Advertisement
E-Paper

কিমকে ঠেকাতে ভারতকে পাশে চাইছে সোল

অতীতে নয়াদিল্লিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন আজকের এই বিদেশমন্ত্রী। পঞ্চাশ সালে দুই কোরিয়ার যুদ্ধে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর স্মৃতিকে সম্মান দিতে তিনি আগরাতেও গিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এক সেনার বাড়িতে।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২

পারমাণবিক ‘খেলনা’ নিয়ে রণোন্মত্ত উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। তাঁকে রুখতে ভারতকে আরও বড় ভূমিকায় দেখতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া। আজ দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে এ কথা জানালেন সে দেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী চো হুন। তাঁর কথায়, “এই উপদ্বীপ অঞ্চলকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার প্রশ্নে ভারতের কাছে আমাদের প্রত্যাশা রয়েছে। নয়াদিল্লিকে এখনই এই নিয়ে চিঠি লেখা কিছুটা স্পর্শকাতর। অত্যন্ত গোপনে অথচ কার্যকর ভাবে এগোতে হবে। সুযোগ এলে ভারত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে এই অঞ্চলকে পরমাণু বোমামুক্ত করার কাজ শুরু হবে।”

আরও পড়ুন: চা বেচেছি দেশকে নয়, পাল্টা মোদী

অতীতে নয়াদিল্লিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন আজকের এই বিদেশমন্ত্রী। পঞ্চাশ সালে দুই কোরিয়ার যুদ্ধে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর স্মৃতিকে সম্মান দিতে তিনি আগরাতেও গিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এক সেনার বাড়িতে। আজ সে কথা স্মরণ করে হুন যেমন নয়াদিল্লিকে কাছে টানার চেষ্টা চালিয়েছেন, তেমনই নয়াদিল্লিকে আশ্বাসও দিয়েছেন পাক-প্রশ্নে। তাঁর কথায়, “পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়তে দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থাগুলিকে বরাত দেওয়া হচ্ছে। ওই বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বিরত করতে আমাদের সরকার যতটা সম্ভব চাপ দেবে।”

পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, “উত্তর কোরিয়া সরকারের সঙ্গে পাক পরমাণু বিজ্ঞানীর যোগাযোগের কথা সকলের জানা। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে প্রস্তাব নেওয়ার পরে ইসলামাবাদ জানিয়েছে যে তারা তা মেনে চলবে। আমরাও সেটা আশা করি।”

দক্ষিণ কোরিয়ার বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করাটাই এখন অগ্রাধিকার তাদের। ভারতের ভূমিকা এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এটা ঘটনা যে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাব মেনে সে দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক কিছুটা কাটছাঁট করেছে নয়াদিল্লি। যত বার বোমা ফাটিয়েছে উত্তর কোরিয়া, তত বারই ভর্ৎসনা করে বিবৃতিও দিয়েছে সাউথ ব্লক। তবে এটাও ঘটনা, কিমের দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক একেবারে বন্ধ করেনি ভারত।

শুধু তা-ই নয়। এখনও ভারতের দূতাবাস রয়েছে উত্তর কোরিয়ায়। আমেরিকা বারবার বলা সত্ত্বেও সেই দূতাবাস বন্ধ করেনি নয়াদিল্লি। কারণ হিসেবে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আমেরিকাকে বুঝিয়েছেন, বন্ধুভাবাপন্ন নয়, এমন দেশে আমাদের একটা অফিস থাকা ভাল। তা হলে আঁচ করা যাবে ওদের মতিগতি কী। এই যুক্তিকে ভাল ভাবে নেয়নি দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাদের কৌশলগত মিত্র আমেরিকা।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্কের যে যথেষ্ট কারণ রয়েছে, সেটা বুঝতে পারছে নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে ভারতের চিন্তার একটি কারণ যদি হয় চিন, তবে অন্যটি পাকিস্তান। চিনের সক্রিয় সহায়তা ছাড়া কিমের এই বাড়বাড়ন্ত সম্ভব ছিল না। পাকিস্তানও সক্রিয় ভাবে জড়িয়ে রয়েছে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে। পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র-অক্ষও দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে সাউথ ব্লকের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আর একটু তৎপর হয়ে উত্তর কোরিয়াকে দুর্বল করার চেষ্টা অনেক আগেই শুরু করা উচিত ছিল সাউথ ব্লকের। শুধু মোদী সরকারই নয়, এর আগে মনমোহন সরকারও এই কাজে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। কারণ, কিম জং উনের এই বাড়বাড়ন্ত এক দিনে হয়নি। তিনি শুরুই করেছিলেন ছ বছর আগে তাঁর বাবা কিম জং ইল-এর মৃত্যুর পরে তাঁর অনুগতদের হত্যা করে!

Kim Jong-un Seoul North Korea উত্তর কোরিয়া কিম জং উন South Korea
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy