Advertisement
E-Paper

দায় কার? রেলের মধ্যেই চলছে দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ

মনোজ বলেন, “চোখ বুজলেই সেই দৃশ্য ভেসে উঠছে, আর শিউরে উঠছি। ঈশ্বরের অশেষ কৃপা যে আমি বেঁচে গিয়েছি।”

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৭ ১৪:৩২
বেলাইন হওয়া উত্কল এক্সপ্রেসের কামরাগুলো সরানো হচ্ছে।

বেলাইন হওয়া উত্কল এক্সপ্রেসের কামরাগুলো সরানো হচ্ছে।

শনিবারের বিকেলটা যে দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে সেটা ভাবতে পারেননি মনোজ বালিয়া(৪২)। ওই দিন খতৌলীর যেখানে পুরী-হরিদ্বার উত্কল এক্সপ্রেস বেলাইন হয়, রেললাইন থেকে কয়েক মিটার দূরেই বাড়ির দাওয়ায় বসে গল্প করছিলেন মনোজ। হঠাত্ই বিকট একটা আওয়াজ শুনতে পান। কী হয়েছে দেখতে যাওয়ার আগেই উড়ে এসে দাওয়ায় পড়ে ট্রেনের এস ২ বগির একাংশ। একেবারে ধূলিসাত্ হয়ে যায় মনোজের বাড়ির দাওয়া।

আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে বেলাইন ট্রেন, ২৩ জনের মৃত্যু

মনোজ বলেন, “চোখ বুজলেই সেই দৃশ্য ভেসে উঠছে, আর শিউরে উঠছি। ঈশ্বরের অশেষ কৃপা যে আমি বেঁচে গিয়েছি।” মনোজ আরও জানান, কামরাগুলো একটার উপর একটা উঠে তাল পাকিয়ে যায়। বাড়ির সামনে, রেললাইনের উপর শুধু দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। বলেন, “রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চার দিক। আর ভেসে আসছিল আর্তনাদ।” শুধু তাঁর বাড়িই নয়, ট্রেনের যে ১০টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে, তার মধ্যে একটি আবার গিয়ে পড়ে পাশেরই একটি কলেজ বিল্ডিংয়ে। প্যান্ট্রি কোচের উপরে এস ২ কোচ উঠে গিয়েছিল ধাক্কার জেরে।

আরও পড়ুন: সমস্যা মিটবে ৫ বছরে, দাবি রাজনাথের

আরও পড়ুন: সম্পর্কে সায় নেই, প্রেমিককে পুড়িয়ে খুন করল তরুণীর পরিবার

শনিবার বিকেল ৫টা বেজে ৪৫ মিনিটে উত্কল এক্সপ্রেসের ১৪টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় ২৩ জনের, আহত হন শতাধিক। দুর্ঘটনার পরই প্রশ্ন উঠতে থাকে রেলের ভূমিকা নিয়ে। দায় নিয়ে এখন রেলের মধ্যেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাড়ির এক বাসিন্দা জগত্ রাম এনডিটিভি-কে জানান, গত দু’দিন ধরে ওখানে লাইনে মেরামতির কাজ চলছিল। স্থানীয়দের মতে, লাইনে মেরামতির খবর উত্কল এক্সপ্রেসের চালকের কাছে ছিল না।


আহতদের উদ্ধার করছে এনডিআরএফ কর্মীরা। শনিবার।

রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের কয়েকটি সূত্রের দাবি, লাইনে যে কাজ চলছে সেটা খতৌলীর স্টেশন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। তাদের আরও দাবি, লাইনে মেরামতির জন্য ২০ মিনিটের মধ্যে কোনও ট্রেনকে যাওয়ার অনুমতি যাতে না দেওয়া হয় সেটাও জানানো হয়েছিল। কিন্তু খতৌলীর স্টেশন সুপার রাজেন্দ্র সিংহ এনডিটিভি-র কাছে পাল্টা দাবি করেন, টেকনিক্যাল কোনও সমস্যা তাদের জানা ছিল না। ওখানে যে রেললাইনে মেরামতির কাজ হচ্ছে সে সম্পর্কেও তাঁদের জানানো হয়নি। তবে ইঞ্জিনিয়রিং ডিভিশন প্রশ্ন তোলে, স্টেশন কর্তৃপক্ষ যদি মেরামতির কাজ সম্পর্কে অবহিত না থাকতেন, তা হলে দুর্ঘটনার আগে দুটো ট্রেন ওই লাইনে ধীরে চলার অনুমতি পেল কী ভাবে? এই দাবি প্রসঙ্গে দিল্লি ডিভশনের ডিআরএম আরএন সিংহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, “ওটা একটা রুটিন ওয়ার্ক চলছিল। রেলমন্ত্রী তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রিপোর্ট আসতে দিন। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।”

শুক্রবার সন্ধ্যায় পুরী স্টেশন ছেড়েছিল উত্কল এক্সপ্রেস। ঠিক সময়েই চলছিল। রবিবার উত্তরাখণ্ড পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই খতৌলীতে লাইনচ্যুত হয়।

ছবি: পিটিআই।

Rail Accident Indian Railway Utkal Express Puri-Haridwar Express Khatauli Muzaffarnagar উত্কল এক্সপ্রেস মুজফফরনগর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy