Advertisement
E-Paper

‘কারসাজি’ বিতর্ক বাড়িয়ে ত্রিপুরায় আড়াইশো বুথে ইভিএম বিভ্রাট

ইভিএম নিয়ে কেন এত বিভ্রাট তাই নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৩:২০
বুথের বাইরে ভোটের লাইন। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।

বুথের বাইরে ভোটের লাইন। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।

বিধানসভা ভোটের আগে ত্রিপুরায় এবার বিতর্ক দেখা দিয়েছিল ইভিএমকে কেন্দ্র করে। ভোটের দিনও সকাল থেকে বিভ্রাট বাধল সেই ইভিএমকে ঘিরেই। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, অন্তত ২৫০ বুথে ইভিএম গোলমাল করেছে। তার মধ্যে কিছু বুথে দুপুর একটা পর্যন্তও ভোটগ্রহণ শুরু করা যায়নি। ইভিএম নিয়ে কেন এত বিভ্রাট তাই নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরে। যদিও নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, ২৫০ নয়, সংখ্যাটা ১৫০ কাছাকাছি হবে। যে সমস্ত বুথে ইভিএমের গোলমাল দেখা গিয়েছে, সেখানে ইভিএম সারিয়ে তুলে বা নতুন ইভিএম এনে পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু করা হয়। এই সমস্ত বুথে বিকেল ৪টের পরও ভোট নেওয়া হচ্ছে, জানিয়েছে কমিশন।

ইভিএমে যে চিহ্নেই ভোট দেওয়া হোক না কেন তা গিয়ে পদ্মপ্রতীকেই পড়বে, ভোটের আগে বিজেপি নেতাদের এমন মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো জলঘোলা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সিপিএম নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়। তেলিয়ামুড়ায় বিজেপির সভার যে ভিডিও ক্লিপিং সিপিএম কমিশনের কাছে পাঠায়, তাতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেবকে বলতে শোনা গিয়েছিল— ‘‘কার ভোট কোথায় পড়বে, শুধু মোদীজি জানেন আর আমি জানি!’’

ভোটের কয়েক দিন আগে একটি বুথে ইভিএম পরীক্ষার সময় দেখা যায়, যে কোনও বোতাম টিপলেই নির্দিষ্ট একটি জায়গায় ভোট চলে যাচ্ছে। এই বিতর্কের আবহেই এবার ইভিএম সামাল দিতে ত্রিপুরায় ১৮৪ জনের ইঞ্জিনিয়র টিম নামিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই প্রেক্ষিতে এ দিন সকাল থেকে ব্যাপক ইভিএম বিভ্রাট বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

আরও পড়ুন: বাংলার বিদ্যা নিয়ে ত্রিপুরায় রঞ্জিত কুমার পছনন্দা

বিজেপি রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেবের কেন্দ্র বনমালীপুরের বুথ থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার রামনগর কেন্দ্রের যে বুথের ভোটার সেই শিশুবিহারী হাইস্কুলেও এ দিন সকালে ইভিএম খারাপ হয়েছিল। কিছু ক্ষণ ভোট বন্ধ রেখে ইভিএম সারিয়ে আবার তা শুরু হয়। ইভিএম সারানোর ইঞ্জিনিয়র টিম নিয়েও অভিযোগ উঠেছে উত্তর জেলায়। বিকল ইভিএম সারানোর জন্য ইঞ্জিনিয়র পরিচয় দিয়ে যাঁরা ঢুকেছিলেন, তাঁদের কাছে কমিশনের পরিচয়পত্র ছিল না বলে অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় মানুষ তাঁদের ঘিরে ধরেন। সিপিএম বিষয়টি নিয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার তথা জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। ধর্মনগর কেন্দ্রে শনিবার রাতে ‘বিকল’ বলে ৬১টি ইভিএম বদলে দেওয়া হয়। কিন্তু সে সময় কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সেখানে ছিলেন না। কেন এ ভাবে বদলানো হল, তা নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস।

আধাসামরিক বাহিনীর প্রহরায় চলছে ভোটগ্রহণ। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।

ইভিএম বিতর্ক ছাড়া এখনও পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ভোট মোটামুটি শান্তিপূর্ণ। বড় কোনও অশান্তির খবর মেলেনি। তবে আইপিএফটি-র সভাপতি এন সি দেববর্মা যে কেন্দ্রের প্রার্থী, সেই টাকারজোলায় ৫টি বুথ থেকে সিপিএম এজেন্টদের বার করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই কেন্দ্রেরই ঈশ্বরমা এবং খুপিলং এলাকায় বেশ কিছু ভোটারের আধার কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, রেশন কার্ড রাতেই আইপিএফটি-র সমর্থকেরা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। কমিশনের তরফে এখনও ইভিএম বিভ্রাট বা অন্যান্য অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। কমিশন সূত্রের হিসেব, বিকেল ৪টে পর্যন্ত ৫৯টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৭৪ শতাংশ। ত্রিপুরায় ভোটদানের হার চিরকালই অন্যান্য রাজ্যের গড় হারের তুলনায় বেশি।

Tripura election 2018 EVM Tripura ত্রিপুরা ইভিএম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy