Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National News

দেশে দু’বছরে ৪১ শতাংশ বেড়েছে হেট ক্রাইম

সম্প্রতি দেশজুড়ে গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বিরোধীদের এক প্রশ্নের উত্তরে সংসদে এক রিপোর্ট পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির। সেই রিপোর্টে তিনি জানান, ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এ দেশে ৪১ শতাংশ বেড়েছে ঘৃণা জনিত অপরাধের পরিমাণ। তালিকার একেবারে প্রথমে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ।

—প্রতীকী চিত্র

—প্রতীকী চিত্র

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ১৬:০৩
Share: Save:

বারবার কড়া বার্তা এসেছে রাজ্য ও কেন্দ্র দু’তরফেই। প্রধানমন্ত্রীও সতর্ক করেছেন বারবার। তা সত্ত্বেও থামেনি দেশ জুড়ে উত্তরোত্তর বেড়ে চলা হেট ক্রাইম বা ঘৃণা জনিত অপরাধের ঘটনা। আর সেই সংক্রান্ত বিদ্বেষের রাজনীতি।

সম্প্রতি দেশজুড়ে গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বিরোধীদের এক প্রশ্নের উত্তরে সংসদে এক রিপোর্ট পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির। সেই রিপোর্টে তিনি জানান, ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এ দেশে ৪১ শতাংশ বেড়েছে ঘৃণা জনিত অপরাধের পরিমাণ। তালিকার একেবারে প্রথমে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ।

আহির জানান, ২০১৪ সালে যেখানে উত্তরপ্রদেশে হেট ক্রাইমের সংখ্যা ছিল ২৬, সেই সময় কেরলে এই অপরাধের সংখ্যা ছিল ৬৫, কর্নাটকে ৪৬। রাজস্থানে হেট ক্রাইমের সংখ্যা ছিল ৩৯। দু’বছরের মধ্যে সেই সংখ্যাটা এক লাফে বেড়েছে অনেকটাই। ২০১৫ সালে ২৬ থেকে তরতরিয়ে সংখ্যাটা পৌঁছে গিয়েছিল ৬০-এ। বৃদ্ধি প্রায় ১৩০ শতাংশ। ২০১৬-তে উত্তরপ্রদেশে নথিভুক্ত অপরাধের সংখ্যা ৬০ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১১৬তে। ২০১৫-এর তুলনায় যা প্রায় ৯৩% বেশি। অর্থাত্ দু’বছরে শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশেই মোট ৩৪৬% বেড়েছে এই জাতীয় অপরাধের ঘটনা।

আরও পড়ুন: মোর্চার সঙ্গে বসতে মমতাকে পরামর্শ রাজনাথের

আহিরের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, তালিকার প্রথম স্থানে রয়েছে ভারতের সর্বাধিক জনবহুল এই রাজ্য। ২০১৬ সালে ৫৩টি ঘৃণা জনিত অপরাধের সংখ্যা নিয়ে এর পরের স্থানটিই দখল করেছে পশ্চিমবঙ্গ।

উত্তরপ্রদেশের বল্লভগড়ের কিশোর জুনেইদ খানকে হত্যার পর দেশ জুড়ে শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ। ছবি: এএফপি

রিপোর্ট জানাচ্ছে, খুব সম্প্রতি এই ধরনের ঘটনার প্রতুলতা বেড়েছে এ রাজ্যে। ২০১৪-য় এই সংখ্যাটা ছিল ২০। ২০১৫-য় সামান্য কমে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছিল ১৮-এ। কিন্তু গত বছর হাফ সেঞ্চুরি পার করেছে পশ্চিমবঙ্গ। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত দু’বছরে বেশির ভাগ রাজ্যেই বেড়েছে হেট ক্রাইমের পরিমাণ।

যেমন উত্তরাখণ্ডের ক্ষেত্রে দু’বছর আগে হেট ক্রাইমের সংখ্যা ছিল ৪, ২০১৬-তে এসে সেটাই গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২২-এ। হরিয়ানায় ৩ থেকে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬-তে। বিহারে ২০১৪ সালে ঘৃণা জনিত অপরাধের ঘটনা একটাও নথিভুক্ত হয়নি। কিন্তু ২০১৬-তে সেই সংখ্যাটা ১০ ছুঁইছুঁই। মধ্যপ্রদেশে দু’বছর আগে নথিভুক্ত হেট ক্রাইমের ঘটনা ছিল ৫টি। ২০১৬-তে সেই সংখ্যাই গিয়ে পৌঁছয় ২৬-এ। অন্যদিকে, অরুণাচলপ্রদেশ ও অসমে ২০১৪-তে ঘৃণা জনিত অপরাধ একটাও নথিভুক্ত হয়নি। ২০১৬-তে দু’টি রাজ্যেই একটি করে হেট ক্রাইমের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

পেশ করা এই রিপোর্টে আহির জানিয়েছেন, দেশের মধ্যে ১৬টি রাজ্যে বেড়েছে হেট ক্রাইমের ঘটনা। যার মধ্যে ৯টি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি অথবা বিজেপির জোট সরকার।

গো-রক্ষকদের তাণ্ডব কী করে বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে কিছু দিন আগেই কেন্দ্র ও ছ’টি বিজেপি শাসিত রাজ্যের কাছে জবাব চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। গোরক্ষক বাহিনীর তাণ্ডব বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সমাজকর্মী তেহসিন পুনাওয়ালা। সেই প্রেক্ষিতেই আদালত কেন্দ্র ও ছ’টি রাজ্যের কাছে লিখিত জবাব চায়। কিন্তু কেন্দ্র বা উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থান, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের মতো কোনও বিজেপি-শাসিত রাজ্যই লিখিত জবাব জমা দেয়নি। তবে আরএসএস বারবারই দায় এড়িয়ে জানিয়েছে, যাঁরা ধর্মের নামে হিংসা ছড়াচ্ছে সঙ্ঘের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। অপরাধীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তুলেছে সঙ্ঘ পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE