সংসদ উত্তাল, জিএসটি-সহ একাধিক বিল পাশ বিশ বাঁও জলে, দেশজুড়ে পথে নেমেছেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীকে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় আদালত সমন পাঠানোয় প্রবল ক্ষোভ কংগ্রেসে। বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর দায়ের করা মামলায় এই সমন সনিয়া-রাহুল। কংগ্রেসের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সনিয়া-রাহুলকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে দেশের শাসক দল।
এই এত তোলপাড় যা নিয়ে, সেই ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা আসলে কী?
১) ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রটি প্রতিষ্ঠা করেন জওহরলাল নেহরু। যে সংস্থার হাতে এই খবরের কাগজটির মালিকানা ছিল, সেটির নাম হল ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল।’ ২০০৮ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ডের প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়। কাগজ চালাতে গিয়ে ইতিমধ্যেই প্রায় ৯০ কোটি টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল সংস্থার। এই দেনার অনেকটাই ছিল কংগ্রেসের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ।
২) ইয়ং ইন্ডিয়ান নামে একটি সংস্থা সেই অবস্থাতেই অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল তথা ন্যাশনাল হেরাল্ডকে অধিগ্রহণ করে। ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থায় সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধীর নামে ৩৮ শতাংশ করে শেয়ার রয়েছে। বাকি ২৪ শতাংশের মালিক মোতিলাল ভোরা, অস্কার ফার্নান্ডেজ, স্যাম পিত্রোদা এবং সুমন দুবে।
৩) ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ন্যাশনাল হেরাল্ড অধিগ্রহণ করে নেয় গাঁধী পরিবার তথা কংগ্রেস নেতাদের মালিকানাধীন সংস্থা ইয়ং ইন্ডিয়ান। তার বদলে হেরাল্ডের সব সম্পত্তি যেমন ইয়ং ইন্ডিয়ানের হয়, তেমনই ৯০ কোটি টাকা দেনার বোঝাও ইয়ং ইন্ডিয়ানের ঘাড়েই চাপে। কংগ্রেসের তরফে এর পর জানানো হয়, ন্যাশনাল হেরাল্ডকে দেওয়া ঋণ মকুব করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ তা উদ্ধার করা যাবে না।
আরও পড়ুন:
৪) সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এই বিষয় নিয়েই মামলা করেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল বলে তাকে আয়কর দিতে হয় না। কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাকে কংগ্রেস এই ভাবে টাকা দিতে পারে না।
৫) কংগ্রেসের বক্তব্য, ন্যাশনার হেরাল্ড কাগজের নীতি কংগ্রেসের নীতির সঙ্গে মিলত বলে সেই কাগজকে ঋণ দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে।
৬) স্বামীর প্রশ্ন, ইয়ং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল হেরাল্ডকে অধিগ্রহণ করার পর কেন ঋণ মকুব করে দিল কংগ্রেস? তাঁর দাবি, নয়াদিল্লি, লখনউ, ভোপাল, ইনদওর, মুম্বই, পঞ্চকুলা, পটনা-সহ বিভিন্ন শহরে ন্যাশনাল হেরাল্ডের যে সব বাড়ি এবং জমি রয়েছে, তার দাম প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা। ওই সম্পত্তির কিছুটা বিক্রি করেই কংগ্রেসের ঋণ মিটিয়ে দিতে পারত ইয়ং ইন্ডিয়ান। কিন্তু, সেই দাবি না জানিয়ে ঋণকে উদ্ধারের অযোগ্য বলে ঘোষণা করল কংগ্রেস। দলের আয়কর মুক্ত অর্থ ঘুর পথে চলে গেল সনিয়া রাহুল এবং আর কয়েকজন শীর্ষ কংগ্রেস নেতার হাতে।
৭) সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ২০১২ সালে সনিয়া, রাহুল-সহ মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০১৪-র জুনে আদালত অভিযুক্তদের সমন পাঠায়।
৮) দিল্লি হাইকোর্টে এই সমনের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেয়নি। শনিবার সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী তাই আদালতে হাজিরা দিলেন এবং জামিন পেলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy