ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার বলেই রায় দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। সেই রায়ের প্রভাব এ বার গোমাংসে বিধিনিষেধ সংক্রান্ত মামলাতেও পড়বে বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
এমনটা যে হতে পারে, তার একটা ইঙ্গিত মিলেছিল বৃহস্পতিবারই। যে দিন ব্যক্তি পরিসরের অধিকার নিয়ে ওই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের ৯ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্ট সে দিন বলেছিল, ‘‘নিত্যনতুন মামলায় আরও বিস্তৃত হচ্ছে ব্যক্তি পরিসরের ক্ষেত্র। পশুহত্যা এবং খাদ্য নিয়ে নাগরিকদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কথাও তাই নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।’’ রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি জে চেলামেশ্বরম এমনকী এ-ও বলেন, ‘‘কে কী খাবে, পরবে— মনে হয় না রাষ্ট্র তা নিয়ে কিছু বলতে পারে।’’
আরও পড়ুন: মাংস-ব্যবসায়ী কুরেশি ধৃত
গত কাল সেই প্রেক্ষিতেই মহারাষ্ট্রে গোমাংসে বিধিনিষেধ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, এই ধরনের মামলার উপর ওই রায়ের প্রভাব কিছুটা হলেও প়ড়বে।
কী সেই মামলা? গত বছর মে মাসে ‘মহারাষ্ট্র অ্যানিম্যালস প্রিজারভেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ১৯৯৫’-এর ৫(ডি) ও ৯(বি) ধারাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে বাতিল করে দেয় বম্বে হাইকোর্ট। আদালত সাফ জানিয়ে দেয়— রাজ্যের বাইরে জবাই হওয়া মোষ বা গরুর মাংস মহারাষ্ট্রে কারও কাছে পাওয়া গেলে, তা কোনও ভাবেই ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য করা হবে না। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মহারাষ্ট্র সরকার।
কারও বাড়িতে গোমাংস রাখা আছে কি না, তার খোঁজ করতে গিয়ে অভিযুক্তের ব্যক্তি পরিসরের অধিকারে হাত না দেওয়ার কথা ২০১৫ সালেও মহারাষ্ট্র সরকারকে বলেছিল বম্বে হাইকোর্ট। সে বার সরকারি কৌঁসুলি পাল্টা যুক্তি দিয়েছিলেন— ব্যক্তি পরিসরের অধিকার তো নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতই নয়!
বছর দু’য়েকের মাথায় সেই ছবিটা বদলে যাওয়ায় মহারাষ্ট্র সরকার এ যাত্রায় বেশ বিপাকে বলেই মনে করছেন অনেকে। এই মুহূর্তে সরকারি নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে এই জাতীয় আরও কয়েকটি মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। যার সবেতেই ব্যক্তি পরিসরের রায় প্রভাব ফেলবে বলে জানান বিচারপতি এ কে সিকরি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy