Advertisement
E-Paper

রেহাই পেলেন না আডবাণী

বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। শুধু তিনিই নন, বাবরি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতী-সহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ বিজেপি নেতার বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:১৩

বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। শুধু তিনিই নন, বাবরি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতী-সহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ বিজেপি নেতার বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজস্থানের রাজ্যপাল পদে থাকায় আপাতত রেহাই পেয়েছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহ।

বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষ ও বিচারপতি রোহিনটন নরিম্যানের বেঞ্চের নির্দেশের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কোর কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আদালতের প্রতি অবমাননাকর কোনও মন্তব্য করা হবে না। কিন্তু আডবাণীর রামমন্দির আন্দোলনের মতাদর্শগত অবস্থানের পাশেই দাঁড়াবে দল।

বাবরি মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র নিয়ে রায়বরেলী ও লখনউতে আলাদা আলাদা মামলা চলছিল শীর্ষ কয়েক জন বিজেপি নেতা ও করসেবকদের বিরুদ্ধে। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট আডবাণীদের বিরুদ্ধে মামলা নাকচ করে দেয়। সিবিআই শীর্ষ আদালতে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানায়। ফলে সিবিআইয়ের অবস্থানটি কংগ্রেস জমানাতেই চূড়ান্ত হয়। মোদী জমানায় কোর্টের কাছে সিবিআই তার পুরনো আবেদন নাকচ করেনি। আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিজেপি নেতা ও করসেবকদের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি এক সঙ্গে লখনউয়ে হবে। আদালতের মতে, এই শুনানি শেষ হতে দু’বছর অর্থাৎ ২০১৯ পর্যন্ত সময় লাগবে।

বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, এই রায় মোদী-শাহের কাছে শাপে বর। প্রথমত, মামলা চললে আডবাণী অথবা জোশীকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করার প্রশ্ন থাকবে না। দ্বিতীয়ত, মোদী সিবিআই ও আদালতের কার্যকলাপে সরাসরি নাক গলাচ্ছেন না। কিন্তু এই শুনানি চলতে থাকলে বিজেপির কোনও রাজনৈতিক লোকসান নেই। বরং গোটা দেশ জুড়ে রামমন্দির নির্মাণের কর্মসূচি ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হবে। সুসংহত হবে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক।

আরও পড়ুন: বাবরি বিতর্কের সালতামামি

অরুণ জেটলির মতে, ১৯৯৩ সাল থেকে এই মামলা চলছে। তার কোনও পরিবর্তন হয়নি। আর চার্জশিটের জন্য উমা ভারতীকে ইস্তফা দিতে বলা হলে কংগ্রেসের বহু মন্ত্রীকে ইস্তফা দিতে হবে। বিজেপি নেতারা মনে করছেন, আডবাণী হাওয়ালার অভিযোগে ইস্তফা দিয়েছিলেন, কারণ সেটি দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। কিন্তু বাবরি মামলায় অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন। কারণ, বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক মতাদর্শের।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী অবশ্য আদালতের সিদ্ধান্ত শুনেই বলে দিয়েছিলেন, ‘‘আমি গর্বিত। রামমন্দিরের জন্য জেলে যেতে, ফাঁসিকাঠে যেতে রাজি আছি।’’ আজ রাতেই অযোধ্যা যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। কিন্তু কোর কমিটির বৈঠকের পরে অমিত শাহ আপাতত তাঁর অযোধ্যা যাত্রা মুলতুবি রাখার নির্দেশ দেন। বিনয় কাটিয়ার প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছিলেন বিষয়টি সিবিআইয়ের ষড়যন্ত্র। অমিত শাহ এই কট্টর নেতাদের বুঝিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশে সবে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। ধাপে ধাপে সুষ্ঠু কৌশল নিয়ে এগোতে হবে। লালু প্রসাদ অবশ্য বিতর্ক উস্কে দিয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘‘আডবাণীকে বলির পাঁঠা করা হল।’’ আডবাণী আজ খুব বিষণ্ণ। সারাদিন কার্যত একাই ছিলেন। সন্ধ্যায় এসেছিলেন আর এক দুঃখী, মুরলীমনোহর জোশী।

L. K. Advani Babri Masjid Supreme Court criminal conspiracy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy