বিরাট কোহালির দলের ব্যাটিং লাইন-আপ যে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা, তার প্রমাণ তো বহু বার পাওয়া গিয়েছে। এই ব্যাটিং লাইন-আপই সে দিন গুয়াহাটির মাঠে ব্যর্থ হওয়ায় অনেকে অবাক হয়েছেন।
জেসন বেহরেনডর্ফের প্রথম ওভারেই যে ভাবে ভারতের নামী ব্যাটিং লাইন-আপে ধস নামে, শুধু সেই ওভারটা ইউটিউবে একাধিকবার দেখলে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দুর্বল একটা দিক সামনে চলে আসে। বাঁ হাতি পেসারদের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যাটসম্যানদের এই দুর্বলতা আগেও লক্ষ্য করা গিয়েছে। সে দিন ফের স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অদূর ভবিষ্যতে বিরাটদের এই দুর্বলতা অন্য প্রতিপক্ষরাও কাজে লাগাতে পারে।
ভারতীয় ব্যাটিং ভাল পিচে ভাল। কিন্তু যেখানে বল ভাল নড়াচড়া করে, সেখানে তারা অসুবিধায় পড়ে। এটা শুধু ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দোষ নয়। অন্য দেশের ব্যাটসম্যানদেরও এই অসুবিধা হয়। কিন্তু সমস্যাটা কাটিয়ে দ্রুত ছন্দে ফেরার ক্ষমতা থাকাটাই আসল ব্যাপার।
আরও পড়ুন: ইমরানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা পাক নির্বাচন কমিশনের
সে দিন গুয়াহাটিতে জোড়া সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল ভারতের ব্যাটসম্যানরা। একেই স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় বল ভাল সুইং করছিল, নড়াচড়াও করছিল। উইকেটে ঘাস ছিল। তার উপর সামনে বাঁ হাতি পেসার। যার বল স্টাম্পের ভিতরে ঢুকে আসছিল প্রায়ই। এখনকার ব্যাটসম্যানদের এটাই একটা সমস্যা। সবাই স্ট্রোক নিতে পছন্দ করে। বাইরের বলে চার-ছক্কা হাঁকাতে এরা ভালই জানে। কিন্তু ভিতরে ঢুকে আসা বল সামলানোর বিদ্যেটা অনেকেরই জানা নেই। অবাক হয়ে গেলাম দেখে যে, আমাদের প্রধান ব্যাটসম্যানরাও একই সমস্যায় ভুগছে!
সুনীল গাওস্কর, গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ-রা এদের মতো এত আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতেন না বটে, কিন্তু শরীরের কাছের বলগুলো দারুণ খেলতেন। যা এখনকার ছেলেরা তেমন পারে না। ক্রিজে থেকে সমস্যা কাটিয়ে ওঠাই একমাত্র সমাধান। এখনকার ক্রিকেটে তো অপেক্ষার ব্যাপারই নেই। ক্রিজে এসেই ব্যাট চালাও। খেলেটাও ছিল টি-টোয়েন্টির, তাই বেশি অপেক্ষা করার সময়ও নেই।
রোহিত শর্মা আড়াআড়ি শট খেলতে অভ্যস্ত। যার ফলে ভিতরে আসা বল খেলতে ওর অসুবিধা হয়। আর বাঁহাতি পেসারদের বল এমন একটা কোণে ঢোকে, যা ব্যাটসম্যানদের অসুবিধায় ফেলতেই পারে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মহম্মদ আমিরের বলে রোহিতের আউটটা মনে করে দেখুন। গুয়াহাটিতেও কিন্তু বেহরেনডর্ফ প্রায় একই ভাবে ফেরায় ওকে। এ জন্যই রোহিত টেস্টের চেয়ে ওয়ান ডে-তে বেশি সফল। ও পরিবেশ অনুযায়ী ব্যাট করার চেয়ে নিজের মতো করে ব্যাটিং করা বেশি পছন্দ করে। আর ওয়ান ডে ক্রিকেটে বেশির ভাগ সময় স্লিপ ফিল্ডার না থাকাটা ওর সুবিধা হয়ে দাঁড়ায়।
আগামী বছর বিরাটরা দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডে যাবে। তার আগে এই সমস্যাটা কাটিয়ে উঠতে না পারলে কিন্তু সমস্যা হবে। ভারতীয় দল অনিকেত চৌধুরি, জয়দেব উনাদকট, বারিন্দর স্রানদের দলে রেখে তাদের দিয়ে নেটে বল করিয়ে বাঁহাতি পেসারদের খেলার অনুশীলন করেছে। এই প্রথাটা চালু রাখা উচিত। এখন তো আমাদের বাঁহাতি পেসারের অভাব নেই। আশিস নেহরা এই দলের সঙ্গে রয়েছে। আশা করব, নেটে ওকে ভাল মতো খেলে প্রস্তুত হয়েই আজ, হায়দরাবাদে সিরিজ ফয়সালার ম্যাচে নামবে কোহালিরা।
বাঁ হাতির বিরুদ্ধে সমস্যা কাটাতে নেটে শরীরের কাছের বল খেলা প্র্যাকটিস করতে হবে। বাঁহাতি পেসারের বল কতটা কাট করছে, খেয়াল রেখে খেলার প্র্যাকটিস আরও দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy