Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TDP

এনডিএ ছাড়ল টিডিপি, মোদীর বিরুদ্ধে জোট বেঁধে অনাস্থার উদ্যোগ

অন্ধ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনডিএ জোটেরই আর এক শরিক ওয়াই এস আর কংগ্রেস।

চন্দ্রবাবু নাইডু। —ফাইল চিত্র।

চন্দ্রবাবু নাইডু। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৮ ১১:০১
Share: Save:

সমস্ত টানাপড়েনের অবসান। অবশেষে এনডিএ জোট ছাড়ার কথা জানিয়ে দিলেন তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নায়ডু। এর পরেই জোট বেঁধে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার চেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার সকালে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে কথা বলেন চন্দ্রবাবু। টিডিপি জানিয়েছে, স্পেশ্যাল স্টেটাস বা বিশেষ অধিকার না দিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশকে অপমান করেছে কেন্দ্র। এর পর এনডিএ-র সঙ্গে জোট বজায় রাখা সম্ভব নয়।

অন্ধ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্ধ্রেরই আর এক দল ওয়াই এস আর কংগ্রেস। অন্ধ্রের রাজনীতিতে ওয়াই এস আর-এর নেতা জগন রেড্ডির সঙ্গে চন্দ্রবাবু নায়ডুর অহি-নকুল সম্পর্ক। তা সত্ত্বেও ওয়াই এস আর-এর আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করে যেন ‘জোটাবার্তা’ দিয়েছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু।

চন্দ্রাবাবু এবং জগনের সম্মিলিত ‘বিদ্রোহে’ এনডিএ সরকারের স্থায়িত্বে সমস্যা হবে না ঠিকই। কিন্তু বিজেপির একাংশের আশঙ্কা, আঞ্চলিক দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য অন্যান্য শরিক দলগুলো একই রকমের কড়া অবস্থান নিলে সমস্যায় পড়ে যেতে পারে মোদী সরকার। শিবসেনার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক এমনিতেই খারাপ। তার উপরে টিডিপি, ওয়াই এস আর কংগ্রেস চিন্তা আরও বাড়ালো মোদী-শাহদের। গতকাল চন্দ্রবাবু নায়ডু বলেছিলেন, ‘‘বাজপেয়ী জমানাতেও তাঁরা এনডিএ জোটে ছিলেন। তাঁদের পরামর্শ নিতেন বাজপেয়ী। কিন্তু মোদী সরকারের আমলে তাঁদের কথা শোনাই হয় না।’’

চন্দ্রাবাবু এবং জগনের সম্মিলিত ‘বিদ্রোহে’ এনডিএ সরকারের স্থায়িত্বে সমস্যা হবে না ঠিকই। কিন্তু বিজেপির একাংশের আশঙ্কা, আঞ্চলিক দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য অন্যান্য শরিক দলগুলো একই রকমের কড়া অবস্থান নিলে সমস্যায় পড়ে যেতে পারে মোদী সরকার। শিবসেনার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক এমনিতেই খারাপ। তার উপরে টিডিপি, ওয়াই এস আর কংগ্রেস চিন্তা আরও বাড়ালো মোদী-শাহদের। গতকাল চন্দ্রবাবু নায়ডু বলেছিলেন, ‘‘বাজপেয়ী জমানাতেও তাঁরা এনডিএ জোটে ছিলেন। তাঁদের পরামর্শ নিতেন বাজপেয়ী। কিন্তু মোদী সরকারের আমলে তাঁদের কথা শোনাই হয় না।’’

সংসদ চত্বরে প্রতিবাদে টিডিপি:

আরও পড়ুন: হারের দায় কার, দু’পক্ষই কাঠগড়ায়

টিডিপি-র সঙ্গে কেন্দ্রের মোদী সরকারের সম্পর্ক জটিল হয়ে উঠেছিল অন্ধ্রের বিশেষ আধিকারের দাবি নিয়ে। তেলঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ আলাদা রাজ্য হিসেবে ভাগাভাগির পর মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু তাঁর রাজ্য অন্ধ্রের জন্য বিশেষ অধিকারের দাবি তোলেন। কেন্দ্র জানায়, অন্ধ্রের দাবি মেনে বাড়তি অর্থ দিতে তারা রাজি আছে। কিন্তু বিশেষ অধিকার বা ‘স্পেশ্যল স্টেটাস’ দেওয়া সম্ভব নয়। কেন্দ্রের আশঙ্কা ছিল, অন্ধ্রকে যদি এই বিশেষ রাজ্যের সুবিধা দেওয়া হয়, তবে একই দাবিতে পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব কিংবা বিহারের মতো রাজ্যগুলোও গলা চড়াবে। দাবি পূরণ না হওয়ায় দিন দু’য়েক আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন টিডিপি-র দুই সাংসদ অশোক গজপতি রাজু এবং ওয়াই এস চৌধুরি। পাল্টা অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু ক্যাবিনেট থেকেও দুই বিজেপি মন্ত্রী বেরিয়ে আসেন। এর পর দুই দলের মধ্যে সামান্য যেটুকু সম্পর্ক অবশিষ্ট ছিল, তাও আজ ছিন্ন হয়ে গেল।

অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ওয়াই এস আর কংগ্রেসের আর্জি জানিয়ে চিঠি।

লোকসভায় টিডিপি সাংসদের সংখ্যা ১৬, জগনের দলে রয়েছেন ৯ জন। অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার জন্য ন্যূনতম ৫০ সাংসদের সমর্থন দরকার। এদিকে, জোট বেঁধে অনাস্থার প্রক্রিয়া নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। অনাস্থায় চন্দ্রবাবু এবং জগনকে সমর্থন দিতে রাজি হয়েছে সিপিএম। অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থন করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। সব মিলিয়ে দিল্লির রাজনীতিতে বেড়েই চলছে জোটের হাওয়া।

জোটে ফাটল নিয়ে বিজেপি যে কতটা চাপে তার আভাস মিলেছে মহারাষ্ট্রে। টিডিপির বিজেপি জোট ত্যাগ এবং বিজেপির বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়ে অনাস্থা উদ্যোগ শুরু হতে না হতেই, শিবসেনা নেতাকে নিয়ে বৈঠকে বসে পড়েন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। মুম্বইয়ের এক গেস্ট হাউজে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন শিবসেনা নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত গীতের সঙ্গে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শিবসেনাকে কাছে পেতেই এই বৈঠক বলে বোঝা যাচ্ছে। শিবসেনা এই মুহূর্তে কেন্দ্রে এবং মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে জোট সরকারে থাকলেও, সম্পর্কের চিড় ধরেছে বেশ কিছু দিন ধরেই। এমনকী ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে একা লড়বে বলে ঘোষণা করে বসে আছে শিবসেনা। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে শিবসেনাকে সঙ্গে রাখতে যে বিজেপি নতুন করে তত্পর হচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।

এ সবের মধ্যে বিজেপির চাপ বাড়িয়ে রাখল বিহারের জোট শরিক জেডি(ইউ)-ও। চন্দ্রবাবুর পথেই বিহারের জন্য স্পেশ্যাল স্টেটাসের দাবি নতুন করে তুলে ফেলেছে নীতীশের দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

PM Modi Chandrababu Naidu NDA TDP Video
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE