Advertisement
E-Paper

স্ত্রী ব্যক্তিগত সম্পত্তি নন, হাদিয়াকে জানাল সুপ্রিম কোর্ট

হাদিয়াকে একাধিক প্রশ্ন করে শীর্ষ আদালতের ওই বেঞ্চ। তামিলনাড়ুর সালেমের কলেজে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে কোনও এক জনের নাম জানতে চান বিচারপতিরা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ১৩:২৬
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

স্বামীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নন স্ত্রী। পাশাপাশি তিনি তাঁর অভিভাবকও হতে পারেন না। ‘লভ জিহাদ’ মামলায় হাদিয়ার বক্তব্য শোনার সময় এমন প্রতিক্রিয়াই জানাল সুপ্রিম কোর্ট

সোমবার প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে হাদিয়ার সঙ্গে কথা বলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি খানউইলকর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ওই তিন সদস্যের বেঞ্চেই হাদিয়া মামলার শুনানি হয়েছে। গত কাল ওই মামলায় হাদিয়ার বক্তব্য জানতে চায় শীর্ষ আদালত। আদালতের ওই বেঞ্চকে তাঁর জীবনের স্বপ্ন, উচ্চাশা ও ভবিষ্যতের কথা জানান ২৫ বছরের হাদিয়া। তিনি জানিয়েছেন, ইসলাম ধর্মপালনের পাশাপাশি স্বামীর সঙ্গে বসবাসের জন্য তিনি ‘স্বাধীনতা’ চান। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি ভাল ভাবেই জানি, ঠিক কী করছি।’’

হাদিয়াকে একাধিক প্রশ্ন করে ওই বেঞ্চ। তামিলনাড়ুর সালেমের কলেজে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে কোনও এক জনের নাম জানতে চান বিচারপতিরা। তার উত্তরে হাদিয়া জানান, স্বামী শাফিন জাহান তাঁর অভিভাবক হতে পারেন এবং এই দায়িত্ব অন্য কেউ পালন করুন তা চান না তিনি। হাদিয়ার বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “স্বামী কখনই স্ত্রীর অভিভাবক নন। এবং স্ত্রী তাঁর ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে পারেন না। সমাজে তাঁর একটি নিজস্ব পরিচিতি রয়েছে। এমনকী, আমিও আমার স্ত্রীর অভিভাবক নই। দয়া করে এটা বোঝান ওঁকে।”

আরও পড়ুন

রঘুকে মারল কে? সোশ্যাল মিডিয়ায় এ প্রশ্ন ভাইরাল

পুলিশে চাকরি পেলেন অমিতাভ মালিকের স্ত্রী

পদ্মাবতী নিয়ে কী বললেন মানুষী?

গত ডিসেম্বরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন কেরলের বাসিন্দা অখিলা অশোকন। নিজের নাম পাল্টে রাখেন হাদিয়া। এর পর দক্ষিণ কেরলের কোল্লামের বাসিন্দা শাফিন জাহানকে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু, সে বিয়ে অস্বীকার করেন হাদিয়ার বাবা অশোকন। তা নিয়ে কেরালা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালতে অশোকনের দাবি ছিল, মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তকরণে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকী, জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-এ যোগ দিতে তাঁকে যুদ্ধবিদ্ধস্ত সিরিয়ায় পাঠানো হবে। চলতি বছরের মে মাসে ওই বিয়ে নাকচ করে দেয় কেরালা হাইকোর্ট। এর পরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন হাদিয়ার স্বামী। তার পর অগস্টে হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে হাদিয়ার বিয়ের ঘটনা আসলে ‘লভ জিহাদ’ কি না তা নিয়ে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ‘লভ জিহাদ’ বিতর্কে কেরল-সহ গোটা দেশেই আলোড়ন তোলে হাদিয়া মামলা।

শীর্ষ আদালতে হাদিয়ার বয়ান-সহ রিপোর্ট জমা দেয় এনআইএ। সেখানেও হাদিয়া বলেছেন, স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। মুসলিম হতে কেউ তাঁকে বাধ্য করেননি।

ওই মামলার শুনানির অঙ্গ হিসেবে হাদিয়ার মুখ থেকেই তাঁর বক্তব্য জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। গত কাল আধ ঘণ্টার প্রশ্নোত্তর পর্বে উপস্থিত ছিলেন হাদিয়ার আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং ইন্দিরা জয়সিংহ। এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে হাজির ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল মনিন্দর সিংহ। হাদিয়ার বাবা অশোকনের তরফে হাজির ছিলেন আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান এবং মাধবী দিওয়ান। কেরল সরকারের তরফে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ভি গিরি।

শীর্ষ আদালতকে হাদিয়া আরও জানিয়েছেন, নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান তিনি। তবে রাজ্য সরকারের টাকাতে নয়, স্বামীই তাঁর পড়াশোনার যাবতীয় খরচ বহন করবেন। হাদিয়া মতে সায় দিয়ে শীর্ষ আদালত তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকেও নজর দিতে বলেছে।

Hadiya Love Jihad Love Jihad Case Supreme Court হাদিয়া সুপ্রিম কোর্ট লভ জিহাদ লভ জিহাদ মামলা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy