Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কপালে ভাঁজ! নৌবাহিনীর গুরুতর গোপন তথ্য ফাঁস

নৌবাহিনীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক নথি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। ‘স্করপিন’ মডেলের অত্যাধুনিক সাবমেরিনের কর্মপদ্ধতি সংক্রান্ত ওই নথির প্রায় ২২ হাজার পাতা অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে।

এই সেই ‘স্করপিন’ মডেলের অত্যাধুনিক সাবমেরিন। ছবি: রয়টার্স

এই সেই ‘স্করপিন’ মডেলের অত্যাধুনিক সাবমেরিন। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ১২:১৫
Share: Save:

নৌবাহিনীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক নথি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। ‘স্করপেন’ মডেলের অত্যাধুনিক সাবমেরিনের কর্মপদ্ধতি সংক্রান্ত ওই নথির প্রায় ২২ হাজার পাতা অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে। সত্যিই যে ওই নথি ফাঁস হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। হ্যাকারদের কবলে পড়েই যে ঘটনাটি ঘটেছে, তাও জানিয়েছেন তিনি।

ফরাসি অস্ত্র নির্মাণ সংস্থা ডিসিএনএস-এর সঙ্গে গত বছর ভারতের প্রায় ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী ছ’টি সাবমেরিন তৈরি হচ্ছে মুম্বইয়ের মাজাগাঁও বন্দরে। ফরাসি প্রকৌশলে বানানো ‘স্করপেন’ মডেলের ওই সাবমেরিনগুলির ৩০ শতাংশ যন্ত্রাংশ তৈরি হয়েছে ভারতে। বাকি যন্ত্রাংশ আনা হয়েছে ডিসিএনএস-এর কাছ থেকে। গুরুত্বপূর্ণ সেই সাবমেরিনের কর্মপদ্ধতি সংক্রান্ত নথি ফাঁস হওয়া প্রসঙ্গে বুধবার পর্রীকর বলেন, ‘‘রাত ১২টা নাগাদ আমার কাছে খবর আসে ওই নথি ফাঁস হয়েছে। বুঝতে পারছি এটা হ্যাকিং-এর ঘটনা। ঠিক কী হয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’’

নৌবাহিনীর এক কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা নিশ্চিত ওই হ্যাকিং ভারতের বাইরেই হয়েছে। তবে এর ফলে খুব একটা ক্ষতি হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমনকী, অস্ট্রেলিয়ার ওই সংবাদপত্র কর্মপদ্ধতি সংক্রান্ত যে ব্যাখ্যা করেছে সেটাও ঠিক নয় বলে তাঁর দাবি। ওই সংবাদপত্রের দাবি, পাঁচ বছর আগে ২০১১ সালে ফ্রান্সে ওই নথি ফাঁস হয়েছে। তবে যৌথ উদ্যোগের এই তথ্য ভারত না কি ফ্রান্স থেকে ফাঁস হয়েছিল, সে বিষয়ে কিছুই জানায়নি তারা।

গত বছরের অক্টোবরেই ‘স্করপেন’ মডেলের প্রথম সাবমেরিন ‘আইএনএস কালভারি’কে জলে ভাসানো হয়। এক বছর ধরে তার কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা হয়। আগামী সেপ্টেম্বরেই ‘আইএনএস কালভারি’র ভারতীয় নৌবাহিনীতে নিয়ে আসার কথা। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাকি সব ক’টি সাবমেরিনই বানানো হয়ে যাবে বলে মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছিল। তার আগেই ওই সাবমেরিনের কর্মপদ্ধতি সংক্রান্ত নথি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

‘স্করপেন’ মডেলের সাবমেরিনগুলি অন্য সাবমেরিনের থেকে অনেকটাই আলাদা। যেমন ‘আইএনএস কালভারি’ ৬৭ মিটার লম্বা। তার ওজন দেড় হাজার টনেরও বেশি। চওড়া প্রায় সাড়ে ছয় মিটার। এটি এমন ভাবে বানানো হচ্ছে যাতে তা অনেক ক্ষণ জলের তলায় ডুবে থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, ‘স্করপেন’ থেকে অনায়াসে যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করার টর্পেডো এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া যাবে।

তথ্য ফাঁস যে ভারতের দিক থেকে হয়নি, তা অবশ্য ফরাসি সংস্থা ডিসিএনএস-এর বিবৃতিতে অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বুধবার ডিসিএনএস-এর এক মুখপাত্র আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সংস্থা বাণিজ্যিক শত্রুতার শিকার হয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেছেন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং আরও যে সব দেশ ডিসিএনএস-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বা যাদের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে সংস্থার কথা চলছে, তারা যাতে ডিসিএনএস-কে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে, তার জন্যই এই হ্যাকার হানা হয়ে থাকতে পারে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি মোটা অঙ্কের সামরিক বরাত পাওয়ার লড়াইতে ডিসিএনএস জার্মানির একটি সংস্থা এবং জাপানের একটি সংস্থাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ডিসিএনএস সরাসরি না বললেও, ঘুরিয়ে তাদের দিকেই আঙুল তুলতে চাইছে।

আরও পড়ুন: অরুণাচলে বিপুল সংখ্যায় ব্রহ্মস, তিব্বত-ইউনান নিয়ে ঘোর উদ্বেগে চিন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Scorpene Submarines Indian Navy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE