Advertisement
E-Paper

আর বিদ্যুতের অপচয় নিয়ে ভাবতে হবে না, নয়া দিশা বিজ্ঞানে

লিখছেন প্রতাপ রায়চৌধুরী (পদার্থবিজ্ঞানী ও মুম্বইয়ের ‘টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চে’র (টিআইএফআর) ‘কনডেন্সড ম্যাটার ফিজিক্স অ্যান্ড মেটিরিয়াল সায়েন্সেস’-এর অধ্যাপক।)বিনা বাধায় কাজ হয়ে গেলে কে না খুশি হয়! এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বিদ্যুৎ পাঠাতে গেলে পরিবাহীর (কনডাক্টর- যেমন, তামার তার) মধ্যে দিয়ে সব সময় তাকে কিছুটা বাধা অতিক্রম করতে হয়। এই বাধার নাম ‘রোধ’ (রেজিস্ট্যান্স)।

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১২:৩০

বিনা বাধায় কাজ হয়ে গেলে কে না খুশি হয়!

এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বিদ্যুৎ পাঠাতে গেলে পরিবাহীর (কনডাক্টর- যেমন, তামার তার) মধ্যে দিয়ে সব সময় তাকে কিছুটা বাধা অতিক্রম করতে হয়। এই বাধার নাম ‘রোধ’ (রেজিস্ট্যান্স)।

কিন্তু এক বার ভাবা যাক, যদি এমন কোনও পদার্থ থাকে, যার কোনও রোধ নেই, তা হলে কি ভালই না হোত! আর যেহেতু রোধ নেই, তাই বিজ্ঞানের নিয়ম মেনে সেই পরিবাহী তেতেও উঠবে না। কাজেই বিদ্যুৎ-শক্তির ক্ষয়েরও সম্ভাবনাটা সে ক্ষেত্রে একেবারেই শূন্য। যত খুশি বিদ্যুৎ পাঠাই না কেন, তার কখনওই গলেও যাবে না।

এ রকম রোধ-হীন পরিবাহী কোনও কল্প-বিজ্ঞানের গল্প নয়। বিশ শতকের গোড়ায় আচমকাই আবিষ্কার হয় এমন পদার্থের, বিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম অতি-পরিবাহী (সুপার-কনডাক্টর)।আবিষ্কারের শুরুতে অতি-পরিবাহিতা খুব কম তাপমাত্রায় (শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের প্রায় ২৫০ ডিগ্রিরও নিচে, যা মহাকাশের তাপমাত্রার কাছাকাছি) দেখা গেলেও, সম্প্রতি পদার্থের এই ধর্ম-৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও দেখা গিয়েছে। যা ঘরের তাপমাত্রায় অতি-পরিবাহী পদার্থের হদিশ মেলার সম্ভাবনাকে এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন- বৃহস্পতি, শনির ‘দাদাগিরি’ই বাঁচিয়ে চলেছে পৃথিবীকে

প্রাণের খোঁজে শনির চাঁদে সাবমেরিন পাঠাচ্ছে নাসা, দেখুন ভিডিও

একেবারেই হালে, অতি-পরিবাহী পদার্থের ব্যবহার একটা নতুন মাত্রা পেয়েছে। প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে বলে অতি-পরিবাহী পদার্থের তার (ওয়্যার) খুব শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র (ম্যাগনেটিক ফিল্ড) তৈরি করতে ব্যবহার হয়। যার উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে চিকিত্সা-ক্ষেত্রের এমআরআই, বা গবেষণা-ক্ষেত্রে এনএমআর-এর প্রযুক্তি-প্রকৌশল। ‘সার্ন’-এর লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারেও এর ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও অতি-পরিবাহী তার (সুপার-কনডাক্টিং ওয়্যার) বিদ্যুৎ পরিবহনের কাজে আমেরিকা, জার্মানির মতো দেশগুলিতে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্যুত্-শক্তিকে চুম্বক-শক্তি হিসেবে জমা করে রাখতে আর প্রয়োজন মতো তাকে ব্যবহার করতেও অতি-পরিবাহী তারই একমাত্র উপায়। কারণ, বিন্দুমাত্র রোধ না থাকায় অতি-পরিবাহী তারের মধ্যে বিদ্যুত্-শক্তির কোনও ক্ষয়ই হয় না।

তবে বিজ্ঞানের যে কোনও আবিষ্কারের মতই এটিও বহু দিনের গবেষণার ফসল। আবিষ্কারের যাত্রা সে দিন থেকে শুরু হয়, যে দিন ডাচ বিজ্ঞানী হাইকে কামারলিং ওনেস ১৯০৮ সালের ১০ই জুলাই হিলিয়াম গ্যাসকে (তরলের স্ফুটনাঙ্ক বা বয়েলিং পয়েন্ট- ২৬৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৪.২২ কেলভিন) প্রথম তরল অবস্থায় আনলেন। আর সেই ভাবেই কম তাপমাত্রায় বিজ্ঞান-চর্চার একটি নতুন দিগন্ত খুলে গেল।

ল্যাবরেটরিতে অত কম তাপমাত্রায় এর আগে কেউ পৌঁছতে পারেননি। কম তাপমাত্রায় পদার্থের ধর্মটা কী, তার আচরণটা কেমন হয়, তারই গবেষণা শুরু করলেন তাঁরা। প্রায় তিন বছর পর, ১৯১১–র ৮ই এপ্রিলে, তাঁর ল্যাবরেটরিতে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। তাঁরা হঠাৎই দেখলেন, তাপমাত্রা ৪.২ কেলভিনের নীচে যেতেই পারদের ‘রোধ’ শূন্য হয়ে গেল।

বিজ্ঞানীরা ভাবলেন, ভোল্টেজ মাপার যন্ত্রে শর্ট সার্কিট হয়ে গিয়েছে বোধ হয়। কিন্তু, তাজ্জব ব্যাপার! তাপমাত্রা ৪.২ কেলভিনের ওপরে যেতেই তাঁরা আবার দেখলেন, ‘রোধ’ ঠিক 'যেমন ছিল, তেমনই।’ বার বার পরীক্ষা করে যখন একই ফল পাওয়া যেতে লাগল, তখন ওনেস বুঝতে পারলেন, কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ নয়, পারদের রোধ-শূন্য ওই অবস্থা আসলে পদার্থবিদ্যার একটি অদেখা, অচেনা জগত্ খুলে দিয়েছে। যার নাম অতি-পরিবাহিতা বা, সুপার-কনডাক্টিভিটি।

যে বছর রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে ‘নোবেল’ পেলেন, সেই ১৯১৩ সালেই হিলিয়াম গ্যাসের তরলীকরণের জন্য ওনেসও পদার্থবিদ্যায় পান ‘নোবেল’ পুরস্কার। কিন্তু সেই পুরস্কারটি অতি-পরিবাহিতা আবিস্কারের জন্য ছিল না। কারণ, তখনও পদার্থের এই নতুন অবস্থাটি বিজ্ঞানীরা চিনে-বুঝে উঠতে পারেননি। যে তাপমাত্রার নীচে সাধারণ পদার্থ অতি-পরিবাহী হয়ে যায়, তাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় 'সঙ্কট তাপমাত্রা' (ক্রিটিক্যাল টেম্পারেচার)।

১৯৩৩ সালে জার্মান বিজ্ঞানী ভালথের মেইস্নার এবং রবার্ট অশেনফেল্ড খুঁজে পেলেন অতি-পরিবাহী পদার্থের আরও একটি ধর্ম। যাকে ‘মেইস্নার এফেক্ট’ বলা হয়।

মহাভারতে যুধিষ্ঠিরের রথের চাকা মাটি থেকে চার আঙুল ওপরে ভেসে থাকত। সেটা ছিল মুনি-ঋষিদের কল্পনা। অতি-পরিবাহী পদার্থ সেটাকেই বাস্তব করেছে বিজ্ঞানের মাধ্যমে।

‘মেইস্নার এফেক্ট’-এর জন্য অতি-পরিবাহী পদার্থ যে কোনও চৌম্বক ক্ষেত্রকেই পুরোপুরি বিকর্ষণ করে। আর সেই বিকর্ষণ বলই অতি-পরিবাহী পদার্থকে ভাসিয়ে রাখে। তাকে অভিকর্ষের টানে নীচে নামতে হয় না। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে 'চৌম্বক উত্তোলন' (ম্যাগনেটিক লেভিটেশান)।

অতি-পরিবাহী পদার্থের এই ধর্মই প্রযুক্তিবিদদের সামনে এনে দিল ভাসমান যানবাহনের ধারণা। যার সেরা রূপটা এখন জাপানের ‘ম্যাগলেভ ট্রেন’। এই ট্রেনের কামরার নিচে থাকে তরল হিলিয়ামের সাহায্যে ঠান্ডা করা অতি-পরিবাহী কুন্ডলী (সুপার-কনডাক্টিং কয়েল)। যা উচ্চ চৌম্বকক্ষেত্র (পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ গুণ বেশি শক্তিশালী) সৃষ্টি করে। আর সেটাই বিশেষ ভাবে বানানো রেল লাইনের চুম্বককে বিকর্ষণ করে কামরাটিকে শূন্যে ভাসিয়ে রাখে।


সুপার-কনডাক্টিভিটিকে কাজে লাগিয়েই হয়েছে জাপানের ‘ম্যাগলেভ ট্রেন’।

১৯৩৫ সালে দুই ভাই ফ্রিট্জ ও হেইন্‌জ লন্ডন প্রকাশ করলেন বিখ্যাত 'লন্ডন ইক্যুয়েশন্‌স' (লন্ডন ইক্যুয়েশন্‌স)। যা ব্যাখ্যা করতে পারল অতি-পরিবাহীর রোধ-শূন্যতার কারণ। ব্যাখ্যা করতে পারল ‘মেইস্নার এফেক্ট’ও। তত দিনে সিসা ও টিনেও অতি-পরিবাহিতা ধর্মটি পাওয়া গিয়েছে। ১৯৪১ সালে নায়োবিয়াম নাইট্রাইড যৌগে আবিষ্কার হল অতি-পরিবাহিতা। যার সংকট তাপমাত্রা ১৬ কেলভিন।

দেখুন- খুব সহজে বোঝার ভিডিও।

রিচার্ড ফাইনম্যান, লেভ লান্ডু ভিতালি গিন্সবার্গের মতো নাম-ডাকওয়ালা বিজ্ঞানীরা তত দিনে খাতা-কলম নিয়ে বসে গিয়েছেন অতি-পরিবাহিতার তত্ত্ব-সন্ধানে। ১৯৫০ সালে পিপার্ড, গিন্সবার্গ ও লান্ডু নিয়ে এলেন একটি যুগান্তকারী ধারণা। যা ‘অতি-পরিবাহিতা তত্ত্বে’র ভিতটাই গড়ে দিল। যা আজও সমান ভাবেই প্রাসঙ্গিক। ওই কাজের জন্য ২০০৩ সালে গিন্সবার্গ আরও দুই বিজ্ঞানী আলেক্সেই আব্রিক্সভ ও অ্যান্টনি লেগেটের সঙ্গে ‘নোবেল পুরস্কার’ পান।

দেখুন- বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেনের ভিডিও।

ষাটের দশক অতি-পরিবাহিতার জন্য একটি অবিস্মরণীয় সময়। ১৯৫৭ সালটি পদার্থবিদ্যার ইতিহাসে একটি মাইলস্টোন হয়ে দাঁড়াল। জন বার্ডিন, লিয়ন কুপার আর জন শ্রিফার নামে তিন মার্কিন বিজ্ঞানী, ফাইনম্যানের মতো মহারথীদের হারিয়ে দিয়ে নিয়ে এলেন অতি-পরিবাহিতার সবচেয়ে প্রচলিত ও প্রমাণিত তত্ত্ব 'বিসিএস থিওরি'। ওই সাড়া জাগানো তত্ত্বই জানাল, দু’টি ইলেকট্রন, সম-আধানের (চার্জ) হলেও, পদার্থের আণবিক কম্পন (ল্যাটিস ভাইব্রেশান) তাদের এক সূত্রে বেঁধে দিতে পারে। আর তারা তখন একে অপরকে বিকর্ষণ করে না। পদার্থের মধ্যে দিয়ে বিনা আয়াসেই চলাচল করে। এই ইলেকট্রন-জোড়াকে বলা হয় 'কুপার পেয়ার'। ১৯৭২ সালে এই কাজের জন্য তিন জন ‘নোবেল পুরস্কার’ পান। সিসা, টিন, পারদ, অ্যালুমিনিয়াম, জিঙ্ক, প্ল্যাটিনাম ও আরও অনেক পদার্থের অতি-পরিবাহিতা ধর্মটি 'বিসিএস থিওরি' দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়।

তবে 'বিসিএস থিওরি'র কিছু পরেই সাড়া জাগিয়েছিল আরও একটি তত্ত্ব। 'পোলারোনিক থিওরি'। ফ্রান্সে এক জন বাঙালি বিজ্ঞানী বিনয় চক্রবর্ত্তী ওই তত্ত্বটি খাড়া করে বলেন, একমুখী (পোলারাইজ্‌ড) ও স্থানিক (লোকালাইজ্‌ড) আণবিক আকর্ষণ ইলেকট্রনের চলাচলের পথটাকে আরও সহজ করে দিতে পারে। যাতে ইলেকট্রগুলি অনায়াসে চলাফেরা করতে পারে। প্রাথমিক ভাবে এর প্রমাণ খুঁজতে বিজ্ঞানীরা তামা ও অক্সিজেনের সংমিশ্রনে বিশেষ ভাবে বানানো ‘মট অপরিবাহী’ (মট ইনস্যুলেটার) ব্যবহার করলেন। বহু বছরের পরিশ্রমে ১৯৮৬ সালে এলেক্স ম্যুলার ও জর্জ বেড্নর্জ নামে দুই বিজ্ঞানী সুইৎজারল্যান্ডে ‘ল্যান্থানাম বেরিয়াম কপার অক্সাইড’ নামে একটি যৌগে ৩৫ কেলভিন তাপমাত্রাতেও অতি-পরিবাহিতা লক্ষ্য করলেন। তার জন্য তাঁরা ‘নোবেল পুরস্কার’ও পেলেন। যদিও পরে 'পোলারোনিক থিওরি' ভুল প্রমাণিত হল। বিজ্ঞানী বিনয় চক্রবর্ত্তী নিজেই তাত্ত্বিক ভাবে দেখিয়েছিলেন, কেন ওই তত্ত্ব কার্যকরী নয়।

কিন্তু সেই ‘ভুল তত্ত্ব’ই একটি ঠিক রাস্তার সন্ধান দিয়ে গেল!

জাপানের ‘ম্যাগলেভ ট্রেন’ চলার জন্য সুপার-কনডাক্টিং ম্যাগনেট্‌স।

দেখা গেল, ওই যৌগটি 'বিসিএস থিওরি' মেনে চলে না। এখনকার কোনও তত্ত্বেই এর ধর্ম ব্যাখ্যা করা যায় না। পরের বছরেই আবিষ্কার হল একই শ্রেণীর যৌগ ‘YBCO’ বা, ‘ইট্রিয়াম বেরিয়াম কপার অক্সাইড’ নামের যৌগ। যা এক ধাক্কায় ‘সঙ্কট তাপমাত্রা’র সীমানা ৯৫ কেলভিনে পৌঁছে দিল। সেই থেকেই শুরু হয়ে গেল ‘সেরামিক অতি-পরিবাহীতা’র যুগ। এই শ্রেণীর সেরা সংযোজন থ্যালিয়াম মিশ্রিত মার্কারি (বা পারদ) বেরিয়াম ক্যালসিয়াম কপার অক্সাইড। যা ১৩৮ কেলভিনের নীচে অতি-পরিবাহী! ভাবুন! এর পরেই ঘরের তাপমাত্রায় অতি-পরিবাহী পদার্থের সন্ধান পাওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু হল।

একটি গল্প না বললে, এই লেখাটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। নব্বইয়ের দশকে মুম্বইয়ে, ‘টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ’-এ বিজ্ঞানী আর. নাগরাজন, তাঁর দুই বাঙালি ছাত্র চন্দন মজুমদার ও জাকির হোসেন এবং তাঁদের সহকর্মীরা ‘ইট্রিয়াম নিকেল বোরন কার্বাইড’ যৌগে অতি-পরিবাহিতা ধর্মটি আবিস্কার করেন। ওই যৌগের সামান্য রূপভেদে অতি-পরিবাহিতা ও চুম্বকীয় ধর্মের সহাবস্থান বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলে দেয়। অতি-পরিবাহিতা সম্পর্কে গবেষণার বিশ্ব-মানচিত্রে ভারতকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় বসিয়ে দেয়। অতি-পরিবাহিতা-র গবেষণায় এটাই আপাতত, ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

এই সময়েই বিজ্ঞানীরা ভাবতে শুরু করলেন, যে সব পদার্থের ‘সঙ্কট তাপমাত্রা’ বেশি, তারা কখনওই 'বিসিএস থিওরি' মেনে চলবে না। কিন্তু বিজ্ঞান সব সময়েই চমক দিতে ভালবাসে!

২০১৫ সালে এক দল জার্মান বিজ্ঞানী প্রায় ১৫ লক্ষ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কঠিন হাইড্রোজেন সালফাইড যৌগে দেখলেন, ‘সঙ্কট তাপমাত্রা’ মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে আন্টার্কটিকাতেও তাপমাত্রা কখনও কখনও পৌঁছে যায় প্রায় মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

আরও অবাক হওয়ার কথাটা এখানেই যে, এই অতি-পরিবাহীটি 'বিসিএস থিওরি' মেনে চলে। এই আবিষ্কার গোটা বিশ্বকেই দারুণ ভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে।

শুরু হয়ে গিয়েছে নতুন নতুন পদার্থের সন্ধান। যে পদার্থ ধর্মগত ভাবে উচ্চ চাপে কঠিন হাইড্রোজেন সালফাইডের মতো আচরণ করবে বা না-করলেও, তার ‘সঙ্কট তাপমাত্রা’ হবে আমার-আপনার ঘরের তাপমাত্রা! কোনও রকমের শীতলীকরণ বা, ‘রেফ্রিজারেশান’ ছাড়াই পদার্থটি হবে পুরোপুরি রোধ-হীন বা, রেজিস্ট্যান্স-লেস।

আর সে দিনই 'শহরের উষ্ণতম দিনে পিচ-গলা রোদ্দুরে' বিজ্ঞান আমাদের দেবে সবচেয়ে সেরা উপহারটা!

সহ-লেখক ইন্দ্রনীল রায় মুম্বইয়ের ‘টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চে’র গবেষক।

ছবি ও ভিডিও সৌজন্য: টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ

ও ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়।

power production with no loss
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy