ধৃত: সেই পিওন। ছবি: পিটিআই।
ফের স্কুল চত্বরে যৌন নির্যাতনের শিকার এক খুদে। এ বার পূর্ব দিল্লির একটি স্কুলে ফাঁকা ক্লাসঘরে পাঁচ বছরের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল স্কুলেরই পিওনের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রীর দেওয়া বর্ণনার ভিত্তিতে কাল রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে বিকাশ কুমারকে। যদিও অভিযোগ স্বীকার করেনি সে। এই ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল।
গুরুগ্রামের রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে সাত বছরের প্রদ্যুম্ন ঠাকুরের যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনার ক্ষত এখনও দগদগে। তারই মধ্যে শনিবার পূর্ব দিল্লির শাহদারার টেগোর পাবলিক স্কুলের এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে খুদে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত কাল বেলা ১২টা নাগাদ স্কুলের কয়েক জন শিক্ষিকাকে খাবার দিতে এসেছিল বছর চল্লিশের বিকাশ। তখনই শৌচাগারে যাচ্ছিল ওই ছাত্রী। সেই সময় তাকে লজেন্সের লোভ দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে সে। অভিযোগ, ওই ছাত্রী চেঁচামেচি করলে বিকাশ তার মুখ চেপে ধরে শাসাতে থাকে। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নুপুর প্রসাদ জানিয়েছেন, বাড়ি ফিরে তলপেটে যন্ত্রণা শুরু হয় শিশুটির। গোপন অঙ্গ থেকে রক্তপাত হতে দেখেন মা। মেয়ের থেকে সব কথা জেনে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রীর পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, কাউন্সেলিংয়ের সময়ে শিশুটি অভিযুক্তের বর্ণনা দেয়। এ ও জানায়, তার মাথায় টুপি ছিল। তার ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় স্কুলের পিওন বিকাশ কুমারকে। বছর চল্লিশের বিকাশ গত তিন বছর ধরে ওই স্কুলে কাজ করে। আগেও এখানে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করত সে। মাঝেমধ্যে বাড়ি থেকে নিয়ে আসে পড়ুয়াদের। ফলে স্কুলের ভিতরে অবাধ যাতায়াত ছিল তার। পুলিশ মনে করছে, মদ্যপ অবস্থায় ধর্ষণ করে বিকাশ। যদিও সেই অভিযোগ মানতে চায়নি সে। তার বক্তব্য, ‘‘স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেই ফুটেজ পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে আমি ধর্ষণ করিনি।’’ আর মদ্যপানের অভিযোগ? অভিযুক্তের জবাব, ‘‘রোজই একটু-আধটু নেশা করি। তাতে কী হয়েছে?’’
আরও পড়ুন: সর্বসমক্ষে আইনি কাগজে সই করে স্বামীকে ডিভোর্স
কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। তাঁর টুইট, ‘‘লজ্জাজনক ঘটনা। কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশ তার কাজ করছে। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত হবে।’’ পড়ুয়াদের নিরাপত্তা বাড়াতে শহরের বাকি স্কুলগুলিতেও নয়া প্রোটোকল চালু করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিন দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়বে বলে জানিয়েছেন দিল্লির শুল্কমন্ত্রী কৈলাশ গাহলোত।
টেগোর পাবলিক স্কুলের কাছ থেকে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠিয়েছে দিল্লির মহিলা কমিশন। আগামী তিন দিনের মধ্যে এই বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিবাল। যদিও এই ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, ‘‘২৪ ঘণ্টা কাটলেও কোনও তদন্ত হয়নি। আজ আমার মেয়ের সঙ্গে এ রকম হয়েছে। কাল অন্য কোনও বাচ্চার সঙ্গে হতে পারে। আমারা চাই স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy