Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সময় কি শেষ হয়ে এসেছে মাহির? সব নজর তিরুঅনন্তপুরমে

ভারত বনাম নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এখন ১-১। ফিরোজ শা কোটলায় জিতেছিল বিরাট কোহালির দল। তার পর রাজকোটে জিতে সমতা ফিরিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

কাঠগড়ায়: রাজকোটে জেতাতে পারেননি। ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে। ফাইল চিত্র

কাঠগড়ায়: রাজকোটে জেতাতে পারেননি। ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৮
Share: Save:

তিরুঅনন্তপুরমে বৃষ্টির জন্য তৃতীয় এবং শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নিয়ে সংশয় রয়েছে। কিন্তু বৃষ্টিও ধুয়ে দিতে পারেনি মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে নিয়ে তৈরি হওয়া তর্ক।

ভারত বনাম নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এখন ১-১। ফিরোজ শা কোটলায় জিতেছিল বিরাট কোহালির দল। তার পর রাজকোটে জিতে সমতা ফিরিয়েছে নিউজিল্যান্ড। আর সেই ম্যাচেই ফের প্রশ্ন উঠে গিয়েছে ধোনিকে নিয়ে। এমনিতে বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়কের উইকেটকিপিং নিয়ে কেউ খুব একটা উদ্বিগ্ন নন। অনুবীক্ষণের তলায় পড়েছে ধোনির ব্যাটিং দক্ষতা, যা কি না বরাবর তাঁর শক্তির জায়গা।

আরও পড়ুন: ধোনির বিকল্প হিসাবে দলে আসতে পারেন যাঁরা

রাজকোটে ৩৭ বলে ৪৯ করেন ধোনি। ১৩২-এর স্ট্রাইক রেট অন্য সময়ে খুব খারাপ বলে বিবেচিত না-ও হতে পারে। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা বিগহিটারের বড় শট খেলার ক্ষমতা নিয়েও কেউ সন্দেহ প্রকাশ করছে না। কিন্তু গুরুতর প্রশ্ন উঠে পড়েছে, খুচরো রান নিয়ে স্কোরবোর্ডকে সচল রাখার কাজটা আদৌ আর করতে পারছেন কি না, তা নিয়ে। গত এক বছরে বারবার করে এই ব্যর্থতা ধরা পড়েছে ধোনির ব্যাটিংয়ে। যে ধোনি নিজে অধিনায়ক হয়ে সবচেয়ে বেশি করে জোর দিয়েছিলেন খুচরো রান নেওয়ার ওপর, তিনিই এখন সমস্যায় পড়ছেন বল-প্রতি-রানের খেলা খেলতে।

আরও পড়ুন: বুমরা এখন অনেক উন্নত, মত ভুবির

ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টিতে শুধু বড় শট নিতে জানলেই হয় না, খুচরো রান নিয়ে স্কোরবোর্ডকে চালু রাখতে হয়। ধোনি সেখানে প্রচুর ‘ডট বল’ (যে বলে কোনও রান হয় না) খেলে ফেলছেন। রাজকোটের ইনিংসেই যেমন তিনটি ছক্কা এবং দু’টি চার মেরেছিলেন ধোনি। অর্থাৎ, ২৬ রান এসেছে বাউন্ডারি থেকে মাত্র পাঁচ বলে। কিন্তু বাকি ৩২টি বল থেকে সংগ্রহ করতে পেরেছেন মাত্র ২৩ রান। দেখা যাচ্ছে, প্রত্যেক ম্যাচেই এভাবে ৯-১০টি বল নষ্ট করছেন ধোনি। সেটা দেখেই প্রাক্তনরা অনেকে সরব হয়েছেন। ফের দাবি উঠেছে, ২০১৯ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে ধোনিকে সরিয়ে তরুণ কাউকে সুযোগ দেওয়া হোক।

যদিও সুনীল গাওস্কর এ দিন ধোনির পাশে দাঁড়িয়েছেন। একটি টিভি চ্যানেলে গাওস্কর বলেন, ধোনিকে একা দায়ী করাটা অত্যন্ত অন্যায় হচ্ছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধোনিকে আর খেলানো উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন ভি ভি এস লক্ষ্মণ এবং অজিত আগরকর। তাঁদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গাওস্কর এ দিন বলেন, ‘‘লক্ষ্মণ আর আগরকরের যা মনে হয়েছে, ওরা বলতেই পারে। দু’জনেই ভারতের হয়ে অনেক দিন খেলেছে। কিন্তু আমার মনে হয়, তিরিশ পেরিয়ে গেলেই সকলে তাকেই টার্গেট করতে শুরু করে।’’

গাওস্করের ব্যাখ্যা, দলে অনেক তরুণ ক্রিকেটার আছে। কিন্তু যে হেতু ধোনির বয়স তিরিশ পেরিয়ে গিয়েছে, তাঁকে নিয়েই আলোড়ন পড়ে যাচ্ছে। সকলে ধোনিকে নিয়েই শুধু প্রশ্ন তুলছে। সানি আরও বলেছেন, হার্দিক পাণ্ড্য রান করতে পারেননি রাজকোটে। ইশ সোধির গুগলি ধরতে না পেরে বোল্ড হয়েছেন হার্দিক। কেউ সেটাকে ভারতের হারের কারণ হিসেবে তুলে ধরবে না। ওপেনাররা যে ভাল শুরু করতে পারছে না, সেটা কেউ বলছে না। ‘‘সকলের লক্ষ্য একজনই— মহেন্দ্র সিংহ ধোনি,’’ বলে দিচ্ছেন গাওস্কর।

আর এক প্রাক্তন ওপেনার বীরেন্দ্র সহবাগ আবার মনে করছেন, বড় টার্গেট থাকলে ধোনির উচিত শুরু থেকে আক্রমণাত্মক হওয়া। এ ব্যাপারে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টেরও উচিত ধোনির সঙ্গে কথা বলে তাঁর ভূমিকাটা স্পষ্ট করে দেওয়া, মত সহবাগের। তিনি অবশ্য ধোনিকে বাদ দেওয়ার স্লোগানে গলা মেলাননি। সহবাগ বরং বলেছেন, ধোনিকে এখনও দরকার। টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ান ডে ক্রিকেট, দু’টোতেই ধোনিকে এখনও ভারতের দরকার বলে মনে হচ্ছে তাঁর। কিন্তু সহবাগ চান, ধোনির ভূমিকাটা নিয়ে কোনও সংশয় না থাকুক। ‘‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওকে শুরু থেকে চালাতে হবে। সেটা স্পষ্ট করে ওকে বলা দরকার,’’ বলছেন ধোনির প্রাক্তন সতীর্থ এবং ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যানদের একজন।

ক্রিকেট মহলে তর্ক উঠেছে, ধোনির আদর্শ ব্যাটি‌ অর্ডার নিয়েও। এখনও তাঁকে নীচের দিকেই খেলানো হচ্ছে। আগের মতো ‘ফিনিশার’-এর দায়িত্বই দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ধোনি কি আর আগের মতো ‘ফিনিশার’-এর ভূমিকা পালন করতে পারবেন? সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারও কারও মত, ধোনিকে চার নম্বরে নামানো উচিত। যাতে ক্রিজে থিতু হতে সামান্য বেশি যে সময়টা লাগছে, সেটা তিনি পান।

মাঠকে ভাসিয়ে দেওয়া বৃষ্টিই চলবে? নাকি তর্ক থামাতে উঠবে ধোনি-ঝড়? অপেক্ষা তিরুঅনন্তপুরমে। যেখানে শেষ বার কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল উনত্রিশ বছর আগে। সেই ম্যাচের ভারত অধিনায়ক? রবি শাস্ত্রী। এ বার যিনি কোচ হিসেবে মাঠে ঢুকবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE