Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মানিককে অফিসেই ঢুকতে দিল না বিজেপি

মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য মন্ত্রীরা তাদের সেই প্ররোচনায় পা না দেওয়ার সিদ্ধান্তই নেন। বাড়িতে বসেই তাঁরা সরকারি কাজকর্ম করেছেন।

অবরোধ: ত্রিপুরার সচিবালয়ের প্রবেশপথে বসে পড়েছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার আগরতলায়। —নিজস্ব চিত্র।

অবরোধ: ত্রিপুরার সচিবালয়ের প্রবেশপথে বসে পড়েছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার আগরতলায়। —নিজস্ব চিত্র।

বাপি রায়চৌধুরী
আগরতলা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫৩
Share: Save:

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী-সহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের সচিবালয়ে ঢুকতেই দিল না বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশের হাতে সাংবাদিক খুনের ঘটনাকে সামনে রেখে আজ বিজেপির ডাকা বন্‌ধে প্রদেশ সভাপতি বিপ্লব দেব ও রাজ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত নেতা সুনীল দেওধরের নেতৃত্বে সচিবালয়ের রাস্তা অবরোধ করে তারা। জোর খাটিয়ে অবরোধ হঠিয়ে সচিবালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেননি সরকারি পদাধিকারীরা। মন্ত্রিসভা সূত্রের বক্তব্য, সচিবালয়ের সামনে সংঘর্ষ বাধাতে চাইছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য মন্ত্রীরা তাদের সেই প্ররোচনায় পা না দেওয়ার সিদ্ধান্তই নেন। বাড়িতে বসেই তাঁরা সরকারি কাজকর্ম করেছেন।

১২ ঘণ্টার এই বন্‌ধে বিপর্যস্ত হয়েছে রাজ্যের জনজীবন। গোলমালের আশঙ্কায় আগরতলা শহরের দোকানপাট, স্কুল-কলেজও কার্যত বন্ধই ছিল। সরকারি দফতরেও হাজিরার হার ছিল নগণ্য। বন্ধ ছিল বেসরকারি যান চলাচলও। এক মাত্র মুখ্যসচিব সঞ্জীব রঞ্জনই সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে পিছনের রাস্তা দিয়ে সচিবালয়ে পৌঁছন। সারাদিন সেখানে কাজকর্মও করেন। হাইকোর্টের বিচারপতিদের পথ আটকানো না হলেও কর্মীদের সেখানে ঢুকতে বাধা দেয় বিজেপি সমর্থকরা। তবে বিভিন্ন এলাকায় শাসক দল সিপিএম বন্‌ধের ‘সক্রিয় বিরোধিতা’ করতে নামায় বন্‌ধ শান্তিপূর্ণ হল না। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংঘর্ষের খবর মিলেছে। বিভিন্ন দলের জনা কুড়ি সমর্থক জখম হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গত মঙ্গলবার আগরতলার স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিক টিএসআর জওয়ানের গুলিতে খুন হন। মাস খানেক আগে আর এক সাংবাদিকও উন্মত্ত জনতার হাতে খুন হন। এই দু’টি খুনকে সামনে রেখে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে বিজেপি মঙ্গলবারই ১২ ঘণ্টার বন্‌ধের ডাক দেয়। কংগ্রেসও আলাদা ভাবে একই দিনে বন্‌ধ ডাকে। এ দিন সকাল থেকে অবশ্য রাস্তায় পিকেটিং, মিছিল করতে দেখা যায় বিজেপি সমর্থকদেরই। রাস্তায় কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল প্রায় নগণ্য।

আগরতলার প্রতাপগড়ে বিজেপি এবং সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ, বিজেপি সমর্থকদের আক্রমণে সুমন ঘোষ নামে এক সিপিএম সমর্থক জখম হন। সঞ্জয় সিংহরায় নামে এক ব্যবসায়ীও বিজেপি সমর্থকদের হাতে নিগৃহীত হন বলে সিপিএমের তরফে জানানো হয়েছে। আগরতলার মহারাজগঞ্জ বাজার থানার ওসি স্মৃতিকান্ত বর্ধনও বন্‌ধ সমর্থকদের হাতে নিগৃহীত হন। পরে সিপিএম কর্মীদের হামলায় দুই বিজেপি সমর্থকও জখম হন বলে অভিযোগ। সিপাহীজলা জেলার বক্সনগর এলাকায় বন্‌ধ সমর্থকদের উপরেও সিপিএমের আক্রমণের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। সেখানে ১২ জন দলীয় সমর্থক জখম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা সুদীপ রায়বর্মন।

রাজ্য সিপিএমের মুখপাত্র গৌতম দাস বলেন, ‘‘বিজেপি রাজ্যে গুন্ডামি করছে। কংগ্রেস জমানায় এমন গুন্ডামি এবং সন্ত্রাস রাজ্যের মানুষ দেখেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, তখন যাঁরা কংগ্রেসি সন্ত্রাসের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরাই এখন বিজেপিতে। তাঁর আঙুল যে সুদীপ রায়বর্মনদের দিকেই, তা স্পষ্ট। গৌতমবাবু জানান, আজকের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আগামী কাল তাঁরা প্রতিবাদ দিবস পালন করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tripura Journalist Killed Journalist
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE