Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জমা পড়েনি চার্জশিট, জামিনে মুক্ত পাড়ুইয়ের ধৃতরা

গ্রেফতারের ৯০ দিনের মধ্যেও সাগর ঘোষ হত্যা-কাণ্ডে ধৃত পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিতে পারল না রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। এঁদের মধ্যে দু’জনের নামে গুলিচালনার অভিযোগ এনেছিল নিহতের পরিবার। সময়মতো চার্জশিট না মেলায় সোমবার সিউড়ির ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিষ্ট্রেট দেবকুমার গোস্বামী ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনের বিরোধিতা করেননি সরকারি আইনজীবীও। নিহতের ছেলে হৃদয় ঘোষের অভিযোগ, পুলিশ দুষ্কৃতীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৪ ০৩:৪৮
Share: Save:

গ্রেফতারের ৯০ দিনের মধ্যেও সাগর ঘোষ হত্যা-কাণ্ডে ধৃত পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিতে পারল না রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। এঁদের মধ্যে দু’জনের নামে গুলিচালনার অভিযোগ এনেছিল নিহতের পরিবার। সময়মতো চার্জশিট না মেলায় সোমবার সিউড়ির ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিষ্ট্রেট দেবকুমার গোস্বামী ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনের বিরোধিতা করেননি সরকারি আইনজীবীও। নিহতের ছেলে হৃদয় ঘোষের অভিযোগ, পুলিশ দুষ্কৃতীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

কেন জামিনের বিরোধিতা করল না সরকার? সরকারি আইনজীবী কুন্তল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নব্বই দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও সিট চার্জশিট জমা না দেওয়ায় বিরোধিতার কোনও জায়গা ছিল না।” কিন্তু সিট কেন ধৃতদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়নি? মন্তব্য করতে চাননি কুন্তলবাবু। এ দিন সিটের কোনও অফিসার আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের সময় নিজের বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হন পাড়ুইয়ের বাঁধনবগ্রামের বাসিন্দা নির্দল প্রার্থীর বাবা সাগর ঘোষ। ওই ঘটনায় পরিবারের তরফে প্রথমে ছ’জনের নামে, পরে ৪১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার মধ্যে তৃণমূল বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীও আছেন। তাঁদের অবশ্য এখনও অবধি জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি।

ওই ঘটনার তদন্তের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত হয় সিট। ৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ ইউনুস, পরের দিন আর এক তৃণমূল নেতা শেখ মুস্তাফা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে সিট। বাকিরা হলেন জলধর দাস, জগন্নাথ দাস ও প্রিয় মুখোপাধ্যায়। এঁদের মধ্যে শেখ ইউনুস এবং শেখ মুস্তাফার নামে গুলিচালনার অভিযোগ রয়েছে। পাঁচ ধৃতকেই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিটের আধিকারিকেরা। এই মামালায় অন্যতম অভিযুক্ত ভগীরথ ঘোষ দিন কয়েক আগে সিউড়ির সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁকেও হেফাজতে নিয়েছিল সিট।

কিন্তু কারও বিরুদ্ধেই সিটের অফিসারেরা তেমন কোনও তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে পারেননি। যে কারণে গত বুধবার সিউড়ি আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সরকারি আইনজীবী কুন্তল চট্টোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, মামলার কেস ডায়রি, তদন্তকারী অফিসার কোথায়? ওই দিনও কুন্তলবাবু এর ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। আদালতে উপস্থিত ছিলেন না সিটের আধিকারিকও।

আগামী ২০ মে ধৃত পাঁচ জনকে আদালতে হাজির করানোর কথা ছিল। তার আগেই তাঁরা জামিন পেয়ে গেলেন। সিটের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে নিহতের ছেলে হৃদয় ঘোষ বলেন, “ওই তদন্তকারী দলের হাতে যথেষ্ট সময় থাকা সত্ত্বেও চার্জশিট জমা দিতে পারল না। আমি প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম, সিট ধৃতদের বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। সেটাই প্রমাণ হল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

parui chargesheet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE