Advertisement
E-Paper

এক লাফে ত্রিপুরার সিংহাসনে বিজেপি

দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের হিসেব বলছে, বিজেপি পেয়েছে ৪৩% ভোট। আইপিএফটি-র প্রাপ্তি ৭.৩% ভোট। আর বামেদের ভোট গত বারের ৫২% থেকে কমে এখনও পর্যন্ত ৪২.৬%-এ দাঁড়়িয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৮
জয়োল্লাস: ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটে জেতার খবর পেয়ে উল্লাস সমর্থকদের। শনিবার আগরতলায়। ছবি: রয়টার্স।

জয়োল্লাস: ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটে জেতার খবর পেয়ে উল্লাস সমর্থকদের। শনিবার আগরতলায়। ছবি: রয়টার্স।

শূন্য থেকে একেবারে সিংহাসনে!

গেরুয়া ঝড়় তুলে বাম-শাসিত ত্রিপুরার দখল নিল বিজেপি। যে রাজ্যে পাঁচ বছর আগের বিধানসভা এবং তিন বছর আগের লোকসভা ভোটেও তাদের ঝুলিতে বলার মতো কোনও ভোটই ছিল না, সেখানে বিজেপি-আইপিএফটি জোট ক্ষমতায় এল দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি আসন পেয়ে! ত্রিপুরার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ মন্তব্য করেছেন, ‘‘লেফ্‌ট ইজ নট রাইট ইন ইন্ডিয়া!’’

ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের সম্পূর্ণ ফলাফল অব্শ্য শনিবার রাত পর্যন্ত সরকারি ভাবে ঘোষণা হয়নি। ভোটের দিনের মতোই গণনাতেও সেই ঝুলে রয়েছে কিছু অনিশ্চয়তা! নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, রাজ্যের ৫৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩টিতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। তাদের জোটসঙ্গী আইপিএফটি জিতেছে ৮টি আসন। আর বামফ্রন্ট দখলে রাখতে পেরেছে ১৩টি আসন। এর সঙ্গে এগিয়ে থাকা কেন্দ্রগুলির তালিকা যোগ করলে বিজেপি জোট ৪৩ এবং বামফ্রন্ট ১৬টি আসন জয়ের দাবিদার। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের কেন্দ্র ধনপুরের গণনা দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থেকেছে বিজেপি-র আপত্তিতে।

দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের হিসেব বলছে, বিজেপি পেয়েছে ৪৩% ভোট। আইপিএফটি-র প্রাপ্তি ৭.৩% ভোট। আর বামেদের ভোট গত বারের ৫২% থেকে কমে এখনও পর্যন্ত ৪২.৬%-এ দাঁড়়িয়েছে। কংগ্রেস এবং তৃণমূলের ভোটপ্রাপ্তির হার নেহাতই নগণ্য। বেশির ভাগ আসনে তাদের জামানত খোয়াতে হয়েছে। বাম-বিরোধী ভোটের প্রায় পুরোটাই নিজেদের দিকে টেনে অভাবনীয় সাফল্য ঘরে তুলেছে বিজেপি! গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে ধরলে তাদের অনুকূলে ‘স্যুইং’ হয়েছে ৪০%-এরও বেশি! ঠিক যেমন ইঙ্গিত দিয়েছিল সি ভোটার-এবিপি আনন্দের বুথফেরত সমীক্ষা!

আরও পড়ুন: হুমকি-কটূক্তির দিনে একলা লড়়াই মানিকের

কী ভাবে হল এমন বাজিমাত? বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি এবং মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার বিপ্লব দেবের মতে, ‘‘ত্রিপুরার মানুষ উন্নয়ন চেয়েছিলেন। তাঁদের মনে হয়েছিল, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপিই স্থিতিশীল এবং উন্নয়নমুখী সরকার দিতে পারে। তাই তাঁরা ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন।’’ নতুন ত্রিপুরা গড়়তে বামেদেরও সাহায্য প্রার্থনা করেছেন বিপ্লব।

দীর্ঘ ২৫ বছরের বাম শাসনে রাজ্যে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার মনোভাব যতটা ছিল, তার সঙ্গেই গত তিন বছরে নিবিড়় সাংগঠনিক পরিশ্রম যোগ করে হাওয়াকে ঝড়়ে পরিণত করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব! এর আগে কোনও ভোটে বামেদের ধাক্কা খাওয়ার ইঙ্গিত না থাকলেও বিধানসভায় এসে হঠাৎই বাম দুর্গ একেবারে ধরাশায়ী! বিজেপি নেতারা বলছেন, তরুণ ভোটারদের সঙ্গে যোগসূত্র গড়়তে পেরেছে তাঁদের সংগঠন। সেই সঙ্গে আইপিএফটি-র সঙ্গে জোট উপজাতিদের বড়় অংশের আবেগকে টানতে পেরেছে।

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি অবশ্য ত্রিপুরার ফলকে অর্থ ও পেশিবলের জয় বলেই মনে করছেন। দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেছেন, ‘‘অপ্রত্যাশিত এই বিপর্যয় মেনে নিয়েই আমরা কারণ পর্যালোচনা করব।’’

রাজ্যে ২৫ বছরের মহীরূহ পতনের অনিবার্য অভিঘাতে বিকেল থেকেই নানা প্রান্তে ভাঙা পড়়তে শুরু করেছে সিপিএমের কিছু কার্যালয়। সোনামুড়়ার গণনা-কেন্দ্রের মধ্যেই সরকারি আধিকারিকদের হুমকি দেওয়া হয়েছে ‘দেখে নেওয়া’র। শান্তি বজায় রাখার জন্য বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের প্রতি দলের সভাপতি বিপ্লবের আবেদন কতটা ফলপ্রসূ হয়, তার পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে রাত থেকেই!

Tripura Assembly Election 2018 Nagaland Assembly Election Maghalaya Assembly Election 2018 Election Result CPIM BJP বিজেপি সিপিএম congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy