Advertisement
E-Paper

বাস কন্ডাক্টরকে জামিন নয়, রায়ানে রহস্যই

মামলাটি সংবেদনশীল হওয়ায় প্রকৃত চিত্রটি বুঝতে এ বার প্রদ্যুম্ন ঠাকুর হত্যার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করেছে আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৪
প্রদ্যুম্ন ঠাকুর।

প্রদ্যুম্ন ঠাকুর।

জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে গুরুগ্রামের রায়ান স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া প্রদ্যুম্ন হত্যার তদন্ত।

যে কারণে ওই হত্যাকাণ্ডে গুরুগ্রাম পুলিশের হাতে ধৃত স্কুলের বাস কন্ডাক্টর অশোক কুমার আজ জামিনের আবেদন করেও শেষমেশ পেলেন না। সিবিআই প্রথমে নির্দোষ বলে অশোককে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেও, আজ অবস্থান পাল্টে তারাই আদালতকে জানিয়েছে, ফরেন্সিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সিবিআইয়ের পক্ষে কাউকে ক্লিনচিট দেওয়া সম্ভব নয়। এর ফলে ওই কন্ডাক্টরের জামিনের বিষয়টি আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে গিয়েছে। মামলাটি সংবেদনশীল হওয়ায় প্রকৃত চিত্রটি বুঝতে এ বার প্রদ্যুম্ন ঠাকুর হত্যার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করেছে আদালত।

গত ৮ সেপ্টেম্বর গুরুগ্রামের রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শৌচাগারে গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া যায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র প্রদ্যুম্নকে। ওই ঘটনায় প্রথমে স্কুলের বাস কন্ডাক্টর অশোক কুমারকে গ্রেফতার করে গুরুগ্রাম পুলিশ। পরে সিবিআই ওই তদন্তের ভার নিলে গ্রেফতার হয় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। সিবিআইয়ের দাবি, পরীক্ষা বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে। অন্য দিকে ধৃত অশোক কুমারকে কার্যত ক্লিনচিট দেয় সিবিআই।

সব মিলে রায়ান স্কুলের হত্যাকাণ্ড ঘিরে সিবিআই ও গুরুগ্রাম পুলিশের মতপার্থক্য ক্রমশ চওড়া হতে শুরু করেছে। প্রথমত হত্যাকারী কে তা নিয়ে দু’শিবিরের মতপার্থক্য তৈরি হয়। গুরুগ্রাম পুলিশ যাকে হত্যাকারী হিসাবে গ্রেফতার করেছিল, সেই কন্ডাক্টর অশোক কুমারের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত হত্যার কোনও প্রমাণ পায়নি সিবিআই। উল্টে আজ সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, অশোক যাতে খুনের কথা স্বীকার করে নেয়, তার জন্য তাকে মারধর করেছিল গুরুগ্রাম পুলিশ। মারের জেরেই অশোক শিশুটিকে হত্যা করেছে বলে কবুল করে। সিবিআই ওই কথা আদালতকে জানানোয় স্বভাবতই অখুশি গুরুগ্রাম পুলিশ। তাদের অস্বস্তি বাড়িয়ে আজ সিবিআই ইঙ্গিত দিয়েছে যে, পরিকল্পিত ভাবে ওই হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টায় ছিল গুরুগ্রাম পুলিশের একাংশ। এর পিছনে কারও হাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিবিআই। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার বিষয়েও ভাবছে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

সিবিআইয়ের কাছে মুখ পোড়ার পরে কেন তদন্তে ভুল হল তা নিয়ে সমীক্ষা বৈঠকে বসেন গুরুগ্রামের পুলিশ কমিশনার সন্দীপ খিরওয়ার। বৈঠকে তদন্তকারী দল স্বীকার করে নেয়, সব দিক বিচার না করে তড়িঘড়ি অশোককে খুনি হিসাবে দেখানো তাদের ভুল হয়েছিল।
সূত্রের খবর, যে শৌচাগারে ওই হত্যাকাণ্ড হয়েছিল সেখানে লাগানো ক্যামেরার সিসিটিভি ফুটেজের একেবারে শুরুতে ঘটনার দিন অভিযুক্ত একাদশ শ্রেণির ছাত্রকে প্রদ্যুম্নকে ইশারা করে ডাকতে দেখা যায়। তার সামান্য কিছু পরেই গলা কাটা অবস্থায় প্রদ্যুম্নকে উদ্ধার করা হয়। ফুটেজ শুরু হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ওই সাত সেকেন্ড কেন ভাল করে দেখা হয়নি, তা নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠেছে। যে অফিসারের উপরে ওই ফুটেজ দেখার দায়িত্ব ছিল, তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

অশোকের পরিবারের অভিযোগ, একাদশ শ্রেণির ছাত্রের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় পরিকল্পিত ভাবে অশোককে ফাঁসানোর চেষ্টা করে গুরুগ্রাম পুলিশ। সিবিআই জানিয়েছে, প্রদ্যুম্ন ও অভিযুক্ত একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রটি একসঙ্গে পিয়ানো শিখত। তাই একে অপরের পরিচিত ছিল। তদন্তে কেন ওই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়নি, তা নিয়েও এখন প্রশ্নের মুখে গুরুগ্রাম পুলিশ।

Prodyumna Thakur Haryana Murder case CBI Ryan School International প্রদ্যুম্ন ঠাকুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy