সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের অফিস। ছবি: সংগৃহীত।
ক্ষোভ থাকলেও দেশের প্রধান বিচারপতির কাজকর্ম নিয়ে তাঁদের অসন্তোষ সাংবাদিক সম্মেলনে উগরে দিয়ে চার প্রবীণ বিচারপতি সঠিক কাজ করেননি বলে মনে করছে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া।তাদের মতে, বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে আলোচনা হলেই ভাল হত। বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী কাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলে ‘শান্তিপূর্ণ ভাবে দ্রুত’ ওই সমস্যা মেটানো হবে। জরুরি বৈঠকের পর এ দিন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনও শীর্ষ আদালতের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা দ্রুত ফেরানো’র সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিষয়টির ফয়সালা হবে কী ভাবে, তা নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করতে শনিবার সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। সেখানে ঠিক হয়, এ দিনের বৈঠকে কাউন্সিল কী সিদ্ধান্ত নিল, তা আলাদা আলাদা ভাবে সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতিকে জানানো হবে। যা শুরু হবে আগামী কাল থেকেই। এ ব্যাপারে সব বিচারপতিরই মতামত জানতে চাওয়া হবে। কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত জানানো হবে চার ‘বিদ্রোহী’ বিচারপতি ও দেশের প্রধান বিচারপতিকেও। নেওয়া হবে তাঁদের মতামতও। আর তার ভিত্তিতে ‘শান্তিপূর্ণ ভাবে দ্রুত’ সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে। বার কাউন্সিলের এ দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের আলাদা আলাদা ভাবে জানানো ও তাঁদের মতামত নেওয়ার জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়েছে।
বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মানান কুমার মিশ্র বলেছেন, ‘‘আমরা আমজনতার সামনে ময়লা কাপড়টা সাফ করতে চাই না। সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে গেলে গোটা বিচার ব্যবস্থাটাই দুর্বল হয়ে পড়বে।’’
সুপ্রিম কোর্টের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিকাশ সিংহ বলেছেন, ‘‘ওঁরা যখন সাংবাদিক সম্মেলনই ডাকলেন, তখন ওঁদের এমন কিছু বলা উচিত ছিল, যার বাস্তব ভিত্তি রয়েছে। এটাই প্রমাণ করে, ওই সাংবাদিক সম্মেলন আগে থেকে ভেবেচিন্তে করা হয়নি। ওঁরা বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও অভিযোগ করেননি।’’
৪ বিচারপতি (বাঁ দিক থেকে) কুরিয়ান জোসেফ, জে চেলামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ ও মদন লোকুর।
যেহেতু সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান বিচারপতির কাজকর্মের পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ করেছেন শীর্ষ আদালতের চার প্রবীণ বিচারপতি, তাই বার অ্যাসোসিয়েশন মনে করছে, এ ব্যাপারে যা করণীয়, তা প্রধান বিচারপতিরই করা উচিত।
শুক্রবার সকালে তাঁর বাড়ির লনে সাংবাদিকদের ডেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ বিচারপতি জে চেলামেশ্বর ও তাঁর তিন সহকর্মী বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, রঞ্জন গগৈ ও মদন লোকুর প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের কাজকর্মের পদ্ধতি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলেন।
আরও পড়ুন- বিচার বিভাগে ‘বিদ্রোহ’, নিশানায় প্রধান বিচারপতি
আরও পড়ুন- দলত্যাগ বিরোধী মামলা শুনল না শীর্ষ আদালত
বিচারপতি জে চেলামেশ্বর বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের কাজকর্ম ঠিক মতো চলছে না। প্রধান বিচারপতির কাজকর্মে স্বচ্ছতার অভাব থেকে যাচ্ছে। বেছে বেছে বিচারপতিদের মামলা দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোনও সিনিয়রিটির বাছবিচার করা হচ্ছে না। এমনকী, অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলাও দেওয়া হচ্ছে জুনিয়র বিচারপতিদের।’’
চার প্রবীণ বিচারপতির অভিযোগ, প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে সবক’টি বিষয় জানানো সত্ত্বেও, তাঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে আলোচনায় বসার পরেও সমস্যা মেটেনি। কোনও ঐকমত্যে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy