Advertisement
E-Paper

কেন নীল তিমির গ্রাস এড়ানো যায় না, বললেন বেঁচে যাওয়া যুবক

হালে ওই মারণ খেলার ফাঁদে পড়া এক যুবকই কবুল করেছেন সে কথা। পুলিশকে জানিয়েছেন, কেন ওই মরণ ফাঁদের হাতছানি এড়ানো যায় না। কী ভাবে একটু একটু করে তলিয়ে যেতে হয় সেই ফাঁদে। আর আত্মঘাতী হতেই হয়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৭:৩১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ব্লু হোয়েল গেমটা আসলে একটা ভয়ঙ্কর মরণ ফাঁদ। ইচ্ছে থাকলেও যে ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসা যায় না।

হালে ওই মারণ খেলার ফাঁদে পড়া এক যুবকই কবুল করেছেন সে কথা। পুলিশকে জানিয়েছেন, কেন ওই মরণ ফাঁদের হাতছানি এড়ানো যায় না। কী ভাবে একটু একটু করে তলিয়ে যেতে হয় সেই ফাঁদে। আর আত্মঘাতী হতেই হয়।

সেই হাতছানিই প্রায় আত্মহত্যার পথে টেনে নিয়ে গিয়েছিল পুদুচেরির যুবক ২২ বছর বয়সী আলেকজান্ডারকে। কিন্তু শেষমেশ পুলিশ পুদুচেরির করাইকালে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়ায় আর আত্মঘাতী হতে পারেননি আলেকজান্ডার। মঙ্গলবার ভোরে পুলিশ যখন তাঁকে বাঁচায়, তখন আলেকজান্ডারের হাতে আঁকা ছিল নীল তিমি। এক পদস্থ পুলিশ কর্তার পাশে বসে আলেকজান্ডার বলেছেন, ‘‘এটা পুরোপুরি মরণ ফাঁদ। ওই গেমে ঢুকে পড়লেই ভয়ে কাঁপতে হবে। অ্যাডভেঞ্চার যাঁদের খুব ভাল লাগে, তাঁরাও ভয়ে কাঁপতে থাকবেন। আমি সবাইকে বলছি, বড়ই ভয়ঙ্কর গেম ব্লু হোয়েল। কেউ যেন ভুল করেও ওই মরণ ফাঁদে না পড়েন।’’

আরও পড়ুন- বান্ধবীকে ভয় দেখাতে কলকাতায় ‘নীল তিমি’!

আরও পড়ুন- জেলে বসেই ডেরা চালাবেন রাম রহিম

মাত্র সপ্তাহদু’য়েক আগে তাঁর পরিচিতদের খোলা হোয়াটস্‌অ্যাপের একটি গ্রুপ থেকেই ব্লু হোয়েল গেমের কথা জানতে পেরেছিলেন বলে পুলি‌শকে জানিয়েছেন আলেকজান্ডার। তার পর অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নেরাভির বাড়িতে ফিরেই ব্লু হোয়েল গেম নিয়ে মেতে ওঠেন আলেকজান্ডার। সেই নেশায় এতটাই মেতে উঠেছিলেন আলেকজান্ডার যে ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর আর চেন্নাইয়ে তাঁর কাজে ফিরে যাননি।

আলেকজান্ডারের কথায়, ‘‘এটা কোনও অ্যাপ নয়। নয় কোনও গেমও। এটা জাস্ট একটা লিঙ্ক। আর সেটা চালান এক জন অ্যাডমিন। ওই গেম খেলতে যিনিই ঢোকেন, তাঁকে কয়েকটি টাস্ক দেন অ্যাডমিন। প্রত্যেক দিন সেই টাস্কগুলো রাত ২টোর পর শেষ করতে হয়। ওই গেম খেলতে ঢোকার পর কয়েকটা দিন কাটে মোটামুটি স্বাভাবিক ভাবেই। তখন অ্যাডমিন সকলের ব্যক্তিগত পরিচিতি ও ফোটোগ্রাফ সংগ্রহ করতে শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন অ্যাডমিন।’’

তার পর কী হয়েছিল?

সেই গা ছমছমে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন আলেকজান্ডার। বলেছেন, ‘‘তার পরেই অ্যাডমিন আমাকে বললেন, গভীর রাতে কোনও একটি সমাধি ক্ষেত্রে ঘুরে আসতে। মোট ৫০টি ধাপের ওই গেমের সেটাই ফার্স্ট স্টেপ। সেটা শুনে আমি গভীর রাতে গিয়েছিলাম আক্কারাইভট্টমের একটি সমাধি ক্ষেত্রে। সেখানে গিয়ে একটি সেল্‌ফি তুলে সেটা অনলাইনে পোস্ট করি। প্রতি দিনই আমাকে একটা করে ভয়ের ফিল্ম দেখতে হয়েছে, একা একা। অ্যাডমিনের নির্দেশে। আমি কাউকে সে সব কথা বলতে পারতাম না। বাড়ির লোকজনকেও নয়। সব সময় নিজেকে একটা ঘরে আটকে রাখতাম। মনের ওপর ভয়ঙ্কর চাপ পড়ত। আমি বেশ কয়েক বার চেষ্টা করেছিলাম গেমটা থেকে বেরিয়ে আসতে। কিন্তু কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারিনি।’’

আলেকজান্ডার বেঁচে যেতে পেরেছেন মূলত তাঁর ভাই অজিতের সৌজন্যেই। অজিত কয়েক দিন ধরে তাঁর ভাই আলেকজান্ডারের আচার, আচরণ, চালচলনের ওপর লক্ষ্য রাখছিলেন। তিনিই ভাইয়ের এই মতিগতির বদলের খবর গোপনে দিয়েছিলেন পুলিশকে। সেই খবর পেয়ে ভোর ৪টা নাগাদ পুলিশ তাঁদের বাড়িতে চলে আসে। সেই সময় আলেকজান্ডারের হাতে ধরা ছিল একটা ছুরি। আলেকজান্ডার সেই ছুরিটা দিয়ে তাঁর হাতে নীল তিমির ছবি আঁকতে তখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সেই সময়ই পুলিশ উদ্ধার করে আলেকজান্ডারকে।

গত কয়েক সপ্তাহে ভারতে ব্লু হোয়েল গেমের ফাঁদে পড়ে অন্তত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। রাশিয়ায় এই গেম চালু হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত বিশ্বে শতাধিক মানুষ শিকার হয়েছেন এই ব্লু হোয়েল গেমের।

Blue Whale Game Alexander Blue Whale Survivor ব্লু হোয়েল আলেকজান্ডার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy