Advertisement
০২ মে ২০২৪

মমতা হইচই করছেন কেন, জানতে চান মোদী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত হইচই করছেন কেন, তা নিয়ে খোঁজ নিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রথমে নোট বাতিল নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ে নেমে পড়া, তার পর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি ঘিরে রাজ্য ও দিল্লিতে তৃণমূলের বিক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে আজ বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে চা-বিরতির সময়ে রাহুল সিংহকে প্রশ্ন মোদীর— মমতা এত হইচই করছেন কেন?

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০৪:১২
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত হইচই করছেন কেন, তা নিয়ে খোঁজ নিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রথমে নোট বাতিল নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ে নেমে পড়া, তার পর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি ঘিরে রাজ্য ও দিল্লিতে তৃণমূলের বিক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে আজ বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে চা-বিরতির সময়ে রাহুল সিংহকে প্রশ্ন মোদীর— মমতা এত হইচই করছেন কেন?

বিজেপি সূত্রের খবর, রাহুল নিজের মতো করে কিছু ব্যাখ্যা দেন। দাবি করেন, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে খুবই ক্ষতি হয়েছে তৃণমূলের। তাদের কোষাগারে নাকি হাত পড়েছে। আবার জাতীয় স্তরে মোদীর বিরোধিতায় নেতৃত্বের জমিটা যে হেতু ফাঁকা, সেই জায়গা ধরার চেষ্টা করছেন মমতা— যুক্তি দিয়েছেন রাহুল। তিনি বলেন, চিটফান্ড নিয়ে তদন্ত ঢিমেতালে এগোনোর সময় রাজ্যের মানুষ হতাশ হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তারা আবার উৎসাহ পাচ্ছেন। বিজেপি নেতার ব্যাখ্যা, হল্লা করে হয়তো রফাসূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টায় রয়েছে তৃণমূল! তবে মমতার বিরুদ্ধে এ সব শুনে মন্তব্য করেননি মোদী। তবে তৃণমূল নেত্রীর কাজ নিয়ে মানুষের প্রতিক্রিয়া জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। এমনকী সিপিএম কী করছে— সেই খবরও নেন। রাহুলের অভিযোগ, কলকাতায় সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের অনুষ্ঠানের অনুমতি দিচ্ছে না মমতার সরকার।

সুদীপের গ্রেফতারির পরে তৃণমূল বিজেপিকে নিশানা করে হিংসা চালাচ্ছে বলে কর্মসমিতির বৈঠকে প্রস্তাব নেওয়া হয়। প্রস্তাব পেশ করানো হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে দিয়ে। রাজনাথ মমতার সমালোচনাও করেন। রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়, ‘‘তৃণমূল জমানায় স্বাভাবিক রাজনৈতিক কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কেরলের মতো পশ্চিমবঙ্গে কর্মীদের উপর আক্রমণ বাড়ছে। তৃণমূলের রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা যে চরম পর্যায়ে, তা বোঝা গিয়েছে সাম্প্রতিক হামলায়।’’ প্রস্তাবটি সমর্থন করানো হয় রাহুল সিংহকে দিয়ে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও ওড়িশা, ত্রিপুরা, মণিপুর, দিল্লির বিজেপি সভাপতিদের সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করলে যেন পাল্টা জবাব দেন তাঁরা।

বিজেপি নেতাদের মতে, যে ভাবে মমতার দলের নেতারা সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়ছেন, তাতে রাজ্য বিজেপির শক্তি বাড়ানোর সুযোগ আসছে। তেমনই মমতা যে ভাবে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে জোট বেঁধে মোদী-বিরোধী আন্দোলন করছেন, তা ভোঁতা করে দেওয়া যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিংহদের কোন্দল থামিয়ে একজোট হয়ে লড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। কেন না, বিজেপির রাজ্য নেতাদের কোন্দল এখন শীর্ষ নেতাদের চিন্তার বিষয়। গত কাল পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের কার্যকলাপের নালিশ জানাতে রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন রাহুল সিংহরা। দিলীপ ঘোষকে বাদ দিয়েই নর্থ ব্লকে যান তাঁরা। দিলীপ-ঘনিষ্ঠ শিবিরের মতে, তৃণমূল কর্মীরা যখন বিজেপি অফিসে হামলা করল, তখনই বিজেপি অস্ত্র পেল। কিন্তু রাহুল সিংহ আধাসামরিক বাহিনী ডেকে উল্টে মমতার হাতেই অস্ত্র তুলে দিলেন। রাহুল এ কথা অস্বীকার করে বলেন, তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধা সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি বুঝে বড় বাহিনী নিয়ে আসে। কিন্তু দিলীপ ঘোষ শিবিরের বক্তব্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদন ছাড়া কী করেই বা বাড়তি বাহিনী আসতে পারে? দুই নেতার বিবাদের মধ্যে কাল রাতেই রাজনাথ ও সিদ্ধার্থনাথ সিংহের বৈঠক হয়। এর পর দুই নেতাকে একজোটে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বোঝানো হয়েছে, দিলীপ ঘোষকে সভাপতি পদ থেকে সরানো হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Modi mamata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE