Advertisement
E-Paper

মেয়েকে ধর্ষণের প্রতিবাদ, জেলে ‘খুন’ বাবা

ধর্ষিতার পরিবারের দাবি, মৃত্যু নয়, পুলিশি হেফাজতে তাঁকে ‘খুন’ করা হয়েছে। তাদের আরও অভিযোগ, এর পিছনেও রয়েছে ধর্ষণে অভিযুক্ত বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১০

থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন বাবা, মেয়েকে ধর্ষণ করেছে বিজেপি বিধায়ক ও তাঁর দলবল। কিন্তু এক বছরেও বিচার মেলেনি। উল্টে ধর্ষিতার বাবাকেই তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। আর আজ সকালে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হল তাঁর।

ধর্ষিতার পরিবারের দাবি, মৃত্যু নয়, পুলিশি হেফাজতে তাঁকে ‘খুন’ করা হয়েছে। তাদের আরও অভিযোগ, এর পিছনেও রয়েছে ধর্ষণে অভিযুক্ত বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার।

ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। লখনউয়ের এডিজি-র কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে, কেউ রেহাই পাবে না।’’ যদিও আজই অভিযুক্ত বিধায়ক বুক ফুলিয়ে যোগীর কাছে গিয়ে বলে এসেছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। কেউ অভিযোগ করলেই সেটা সত্যি হয়ে যায় না। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘ওঁরা নিচুতলার লোক...। এ সব তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধীদের ষড়যন্ত্র।’’

উত্তরপ্রদেশের ডিজি ও পি সিংহ জানিয়েছেন, ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দুই পুলিশকর্তা ও চার কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। উন্নাওয়ের এসপি পুষ্পাঞ্জলি দেবী আরও জানান, যে চার পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষিতার বাবাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠছে, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঠিক কী ঘটেছিল? ধর্ষিতা তরুণীর অভিযোগ, গত বছর জুন মাসে বিজেপি বিধায়ক ও তার দলবল মিলে ধর্ষণ করেছিল তাঁকে। বারবার থানায় অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এক বছর ধরে থানার চক্কর কেটে শেষে এফআইআর নেয় পুলিশ। কিন্তু তার পর থেকেই তাদের হুমকি দেওয়া শুরু হয়। নিগৃহীতার পরিবারের অভিযোগ, গত ৩ এপ্রিল বিধায়কের ভাই এফআইআর তুলতে মেয়েটির বাবাকে টেনে হিঁচড়ে থানায় নিয়ে যান। কিন্তু এফআইআর তোলেননি তিনি। এর পর ৫ এপ্রিল হঠাৎই অস্ত্র আইনে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

আরও পড়ুন: হিমাচলের খাদে স্কুলবাস, মৃত ৩০

গত কাল, অর্থাৎ রবিবার লখনউয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের বাইরে গল্‌ফ ক্লাব গেটের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন তরুণী। পুলিশ অবশ্য আটকে দেয়। কিন্তু এর পরে দাবানলের মতো ছড়ায় গোটা ঘটনা। আজ সকালে পুলিশি হেফাজতে ধর্ষিতার বাবার মৃত্যুর খবর আসে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল রাতে জেল থেকে তাঁকে উন্নাওয়ের জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসা চলাকালীন আজ ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক অতুলও জানিয়েছেন, পেটে যন্ত্রণা ও বমি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। যদিও ধর্ষিতা তরুণীর দাবি, এমনটা হতেই পারে না। তাঁর বাবাকে মারধর করা হয়েছিল। তা ছাড়া, তাঁদের দীর্ঘদিন ধরেই খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।

জেলাশাসক রবি কুমার জানিয়েছেন, মৃতদেহের ময়না-তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। চিকিৎসকদের একটি বিশেষ প্যানেল তৈরি করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

ইতিমধ্যেই বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছে যোগী সরকার। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী টুইট করেন, ‘‘বিধায়কের বিরুদ্ধে তদন্তের বদলে পুলিশ তরুণীর বাবাকে গ্রেফতার করছে। তার পর পুলিশি হেফাজতে তাঁর মৃত্যু। আর ওই বিজেপি বিধায়ক প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’ সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব টুইট করেন, ‘‘এ রাজ্যে কোচিং ক্লাসে যাওয়ার সময় ছাত্রীকে গুলি করা হচ্ছে। ...বিজেপি বিধায়ক ধর্ষণ করছে।’’ অভিযুক্ত বিধায়ক অবশ্য বলেই চলেছেন, তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে সবটাই বিরোধীদের চক্রান্ত।

Unnao Rape Case Gang Rape Death Father Police Custody Yogi Adityanath BJP MLA Unnao উন্নাও Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy