Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিরোধ পথে, অন্দরে অভিনন্দন

রামলীলা ময়দান থেকে সংসদ পর্যন্ত গলা ফাটিয়ে মোদী সরকারের বিরোধিতা হল। তার পরেই অরুণ জেটলির কাছে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ‘ধন্য-ধন্য’ করল আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন।

বিএমস সদস্যদের একটি জমায়েত-ফাইল চিত্র

বিএমস সদস্যদের একটি জমায়েত-ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২২
Share: Save:

রামলীলা ময়দান থেকে সংসদ পর্যন্ত গলা ফাটিয়ে মোদী সরকারের বিরোধিতা হল। তার পরেই অরুণ জেটলির কাছে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ‘ধন্য-ধন্য’ করল আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন।

গত সপ্তাহেই বাকি সব শ্রমিক সংগঠন দিল্লিতে তিন দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তাতে যোগ না দিয়ে আজ আলাদা করে প্রতিবাদ মিছিল করল সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস। দাবিদাওয়া সেই একই— এক কাজে এক ভাতা, চুক্তিতে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ, একশো দিনের কাজের দিন বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা, সপ্তম বেতন কমিশনের নিরিখে ন্যূনতম বেতন, শ্রম সংস্কারের নামে শ্রমিকদের উপর আঘাত বন্ধ করা ইত্যাদি। বিএমএসের সভাপতি সাজি নারায়ণ বলেন, ‘‘সরকার পথভ্রষ্ট সংস্কার করছে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লোকের চাপে সরকার আলোচনায় রাজি হয়েছে।’’

এই প্রতিবাদ কর্মসূচির পরেই অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে দেখা করে বিএমএসের এক প্রতিনিধি দল। সেখানে ছিলেন পীযূষ গয়াল-সহ আরও কয়েক জন মন্ত্রী। বৈঠকের পরে সাজি নারায়ণ জানান, তাঁদের দাবিগুলি নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী জেটলি। বিএমএস নেতা হয়তো ভুল বলেননি। কিন্তু কিছু পরেই বৈঠকে বিএমএস নেতাদের অন্য ভূমিকা সামনে এনে ফেলেন মন্ত্রী গয়াল। সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘বৈঠক শুরুই হয় মুডি’জ রিপোর্ট নিয়ে। বিএমএসের প্রতিনিধিরা সেখানে অর্থমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে উন্নয়নশীল পদক্ষেপের জন্য ধন্যবাদ জানান। শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বে যে ভাবে মোদীর তারিফ হচ্ছে, তা নিয়ে অভিনন্দনও জানান তাঁরা। মোদী সরকার শ্রমিকদের জন্য যে সব পদক্ষেপ করেছে, তার প্রশংসাও করেন।’’ এর পরে গয়ালের বক্তব্য, ‘‘শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বিএমএস। সৌহার্দ্যের পরিবেশে আলোচনার পরে তারা কিছু দাবিও জানিয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে।’’

আজ সকালেই মুডি’জ রিপোর্ট নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করার সময়ে বিএমএসের প্রতিবাদ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় জেটলিকে। তখনই তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওঁরা স্মারকপত্র দিতে এলে মুডিজ’-এর রিপোর্ট তুলে দেব হাতে।’’ প্রসঙ্গত, এই মুডিজ’-এর রিপোর্টেই রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে বকেয়া শ্রম সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। প্রকাশ্যে যার বিরোধিতাই করছে বিএমএস।

বাইরে ‘বিরোধ’ আর ভিতরে ‘অভিনন্দন’— রীতিমতো বেমানান বলে মনে করছেন বিরোধীরা। গোটা ঘটনার মধ্যে আরএসএস-বিজেপির সমন্বয়েরই গন্ধ পাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, এটা আসলে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে মোদী-বিরোধিতার হাওয়া কেড়ে নেওয়ার কৌশল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE