Advertisement
E-Paper

গণতন্ত্রই গর্ব দলে, বোঝাচ্ছেন ইয়েচুরি

সব একই অভিযোগ ঘিরে। দলে গণতন্ত্র নেই। লম্বা পথ পেরিয়ে সীতারাম ইয়েচুরির লড়়াই শেষমেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারল, সিপিএমে গণতন্ত্র আছে। এ বারের পার্টি কংগ্রেস দেখে অন্তত এই প্রশ্নে একমত সিপিএম এবং তার বাইরের বাম নেতারাও।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩২

কত বহিষ্কার! কিছু বিচ্ছেদ! কত ক্ষোভ! কিছু দীর্ঘশ্বাস!

সব একই অভিযোগ ঘিরে। দলে গণতন্ত্র নেই। লম্বা পথ পেরিয়ে সীতারাম ইয়েচুরির লড়়াই শেষমেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারল, সিপিএমে গণতন্ত্র আছে। এ বারের পার্টি কংগ্রেস দেখে অন্তত এই প্রশ্নে একমত সিপিএম এবং তার বাইরের বাম নেতারাও।

সিপিএমের সংগঠনে বহু ব্যবহৃত নীতির নাম গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা। কিন্তু যুগে যুগে দলের নেতাদের অনেকে অভিযোগ করে এসেছেন, গণতন্ত্র নয়, বারবার বড়় হয়ে দাঁড়়িয়েছে কেন্দ্রিকতাই। যখন যে নেতার হাতে ক্ষমতা, তাঁর পক্ষে হাত তোলার লোক জুটে গিয়েছে। আর সংখ্যালঘু কণ্ঠকে স্তিমিত করে দেওয়া হয়েছে লৌহমুষ্টি প্রয়োগে। সে যুগে সৈফুদ্দিন চৌধুরী, পরে রাধিকারঞ্জন প্রামাণিক বা আরও পরে প্রসেনজিৎ বসুরা সেই গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতারই ‘শিকার’ বলে মনে করেন অনেকে। এই বাতাবরণেই বড়় রকমের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন ইয়েচুরি। সিপিএমের রাজনীতিতে তাঁর বৃহত্তম অবদান এটাই, এমনই আলোচনা শুরু হয়েছে হায়দরাবাদে।

সাধারণ সম্পাদক হয়েও ইয়েচুরির মত ছিল দলে সংখ্যালঘু। কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির ভোটাভুটিতে তাঁর প্রস্তাব পরাস্ত হয়েছিল। অন্য সময় হলে সেখানেই লড়়াই শেষ! কিন্তু ইয়েচুরি ছাড়়েননি। দলের গঠনতন্ত্রের সংস্থান মেনে নানা রাজ্য থেকে প্রায় আট হাজার সংশোধনী জমা হয়েছে খসড়়া দলিলের উপরে। সেই জোরে ইয়েচুরি সুযোগ পেয়েছেন সংখ্যালঘু প্রস্তাবকে বিস্তারিত ভাবেই পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার। হায়দরাবাদে প্রতিনিধিরা আবার জমা দিয়েছেন ৩৭৩টি সংশোধনী। প্রাক্-কংগ্রেস থেকে ২৮৬ এবং কংগ্রেস থেকে ৩৭টি সংশোধনী গৃহীত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রস্তাবের উপরে বিতর্ক শেষে স্বয়ং সাধারণ সম্পাদক চেয়েছেন, দরকারে ভোট হোক। যাঁরা গোপন ব্যালটের দাবি তুলেছেন, তাঁদেরও বাধা দেওয়া হয়নি লিখিত প্রস্তাব জমা দিতে। আবার পার্টি কংগ্রেসের আগে রাজ্যে রাজ্যে সম্মেলন থেকেও উঠে এসেছে সময়ের দাবি।

এই গোটা প্রক্রিয়ার শেষে ইয়েচুরির সংখ্যালঘু মতই হয়ে গিয়েছে দলের গৃহীত লাইন! যে প্রকাশ কারাট বলেছিলেন তাঁরাই সংখ্যাগরিষ্ঠের মত জানাচ্ছেন, তিনি কী বলছেন? কারাটের কথায়, ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠের মত ছিল। যেমন থাকে। কিন্তু দলে একটা মত গৃহীত হয়ে যাওয়ার পরে সেটাই সম্মিলিত মত হয়ে দাঁড়়ায়। এটাই অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র।’’ আর ইয়েচুরির মতে, ‘‘এই রকম বিতর্ক, এই রকম আলোচনা করে একটা মতে পৌঁছনো— এটাই তো গণতন্ত্র। আর কোনও দলে এই সুযোগ ছিল? সিপিএমের জন্য আমরা গর্বিত!’’

আরএসপি-র নেতা মনোজ ভট্টাচার্যও বলছেন, ‘‘সিপিএম এ বার অন্তত কোনও মতকে দমিয়ে দেয়নি। ভাল লাগছে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ওরা গোটা কাজটা করছে।’’ বাংলার বাম শিবির থেকেই সমালোচক কেউ কেউ অবশ্য তির্যক প্রশ্ন তুলছেন, দল ক্ষমতায় থাকলে গণতন্ত্র মনে থাকবে তো?

CPM Sitaram Yechury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy