাবে রঘুরাম পুরোপুরি ভারতীয় নন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হয়েও তিনি আমেরিকার ‘গ্রিন কার্ড’ রেখেছেন। সেই কার্ড জিইয়ে রাখতে ফি-বছর তিনি আমেরিকা যান। ওই পদের জন্য যেখানে জাতীয়তাবাদী

অনেক বিশেষজ্ঞকেই পাওয়া সম্ভব, সেখানে ইউপিএ আমলে নিয়োগ করা রাজনকে রেখে দেওয়ার কী অর্থ? এখনই তাঁকে অপসারণ করা উচিত।

অরুণ জেটলিকে সরিয়ে তিনি যে অর্থমন্ত্রী হতে চান, ক’দিন আগেই সেই সাধ প্রকাশ্যে জানিয়ে মোদীর অস্বস্তি বাড়িয়েছেন স্বামী। রাজনের বিরুদ্ধে তাঁর এই বিস্ফোরণও যে আসলে সেই বাসনা পূরণেরই লক্ষ্যে, সেটা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না বিজেপি নেতাদের।

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে জেটলির পরামর্শ উপেক্ষা করে যে ভাবে স্বামী ফের রাজনকে নিয়ে তোপ দাগলেন, সেটিকে বিরোধীরাও ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখছেন। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ তো আজ বলেই ফেলেন, ‘‘সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অহেতুক এক জন অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ছায়াযুদ্ধ করছেন।
জেটলিকে সরিয়ে অর্থমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তাঁর সরাসরি লড়াই করা উচিত।’’

দিন কয়েক আগেই সনিয়া গাঁধীর থেকে বন্দুকের নলটি নিজের সরকারের দিকে ঘুরিয়ে স্বামী রাজনকে শিকাগোতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। জেটলি কাল তার জবাবে সংযত হওয়ারই পরামর্শ দেন বিজেপির এই নব্য সাংসদকে। বলেন, ব্যক্তি আক্রমণ না করে বিষয়ভিত্তিক সমালোচনা করাটাই ভাল। আর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে সরকারের ‘পরিণত’ সম্পর্ক রয়েছে। নিরন্তর আলোচনা ও মতের আদান-প্রদান হয়। কিন্তু জেটলির সেই পরামর্শকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে গত কালই প্রধানমন্ত্রীকে ওই চিঠি লেখেন স্বামী।

রাজনকে সরানোর দাবির পিছনে স্বামীর যুক্তিগুলি হল:
• রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বর্তমান গভর্নর মানসিক ভাবে ভারতীয় নন। যে কারণেই তিনি তাঁর মার্কিন নাগরিকত্ব জিইয়ে রেখেছেন।
• মূল্যবৃদ্ধিকে বেঁধে রাখার নামে তিনি সুদের হার বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতির লোকসান করেছেন। l পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হারকে খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হারে রূপান্তরিত করেছেন। এতে ভাল হওয়ার বদলে ক্ষতি হয়েছে অর্থনীতির। l বেকারি বাড়িয়েছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ আরও বাড়িয়ে তুলেছেন।
• সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল, ভারতের অর্থনীতির উন্নতির বদলে আসলে তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে এর ব্যাঘাত ঘটানোর কাজ করে যাচ্ছেন।

রাজ্যসভার সাংসদ হয়েই স্বামী যখন কপ্টার-ঘুষ কাণ্ড নিয়ে নিত্যদিন সনিয়া গাঁধীকে আক্রমণ করতেন, দলের অনেক নেতাই প্রকাশ্যে অন্তত তাঁকে সমর্থন করতেন তখন। কিন্তু ক’দিন পরই তাঁর আক্রমণের মুখ ঘুরে গিয়েছে সরকারের দিকে। বিজেপি এখন তাঁর সম্পর্কে নীরব থাকাই শ্রেয় মনে করছে। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, স্বামী এই বিষয়গুলি নিয়ে যে ভাবে হইচই করছেন, প্রধানমন্ত্রীরও তা ভাল লাগার কথা নয়। এক সময় সঙ্ঘের চাপে স্বামীকে মন্ত্রী করেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। তখনও বাজপেয়ীর সঙ্গে তাঁর অহিনকুল সম্পর্ক ছিল। মোদী জমানায় স্বামীর ভূমিকা কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই চিন্তায় রেখেছে তাঁর দলকেও।

Subramanian Swamy Raghuram Rajan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy