নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি-ই যে এখন তাঁর মূল প্রতিপক্ষ, রাজ্যে দুই বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের আগে এ বার স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ রাজ্যে বিজেপি-র শক্তিকে প্রকাশ্যে নানা ভাবে কটাক্ষ করে থাকেন মুকুল রায়ের মতো নেতারা। কিন্তু সেই বিজেপি-র মিছিলের জবাব দিতেই বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে পাল্টা মিছিল করেছে তৃণমূল। সেখানে মুকুলবাবুকেই পাঠিয়েছেন মমতা। ময়দানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ-মঞ্চ থেকে দলনেত্রীর নির্দেশ পেয়ে তড়িঘড়ি মেদিনীপুর ছুটেছেন মুকুলবাবু। আর স্বয়ং মমতার বক্তব্যে বারবার ধরা পড়েছে বিজেপি নিয়ে উদ্বেগ।
বিজেপি-কে নিশানা করতে কিঞ্চিৎ নতুন তত্ত্বের অবতারণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। ছাত্র সমাবেশে এ দিন তিনি বলেছেন, “কেউ কেউ দাঙ্গা, আগুন লাগানোর চেষ্টা করছে। বিভাজনের চেষ্টা করছে। এরা কারা?” উত্তর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীই, “একটু খেয়াল করলে দেখবেন, সিপিএমের উচ্ছিষ্টরা কেন্দ্রের শাসক দলের ছাতার তলায় ভিড়েছে! উচ্ছিষ্ট আর হার্মাদরা গিয়ে অস্ত্র নিয়ে বেরোচ্ছে! উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, “এক সংবাদ-গোষ্ঠী বিজেপি-র ফেরিওয়ালা হয়েছে! তাঁদের বলব, সেই ফেরিওয়ালা হওয়ার চেষ্টা করুন, যাঁরা রোদে ঘুরে লজেন্স বিক্রি করেন। কিংবা সংসার চালাতে যাঁরা ঘুগনি ফেরি করেন!”
লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে ভোটবৃদ্ধির পরে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারাও নিয়মিত রাজ্যে আসছেন। সেই দিকে ইঙ্গিত করেও মুখ্যমন্ত্রীর তির্যক মন্তব্য, “মামাবাড়ি! এক বার ক্ষমতায় এসেই ঔদ্ধত্য!” তবে চৌরঙ্গি ও বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আগে পাছে বিজেপি-উদ্বেগ দলকে বেশি ভাবিয়ে তোলে, সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখেই সম্ভবত এ দিন ছাত্র সমাবেশে মমতা এ-ও বলেছেন, “২০০৪ সালে ২৯% ভোট পেয়ে একটা আসন পেয়েছিলাম। এরা ২৯% ভোট (আসলে ৩১%) পেয়ে দেশে সরকার পেয়েছে! তফাতটা এখানে। তবে এত উল্লাস করো না, বেলুন ফুটো হয়ে যাবে!”
সিপিএমের ‘উচ্ছিষ্ট ও হার্মাদ’দের দলে নিয়ে অশান্তি বাধানোর তত্ত্বকে বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি। বিজেপি-র রাজ্যসভার সাংসদ চন্দন মিত্র কলকাতায় এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, “উনি তো বরদাস্ত করেন দীপক হালদারের (ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক) মতো নেতাদের। যাঁরা বলেন, পৃথিবী যত দিন থাকবে, তত দিনই ধর্ষণ থাকবে!” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের রসিকতা, “উচ্ছিষ্ট আর হার্মাদেরা চলে গিয়েছে অন্য দলে। তা হলে তো মুখ্যমন্ত্রী আমাদের শুদ্ধকরণের সার্টিফিকেট দিলেন বলতে হবে!” সমাবেশে শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌমিক হোসেনও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy