Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

৬৬ হাজার টাকা চিবিয়ে খেয়ে ফেলল পোষা ছাগল!

ব্যাকরণ শিং-এর দেওয়া ছাগলের খাদ্য এবং অখাদ্যের তালিকা থেকে তার আঁচ মিললেও, স্পষ্ট করে কিছু ছিল না। এত দিনে তা পরিষ্কার করে দিল সেই ব্যাকরণ শিং-এরই এক উত্তরপুরুষ, উত্তরপ্রদেশের সর্বেশকুমার পালের পোষা ছাগল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ১২:২৭
Share: Save:

ছাগলে টিকটিকি খেয়েছে শুনে বেজায় চটেছিল শ্রীব্যাকরণ শিং। ছাগলে কী কী না-খায়, তা নিয়ে যে নাতিদীর্ঘ বক্তৃতাটি সে দিয়েছিল, বাংলা সাহিত্যে তা চির অমর। কিন্তু ছাগলে কি টাকাকড়ি খায়? ব্যাকরণ শিং-এর দেওয়া ছাগলের খাদ্য এবং অখাদ্যের তালিকা থেকে তার আঁচ মিললেও, স্পষ্ট করে কিছু ছিল না। এত দিনে তা পরিষ্কার করে দিল সেই ব্যাকরণ শিং-এরই এক উত্তরপুরুষ, উত্তরপ্রদেশের সর্বেশকুমার পালের পোষা ছাগল। সর্বেশের সাধের পুষ্যি চিবিয়ে খেয়ে ফেলল তাঁর ৬৬ হাজার টাকার নোট!

ঘটনাটা গত সোমবারের। কনৌজ জেলার সিলুয়াপুর গ্রামে সর্বেশের বাড়ি। চাষবাস করে দিন কাটে। বাড়ি সারানোর জন্য ইট কিনতে হবে বলে ৬৬ হাজার টাকা ঘরে এনে রেখেছিলেন। ট্রাউজারের পকেটে রেখে নিশ্চিন্তে স্নানে গিয়েছিলেন তিনি। স্নান সেরে ফিরে এসে যা দেখলেন তাতে তাঁর হাত পা ছড়িয়ে কাঁদার মতো হাল। সাধের পুষ্যিটি নিবিষ্ট মনে, মনের সুখে ওই নোটের বান্ডিল খেয়ে চলেছে চিবিয়ে চিবিয়ে। রে-রে করে ওঠেন সর্বেশ। ছুটে গিয়ে ছাগলের মুখ থেকে ওই নোট টেনে বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে প্রায় সব নোট ছাগুলে দাঁতে কুটিকুটি হয়ে চলে গিয়েছে পেটে। টানাটানিতে দু’টো দু’হাজার টাকার নোট বাঁচাতে পেরেছেন তিনি। তবে সেগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। ছাগলের থুথুমাখা, দুর্দশাগ্রস্ত সেই নোট দু’টোও আদৌ কাজে আসবে কি না তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ রয়েছে সর্বেশের।

আরও পড়ুন

কুড়ি দিনের দাম্পত্য, বিবাহ বিচ্ছেদ পেতে লাগল ২০ বছর!

ভাবছেন এর পর কী হল? টাকার শোকে ক্রুদ্ধ হয়ে ‘অপরাধী’ ছাগলকে কী শাস্তি দিলেন সর্বেশ? একেবারেই ও সব কিছু নয়। বরং বিলকুল মাফ করে দিয়েছেন প্রিয় ছাগলকে। মজা করেই বললেন, “সব ধরনের কাগজ খাওয়ায় সুনাম আছে ওর। সুযোগ পেয়েই তাই নিজের প্রিয় খাবার চিবোতে লেগেছিল। তবে কী আর করা যাবে, ছাগলটা তো আমার সন্তানেরই মতো!”

তবে সর্বেশের ছাগলের এই ছাগলামিতে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছে তাঁর বাড়িতে। অনেকে তো আবার ছাগলের সঙ্গে সেলফি-ও তুলতে শুরু করেছেন। অনেকে ছাগলটিকে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। যদি ওষুধ খাইয়ে নোটগুলো বের করিয়ে নেওয়া যায়! কেউ কেউ মজা করে বলছেন, “ছাগলটাকে পুলিশের কাছে নিয়ে যাওয়া হোক। যতই হোক এটা তো একটা গুরুতর অপরাধ!” পাড়া-প্রতিবেশীদের এ সব ঠাট্টা-মস্করা হেসেই উপভোগ করছেন পাল দম্পতি। সর্বেশ আর তাঁর স্ত্রী দু’জনেরই এক সুর, “পোষা ছাগলের উপর তো আর নিষ্ঠুর হতে পারি না। সে তো আমাদের পরিবারেরই একজন। আমাদেরই বরং সতর্ক হওয়া উচিত্ ছিল।”

আর যাকে নিয়ে এত কাণ্ড, সে কি মনে মনে ব্যাকরণ শিং-এর মতো কোনও বক্তৃতা আওড়াচ্ছে? সে কথা জানতে আর একজন সুকুমার রায়ের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE