এন বীরেন সিংহ। মণিপুরের নতুন মুখ্যমন্ত্রী (বাঁ দিকে)।
একেই বলে জোটের দায়! সরকার গড়ছে বিজেপি। কিন্তু ন'জনের মন্ত্রিসভায় বিজেপি সদস্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধরে দু'জন। চার মন্ত্রী এনপিপি দলের! দেখে মনে হতেই পারে, সরকার এনপিপির। শরিক দল বিজেপি। তাতেই শেষ নয়। মণিপুরে এ দিন শপথ নেওয়া বিজেপি সরকারের মন্ত্রিসভার তালিকায় পাঁচ নম্বরে ঝলমল করছেন টি শ্যামকুমার, দলের নাম আইএনসি!
সকাল থেকে মন্ত্রিসভার 'ভুয়ো তালিকা', 'অসম্পূর্ণ তালিকা', তালিকা'র পালা শেষ করে যে মন্ত্রিসভাকে শপদবাক্য পাঠ করালেন রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লা, সেখানে 'খাঁটি বিজেপি'র কেউই নেই। গত বছর পর্যন্ত কংগ্রেসের দুঁদে বিধায়ক থাকা এন বীরেন সিংহ হলেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্য জন টি বিশ্বজিৎ গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে জিতেছিলেন। সবচেয়ে অভিনব ঘটনা বিজেপি-এনপিপি-এনপিএফ জোটের সরকারে কংগ্রেসের মন্ত্রীর শপথ নেওয়া! জোটের সমর্থনে হাজির ছিলেন রাজ্য তৃণমূলের সভাপতি তথা একমাত্র বিধায়কও!
মণিপুরে এ দিন বেলা একটায় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু সকাল থেকে ছড়িয়ে পড়ে সম্ভাব্য মন্ত্রিসভার ১৪ জনের দফতর-সহ তালিকা। দেখা যায়, এনপিএফ বিধায়কদের নামই নেই। ক্ষিপ্ত এনপিএফের হুমকিতে বিজেপি জানায় ওই তালিকা ভুয়ো। ফের হাতবদল হতে থাকে একটি তালিকা। সেখানে লেখা ছিল উপ-মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন টি বিশ্বজিৎ সিংহ। সেই তালিকাকে অসম্পূর্ণ বলে জানায় প্রদেশ বিজেপি। আবারও তালিকা আসে। সেখানে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে জয়কুমারের নাম। তাতেও সমস্যা। শেষ পর্যন্ত উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাউকে না রেখেই রাজ্যপালের হাতে চূড়ান্ত তালিকা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ। শপথ নেন ১৪ বা ১২ নয়, ন'জন মন্ত্রী।
জোট সমীকরণ ও বিজেপি মন্ত্রিসভায় কংগ্রেসের মন্ত্রী থাকার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নিয়ে খোদ বিজেপি মুখপাত্রও মুখ খুলতে নারাজ। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা একমাত্র বিধায়ক টি রবীন্দ্র দলের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বিজেপি জোটকে সমর্থন দিয়েছেন। প্রথম মন্ত্রিসভার তালিকায় তাঁর নাম থাকলেও চূড়ান্ত তালিকায় তিনি বাদ। একই অবস্থা প্রথম বাঙালি বিধায়ক আসাব উদ্দিনেরও। রবীন্দ্রের মতে, মণিপুরে রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখতে হবে ক্ষমতার পক্ষে থাকতেই হবে। কিন্তু কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ না করা বা সাসপেন্ড না হওয়া বিধায়ক টি শ্যামকুমার কি ভাবে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন? প্রদেশ বিজেপির বক্তব্য, কংগ্রেস থেকে সাসপেন্ড হলে বা পদত্যাগ করলে আগামী ছ'মাসের মধ্যে বিজেপির টিকিটে নির্বাচিত হলেই চলবে শ্যামকুমারের। এ দিন কংগ্রেস তাঁকে শো-কজ নোটিশ পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন- সংঘাতের ফল ভাল হবে না, আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি এ বার চিনা প্রধানমন্ত্রীর
শপথ গ্রহণে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ, পীযুষ গোয়েল, প্রকাশ জাভাডেকর। বিজেপি জানায়, বিমান গোলোযোগে মাঝপথ থেকে ফিরতে বাধ্য হন অমিত শাহ, বেঙ্কাইয়া নায়ডু ও রাম লাল। তাঁদের এ দিন কর্মিসভা করার কথাও ছিল। শপথ নেওয়ার পরে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন জানান, রাজ্যে বনধ-অবরোধ ওঠানোই তাঁর প্রথম কাজ হবে। যে প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী প্রচারে এসে দিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy