Advertisement
E-Paper

ট্রাম্পের ভিসা নীতিই ভাবনা

আমেরিকা পাকিস্তানকে সাহায্য বন্ধের ঘোষণার পর গত কালই প্রথম মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশসচিব। কেনেথ আলোচনা করেন তাঁদের সাম্প্রতিক পাক-পদক্ষেপ নিয়ে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে উল্টে নিজেদের উদ্বেগ তুলে ধরেন জয়শঙ্কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৪
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

দেরিতে হলেও পাকিস্তানকে শিক্ষা দিচ্ছেন খুব ভাল কথা। কিন্তু ভারতীয় পেশাদার এবং ছাত্রছাত্রীদের যে ঘোর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প– তার কী হবে? নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টারের কাছে ভারতের এই উদ্বেগের কথা জানালেন বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর।

আমেরিকা পাকিস্তানকে সাহায্য বন্ধের ঘোষণার পর গত কালই প্রথম মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশসচিব। কেনেথ আলোচনা করেন তাঁদের সাম্প্রতিক পাক-পদক্ষেপ নিয়ে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে উল্টে নিজেদের উদ্বেগ তুলে ধরেন জয়শঙ্কর।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আমেরিকা নয়া পাক-নীতি ঘোষণা করার পর ভারত কোনও শব্দ উচ্চারণ করেনি। ঘরোয়া ভাবে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্তে এখনই ভারতের উদ্বাহু হওয়ার কিছু নেই। কেনেথকেও নয়াদিল্লি জানিয়েছে, ইসলামাবাদ সম্পর্কে হোয়াইট হাউস কোন পথে এগোতে চায়, সেটা একান্তই তাদের ব্যাপার। যদিও শুধু ভারতই নয়, গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপরে তার প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু ভারত-নীতির প্রশ্নে ওয়াশিংটন যে কট্টর নীতি নিয়ে চলছে তা লঘু করা দূরস্থান, ক্রমশই সাঁড়াশির মতো তা চেপে বসছে ভারতীয় পেশাদারদের উপরে। অথচ ভারতীয় পেশাদার সংস্থাগুলি থেকেই মার্কিন অর্থনীতির ৬০ শতাংশ লাভ আসে।

ট্রাম্পের ‘মার্কিন পণ্য কেনো, মার্কিন নাগরিকদের নিয়োগ করো’ নীতির ফলে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তা নিয়ে মোদী সরকার এবং বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি ধারাবাহিক ভাবেই স্বর তুলছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের বার্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সেখানেও তিনি বলেন, ‘‘এইচ১বি ভিসা নিয়ে যে ভারতীয়েরা আমেরিকায় যান, তাঁরা মোটেই অনুপ্রবেশকারী নন, বরং দেশের সেরা তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। এঁদের মার্কিন অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’’

এত দিন ভারত থেকে অনেক কম খরচে পেশাদারদের আমেরিকা নিয়ে গিয়ে কাজ করাতো ভারতের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরেই ট্রাম্প বুঝিয়ে দেন, আমেরিকার নাগরিকদের জন্য চাকরির সুযোগ কমানো যাবে না। অভিযোগ উঠেছে, মার্কিন কর্মচারীদের নিয়োগ করার জন্য ইনফোসিস-সহ বিভিন্ন ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার উপরে নানা ভাবে চাপ আসছে।

এই জ্বলন্ত সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি, পাক-সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গটি নিয়েও অবশ্য মূল্যায়ন করছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তার মতে, ‘‘আজ না হোক কাল পাকিস্তানকে দরকার পড়বেই আমেরিকার। ভৌগোলিক কারণেই আফগানিস্তানে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই ইসলামাবাদকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। এটাও তো হতে পারে পাকিস্তানের সঙ্গে দরকষাকষি করার জন্য তাদের উপরে এই চাপ তৈরি করা হচ্ছে।’’ নয়াদিল্লি এটাও জানে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এখন আর আগের মতো আমেরিকা-নির্ভরতা নেই পাকিস্তানের। চিন দু’হাত উপুড় করে দিচ্ছে পাকিস্তানকে। সুতরাং চিন-পাক অক্ষকে চাপে ফেলতেই হোক অথবা নিজেদের শর্তে ইসলামাবাদকে চালাতেই হোক— ট্রাম্পের এই নতুন পদক্ষেপে ভারতের প্রত্যক্ষ এবং আশু কোনও লাভক্ষতির অঙ্ক নেই। তাই এ দিকে নজর না সরিয়ে পাখির চোখ হিসেবে দেখা হচ্ছে এইচ১বি ভিসার বিষয়টি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প Donald Trump Kenneth Juster US ambassador to India Visa Policy Subrahmanyam Jaishankar এস জয়শঙ্কর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy