Advertisement
E-Paper

সিপিএম বলছে ফিরছি, বিজেপি বলছে আসছি

দেশের বামপন্থী রাজনীতির কাছে এখন মহা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন একটাই। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ঝড়় থামিয়ে ত্রিপুরায় কি সরকার ধরে রাখতে পারবেন মানিক সরকার? পারলে বাম রাজনীতি যুঝে চলার নতুন অক্সিজেন পাবে। না পারলে? বামেদের বিপন্নতা তো আরও বাড়়বেই। সঙ্গে বাংলায় এ বার বহুগুণ উৎসাহে ঝাঁপিয়ে পড়়বে বিজেপি!

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৮

এই দিল্লি খেকে ফোন আসছে পলিটব্যুরোর কোনও সদস্যের। পরক্ষণেই ফোন কলকাতা থেকে। মেলার মাঠের দফতরের উপরের ঘরে ফোন ছাড়়ার ফুরসতই প্রায় মিলছে না! প্রশ্ন একটাই! হবে তো?

ঠান্ডা মাথায় নানা রাজ্যের সব সতীর্থকে একই আশ্বাস দিচ্ছেন ত্রিপুরা সিপিএমের ওই গুরুত্বপূর্ণ নেতা। হয়ে যাবে! এত সহজে সব শেষ হয় না!

দেশের বামপন্থী রাজনীতির কাছে এখন মহা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন একটাই। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ঝড়় থামিয়ে ত্রিপুরায় কি সরকার ধরে রাখতে পারবেন মানিক সরকার? পারলে বাম রাজনীতি যুঝে চলার নতুন অক্সিজেন পাবে। না পারলে? বামেদের বিপন্নতা তো আরও বাড়়বেই। সঙ্গে বাংলায় এ বার বহুগুণ উৎসাহে ঝাঁপিয়ে পড়়বে বিজেপি!

ভোটের পরে সিপিএমের অভ্যন্তরীণ হিসেব বলছে, আসন কমলেও সরকার হারানোর পরিস্থিতি হয়নি। পাঁচ বছর আগে ৫০ আসন এবং ৫২% ভোট পেয়ে ক্ষমতায় ফিরেছিল বামফ্রন্ট। তার মধ্যে ১১টি আসনে বামেদের জয়ের ব্যবধান ছিল ১৫০০ ভোট বা তার চেয়ে কম। মাঝের পাঁচ বছরে পাঁচটি উপনির্বাচনের পাঁচটিতেই জিতেছে তারা, চারটিতে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। বামেদের আসন বেড়়ে হয়েছে ৫১।

এ বার ওই অল্প ব্যবধানে জেতা আসনগুলিকে প্রায় খরচের খাতাতেই ধরছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ত্রিপুরা থেকে দেওয়া সিপিএমের প্রাথমিক হিসেব, আসন থাকতে পারে ৪০ থেকে ৪৫-এ। কংগ্রেসের ভোট খুব বেশি আসনে নির্ণায়ক হবে না বলেই নির্বাচনের পরে প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়েছেন ত্রিপুরা সিপিএম নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের দাবি, ‘‘ইভিএম-বিভ্রাটের জের কোথায় কী ভাবে পড়়বে বলা যায় না! সেটা বাদ দিয়ে বলা যায়— সরকার চলে যাবে, পরিস্থিতি এমন নয়।’’

ত্রিপুরায় গত দু’বার বিধানসভায় ভোট পড়়েছিল ৯১% ও ৯২%। দু’বারই বিপুল জনাদেশ ছিল মানিকবাবুর পক্ষে। রবিবার রাত সাড়়ে ১১টা-১২টা পর্যন্ত কোথাও কোথাও ভোটগ্রহণ চলার পরে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর মিলছে, ভোট পড়়েছে ৮৯.৯৬%। ইভিএমে গোলমাল হওয়ায় ধৈর্যচ্যুতি উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত কারা কোন দিকে ভোট দিলেন, তা নিয়ে কিছুটা ধন্দে বাম শিবির।

আর বিজেপি শিবির ততটাই আত্মবিশ্বাসী! ভোটের দিন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং উত্তর-পূর্বের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রামমাধব দফায় দফায় ফোন করে খোঁজ নিয়েছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেবের কাছে। ইভিএম-বিভ্রাট কাটিয়ে ভোটগ্রহণ শেষের আগেই বিপ্লব, সুনীল দেওধরেরা তাঁদের জানিয়ে দিয়েছেন, ৩২ থেকে ৩৭টি আসন পেয়ে বিজেপি-ই সরকার গড়়বে। শহুরে মধ্যবিত্ত এবং উপজাতি এলাকা— দু’ক্ষে্ত্রেই বামেদের ভোট ভাঙবে। বিপ্লববাবুর দাবি, ‘‘ত্রিপুরার মানুষ ঐতিহাসিক রায় দেওয়ার জন্যই এ বার ভোটের লাইনে দাঁড়়িয়েছিলেন!’’

কার দাবি ঠিক, সেই উত্তর আপাতত স্ট্রং রুমবন্দি ৩ মার্চ পর্যন্ত!

Tripura Assembly Election 2018 CPM BJP Narendra Modi Manik Sarkar নরেন্দ্র মোদী মানিক সরকার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy