Advertisement
E-Paper

জল্পনার জালে কেবিন-বন্দি আম্মা

আম্মার রাজপাট ফের পনিরসেলভমের হাতে। কিন্তু কেন, সেই প্রশ্ন ঘিরেই এখন জল্পনা তুঙ্গে। দু’বছর আগের কথা। দুর্নীতির দায়ে জেলে যাওয়ার আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পদে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকেই বসিয়ে গিয়েছিলেন জয়ললিতা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২২

আম্মার রাজপাট ফের পনিরসেলভমের হাতে। কিন্তু কেন, সেই প্রশ্ন ঘিরেই এখন জল্পনা তুঙ্গে।

দু’বছর আগের কথা। দুর্নীতির দায়ে জেলে যাওয়ার আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পদে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকেই বসিয়ে গিয়েছিলেন জয়ললিতা। এখন আম্মা চিকিৎসাধীন। টানা ২১ দিন ভর্তি হাসপাতালে। মঙ্গলবার তাই মুখ্যমন্ত্রীর পোর্টফোলিও পনিরসেলভমকে হস্তান্তর করার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যপাল সি বিদ্যাসাগর রাও।

কিন্তু কার পরামর্শে? জয়া কি নিজেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নাকি তাঁর হয়ে অন্য কেউ ছড়ি ঘোরাচ্ছে তামিল রাজনীতিতে! প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির। রাজভবনের একটি সূত্রের দাবি, জয়ললিতার সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত। তিনি নিজেই সই করেছেন ফাইলে। কিন্তু জয়ললিতা কি আদৌ ততখানি সুস্থ? আজ এই প্রশ্নই তুলেছেন বিরোধী ডিএমকে প্রধান এম করুণানিধি। জল্পনার জবাব দিতে মাঠে নামতে হয়েছে আম্মার দলকেও। এডিএমকে মুখপাত্র আজ সংবাদমাধ্যমকে জানান, পোর্টফোলিও হস্তান্তরে সায় দিয়েছেন আম্মা নিজেই।

জয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা চলছে দিল্লির অলিন্দেও। সম্প্রতি জয়ললিতার খোঁজ নিতে হাসপাতালে এসেছিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী, করুণানিধি-পুত্র এম কে স্ট্যালিন এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়়ডু। আর আজ ঘুরে গেলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

কেবিনে আম্মা। আর হাসপাতালের বাইরে থিকথিক করছে জনতা। গোটা চত্বর ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সবার প্রশ্ন একটাই— কেমন আছেন মুখ্যমন্ত্রী? যার উত্তর নেই সোমবার সন্ধের পর থেকেই। শেষ মেডিক্যাল বুলেটিন পাওয়া গিয়েছিল প্রায় ৩৬ ঘণ্টা আগে। সেই সব বুলেটিন ঘিরেও ধোঁয়াশা বেড়েছে। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সেই সব বুলেটিনে যা বলা হয়েছে, তার থেকে না-বলাই বেশি। সম্প্রতি জয়ার চিকিৎসা করাতে লন্ডন থেকেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনা হয়েছিল। গত শুক্রবারই তিনি দেখে যান আম্মাকে। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও বদলায়নি বুলেটিনের বয়ান। সোমবার বলা হয়েছিল, ‘‘জয়ললিতাকে সব সময়ের জন্য বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কৃত্রিম ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।’’ তার বাইরে একটি কথাও না।

জল্পনা বাড়িয়েছে আজ সকালে হাসপাতালে অমিত শাহ ও অরুণ জেটলির হাজিরা। গেটের মুখে তাঁদের গাড়ি থামতেই তাই নড়ে ওঠে ভিড়। নিজে না এলেও ‘বন্ধু দল’ এডিএমকে নেত্রীর খোঁজ নিতে দুই বিশ্বস্ত সেনাপতিকে পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বার নিশ্চিত ‘আঁখো দেখা’ হাল জানা যাবে আম্মার। কিন্তু কোথায় কী! ওঁরা এলেন। প্রায় বিশ মিনিট কাটিয়ে গেলেন হাসপাতালে। কিন্তু ফিরে গেলেন মুখে কুলুপ এঁটেই।

পরে অবশ্য দু’জনেই টুইট করেন। অমিত লিখলেন, ‘‘জয়ললিতার খোঁজ নিতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ওঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’’ কিন্তু বিজেপি সভাপতিও স্পষ্ট বলেননি যে, তাঁর সঙ্গে জয়ললিতার দেখা হয়েছে। তা হলে কি করুণানিধির আশঙ্কাটাই ঠিক? সূত্রের খবর, জয়ার কেবিনের বাইরেই আর একটি কেবিন কব্জা করে বসে আছেন জয়া-ঘনিষ্ঠ শশীকলা। দলের একাংশ বলছে, মোদীর দুই সেনাপতিকেও শশীকলার সঙ্গে দেখা করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।

এই সব জল্পনা সামাল দিতে গিয়ে আজ সন্ধেয় আলাদা একটি বিবৃতি দিয়ে বিজেপি জানিয়েছে, তাদের দুই নেতাই হাসপাতালে গিয়ে জয়ললিতার সঙ্গে দেখা করেছেন। এডিএমকে যদিও বলছে, ‘‘সংক্রমণ এড়াতেই আম্মার কেবিনে কাউকেই ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে দুই তরুণকে গ্রেফতারও করেছে চেন্নাই পুলিশ। গুজব ঠেকাতে সাইবার-অপরাধ শাখার দশ জনকে নিয়ে একটি বিশেষ দল গড়েছে রাজ্য।

তবু কেবিন-বন্দি জয়াকে ঘিরে জল্পনা বাড়ছেই।

Jayalalithaa CM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy