Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ওয়ার্নারকে নিয়ে দলেই বিদ্রোহের ইঙ্গিত

অস্ট্রেলিয়ার একটি নামী ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, দলের অন্য ক্রিকেটাররা ক্রিকেট বোর্ডকে জানিয়েছেন, বল বিকৃতি কাণ্ডের খলনায়ক ওয়ার্নার টিম হোটেলে থাকলে যে কোনও মুহূর্তে তাঁদের সঙ্গে ঝামেলা বেধে যেতে পারে।

ডেভিড ওয়ার্নার। ছবি: সংগৃহীত।

ডেভিড ওয়ার্নার। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৫:৪০
Share: Save:

বল বিকৃতি কাণ্ডের লজ্জায়, অপমানে এক দিকে যখন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারেরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত, তখন কেপ টাউনে দলের হোটেলে বন্ধুদের নিয়ে উদ্দাম পার্টি করার অভিযোগ উঠল ডেভিড ওয়ার্নারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেছেন তাঁর দলের সতীর্থরাই। এখানেই শেষ নয়। ওয়ার্নারকে নাকি তাঁরা আর টিম হোটেলেও দেখতে চান না, বলে বোর্ডকে জানিয়েছেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা।

অস্ট্রেলিয়ার একটি নামী ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, দলের অন্য ক্রিকেটাররা ক্রিকেট বোর্ডকে জানিয়েছেন, বল বিকৃতি কাণ্ডের খলনায়ক ওয়ার্নার টিম হোটেলে থাকলে যে কোনও মুহূর্তে তাঁদের সঙ্গে ঝামেলা বেধে যেতে পারে। কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর থেকেই নাকি ওয়ার্নার বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। দলের ক্রিকেটারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।

অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে বলেছিলেন, তিনি এবং দলের ‘লিডারশিপ গ্রুপ’ তৃতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে বল বিকৃতির পরিকল্পনা করেছিলেন। যে স্বীকারোক্তির ফলে আইসিসি এক টেস্টে নির্বাসিত করে স্মিথ-কে। ফলে শুক্রবার থেকে ওয়ান্ডারার্সে শুরু হওয়া চতুর্থ টেস্টে তিনি খেলতে পারবেন না। তখন মনে করা হচ্ছিল, ওয়ার্নারও চতুর্থ টেস্টে মাঠের বাইরে থাকতে পারেন। পরে তাই ঘটল। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এই ঘটনার তদন্ত শেষ করার পরে স্মিথ ও ওয়ার্নারকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে য়াওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে মঙ্গলবার রাতে।

অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যমের একটা অংশে সন্দেহ করা হচ্ছে, ওয়ার্নারই এই কেলেঙ্কারির প্রধান চরিত্র। তিনিই প্রধান ষড়যন্ত্রকারী। তাঁর এই পরিকল্পনায় ‘বোকার মতো’ সায় দিয়েছিলেন স্মিথ। ওয়ার্নারের ঘনিষ্ঠ মহল অবশ্য তা মানছে না। তাঁদের দাবি, গোটা দলই পরিকল্পনাটা জানত। জানতেন, অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলাররাও। কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে অস্ট্রেলীয় দলের বাকি সদস্যরা নাকি এ ব্যাপারে একমত ছিল যে, এই ঘটনায় দায় একজন বা দু’জনের ঘাড়ে যেন না পড়ে। গোটা দলই এর দায় নেবে। তবে, ইদানীং অস্ট্রেলিয়া দলের বল ম্যানেজারের দায়িত্বেও ছিলেন ওয়ার্নার। নিউল্যান্ডসে সেই দায়িত্ব ছিল ব্যানক্রফ্টের কাঁধে। অনেকে মনে করছেন, ব্যানক্রফ্টের মতো জুনিয়র ক্রিকেটারের দিকে টিভি ক্যামেরার নজর অতটা থাকবে না, তাই তাঁকে দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছিল।

মঙ্গলবার বোর্ডের সিইও জেমস সাদারল্যান্ড জোহানেসবার্গে পৌঁছন এই তদন্ত শেষ করার জন্য। অস্ট্রেলীয় বোর্ডের দুই বোর্ড কর্তাও তদন্তকারী দলে রয়েছেন। স্মিথ সাংবাদিক বৈঠকে ঘটনার দায় নেওয়ার পরে বলেছিলেন, কোচ ডারেন লেম্যান বা কোচিং স্টাফের অন্য কেউ এই পরিকল্পনা জানতেন না। স্মিথ, ওয়ার্নার এবং ব্যানক্রফ্ট, ঘটনার তিন প্রধান চরিত্রকে ইতিমধ্যেই তদন্তকারী দলের সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। যার পরে তিন ক্রিকেটারকে দোষী সাব্যস্ত
করা হয়।

তবে এটা পরিষ্কার, অস্ট্রেলীয় দলের সহ-অধিনায়কের ভূমিকা এই কাণ্ডে যথেষ্টই। অনন্ত সে দেশের মিডিয়ার তাই দাবি। তাই, স্মিথ ও ব্যানক্রফ্টের পরে এ বার সম্ভবত কড়া শাস্তির খাঁড়া নেমে আসতে চলেছে ওয়ার্নারের ওপরও। এমনকী, অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়ার একাংশের ধারণা, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আর কখনও মাঠে নামা নাও হতে পারে ওয়ার্নারের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE