কাল সংসদ খোলার আগেই উত্তরাখণ্ড ও ভিভিআইপি কপ্টার দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ আরও চোখা করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আর কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে সাফাই প্রস্তুত করে উত্তরাখণ্ডের ইস্যুতে মোদী সরকারকে আরও চেপে ধরতে পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছেন সনিয়া গাঁধী।
কপ্টার-দুর্নীতিতে আক্রমণের মুখে উত্তরাখণ্ড নিয়ে আরও সরব হতে চাইছেন সনিয়া। সামনের শুক্রবার যন্তর-মন্তর থেকে সংসদ ঘেরাও অভিযানে শরিক হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তার আগে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে শুনানি রয়েছে। কিন্তু এরইমধ্যে উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরীশ রাওয়তের এক বেফাঁস মন্তব্য বাড়তি অস্ত্র তুলে দিয়েছে বিজেপির হাতে। রাওয়ত আজ কার্যত কবুল করে নিয়েছেন, বিধায়ক কেনা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে করা স্টিং অপারশেন সত্য। যে সাংবাদিক তাঁর বিরুদ্ধে স্টিং করেছিলেন, সেটি স্বীকার করে রাওয়ত বলেন, কারও সঙ্গে দেখা করা কী অপরাধ?
বিজেপির হাতে এখন কপ্টার-দুর্নীতির মত বড় অস্ত্র এমনিতেই রয়েছে। যা দিয়ে সরাসরি সনিয়া গাঁধীকে ঘায়েল করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর আজ জানিয়ে দিয়েছেন, বুধবারই সংসদে কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে যাবতীয় তথ্য তিনি পেশ করবেন। এরইমধ্যে বিজেপি আজ অভিযোগ করে বলে, ইউপিএ জমানায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি এই কপ্টার-চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু সনিয়া গাঁধী ও তাঁর রাজনৈতিক সচিব অহমেদ পটেলের চাপে তাঁকে পিছিয়ে আসতে হয়। সনিয়ার উপরে চাপ বাড়িয়ে অরুণ জেটলিও আজ বলেন, ‘‘ঘুষ যে নিয়েছেন, তাঁকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।’’
কিন্তু সনিয়াকে এ ভাবে সরাসরি নিশানা করে রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজানো নিয়ে বিজেপির মধ্যেই মতপার্থক্য রয়েছে। দলের একটি অংশ মনে করেন, রাজীব গাঁধীর বিরুদ্ধে বফর্স নিয়ে আন্দোলন করে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ সাফল্য পেয়েছিলেন। সেই সময় রাজীব গাঁধী একটি প্রশাসনিক পদে ছিলেন। কিন্তু সনিয়া গাঁধী কোনও প্রশাসনিক পদে নেই। আর বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ সেই সময় বাকি বিরোধী দলগুলির যে সমীহ পেয়েছিলেন, নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে সেটি পাওয়া কঠিন। বরং এখনই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে নীতীশ কুমারকে সামনে রেখে বিরোধী-জোটকে একজোট করার একটি প্রয়াস শুরু হয়েছে। কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে শোরগোল এক সপ্তাহের বেশি হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত অন্য বিরোধী দলগুলি প্রকাশ্যে সনিয়ার বিরুদ্ধে তেমন মুখ খোলেনি।
আরও পড়ুন- দাবানলে দাউ দাউ জ্বলছে প্রায় গোটা উত্তর ভারত
কংগ্রেসের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা অবশ্য বলেন, ইউপিএ জমানাতেই কপ্টার দুর্নীতি সামনে আসায় যথাযথ পদক্ষেপ করা হয়েছে। সংস্থাটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তিনটি কপ্টার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর যাবতীয় পাওনা-গণ্ডা ভারত সরকার বুঝে নিয়েছে। এরপরে তদন্তের নির্দেশও ইউপিএ সরকার শুরু করে গিয়েছে। এরপর নিছক রাজনৈতিক চরিত্র হননের জন্যই সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সংসদে এই নিয়ে আলোচনা হলেই যাবতীয় সত্য বেরিয়ে পড়বে। কিন্তু সব মিলিয়ে স্পষ্ট, ফের হট্টগোলেই কাটবে সংসদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy